২৪ ঘণ্টা যেতে না যেতেই উধাও ষড়যন্ত্রের তত্ত্ব! নন্দীগ্রামের ঘটনা নিয়ে ফের মুখ খুললেন মমতা
নন্দীগ্রামে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আহত হওয়ার পর থেকেই জেলায় জেলায় তৃণমূল কর্মী ও সমর্থকদের বিক্ষোভের খবর প্রকাশ্যে এসেছে৷ কোথাও টায়ার জ্বলেছে৷ কোথাও আবার দাহ হয়েছে কুশপুতুল৷ বিভিন্ন জায়গায় সড়ক অবরোধও হয়েছে৷ আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি যাতে কোনওভাবেই নাগালের বাইরে না বেরিয়ে যায়, সেজন্য এবার হাসপাতালে শুয়েই কর্মী ও সমর্থকদের উদ্দেশে বার্তা দিলেন নেত্রী৷ কর্মীদের সংযত থাকার জন্য বলেন তিনি৷
মমতার বার্তা
এদিন মমতা বলেন, 'আমার যাঁরা কর্মী ভাইবোনের আছেন, তাদের বলছি গতকাল আমার খুব জোরেই চোট লেগেছিল। কোনও কর্মসূচি বাতিল হবে না। আগামী ২-৩ দিনের মধ্যেই ফের কেন্দ্রে ফিরব। গাড়ির বনেটের ওপরে আমি দাঁড়িয়ে সকলকে নমস্কার করছিলাম। তখন এমন জোরে চাপ আসে তখন পুরো গাড়িটা আমার পায়ের ওপর চেপে যায়। আমার কাছে যে ওষুধগুলো ছিল সেগুলো খেয়ে কলকাতার দিকে রওনা হই।'
উধাও চক্রান্তের তত্ত্ব
মমতার এই বক্তব্যেরই একটি অংশ অনেককে অবাক করেছে। তিনি গতকাল সংবাদমাধ্যমকে বারবার বলে যে তাঁকে চক্রান্ত করে চাপা দেওয়া হয়। ৪-৫ জন এসে তাঁর গাড়ির দরজা বন্ধ করে দেয়। যার জেরে তিনি চোট পান। কিন্তু এদিন হাসপাতাল থেকে তিনি আর চক্রান্তের কথা বললেন না। শুধউ বললেন, 'জোরে চাপ আসে।' তবে তা কেউ দিয়েছে বলে এদিন আর অভিযোগ করেননি নেত্রী।
ধাক্কাধাক্কিতে পায়ে চোট পান মুখ্যমন্ত্রী
বুধবার সন্ধ্যায় নন্দীগ্রামে ভিড়ের মধ্যে ধাক্কাধাক্কিতে পায়ে চোট পান মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়৷ অন্ধকারে কীভাবে এই দুর্ঘটনা ঘটল, তা এখনও নিশ্চিত করে বলা যাচ্ছে নয়৷ এর পিছনে ষড়যন্ত্র রয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের৷ এই নিয়ে তিনি নির্বাচন কমিশনে অভিযোগ জানাবেন বলেও জানিয়েছিলেন৷
প্রাথমিক অভিযোগ, ৪-৫ জন তাঁর পা চাপা দিয়ে দেয়
গতকাল চোট পেয়েও মমতা সংবাদমাধ্যমের সঙ্গে কথা বলেন৷ তাঁর দাবি, এই ঘটনার পিছনে ষড়যন্ত্র রয়েছে৷ ৪-৫ জন তাঁর পা চাপা দিয়ে দেয়। তাঁকে ইচ্ছাকৃত ভাবে ধাক্কা দেওয়া হয়েছে৷ ঘটনাস্থলে কোনও পুলিশ ছিল না৷ এই বিষয়ে তিনি নির্বাচন কমিশনে অভিযোগ জানাবেন বলেও মমতা সংবাদমাধ্যকে বলেন৷ এদিকে স্বভাবতই এই ঘটনায় তৃণমূল কর্মীরা বিজেপিকে কাঠগড়ায় দাঁড় করায়।
কেউ ওনাকে ঠেলে ফেলেনি বলে দাবি করেন প্রত্যক্ষদর্শী
এদিকে এক প্রত্যক্ষদর্শী মুখ্যমন্ত্রীর সব অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় মিথ্যা কথা বলছেন। গাড়ির দরজা এবং লোহার পোস্টে লেগে তাঁর লেগেছে। কেউ ওনাকে ঠেলে ফেলেনি বলেও দাবি করেন ওই প্রত্যক্ষদর্শী। অন্যদিকে রমেশ ঘরুই নামে আর এক প্রত্যক্ষদর্শীর কথা অনুযায়ী, ভিড়ে গাড়ি এগোতে গিয়ে দিদির পা-এ লেগে যায়। সামনের মিষ্টির দোকান থেকে বরফ এনে দেওয়া হয়। অনেক মানুষ জড়ো হয়ে যায়। এরপর ভিড়ের মধ্যে কী হয়েছিল বোঝা মুশকিল।
'পুলিশের উপস্থিতিতেই এই ঘটনা ঘটে'
এরপর প্রত্যক্ষদর্শী আরও বলেন, 'পুলিশের উপস্থিতিতেই এই ঘটনা ঘটে। গৌতম মাইতি নামে অপর এক প্রত্যক্ষদর্শীর কথায়, দরজা খুলে নামার চেষ্টা করছিলেন। এখানে এই লোহার রড কিংবা ভিড়ের চাপে দরজার ধাক্কা লাগে। গলায় আর পা-এ চোট লাগে। এরপর বরফ এনে ওনার পায়ে লাগানো হয়। তার সঙ্গে সঙ্গে চিকিৎসাও হয়।'