'এনআরসি হটাও, দেশ বাঁচাও' বাংলায় উপনির্বাচনের ফলের পরই উঠল আওয়াজ
জাতীয় নাগরিকপঞ্জী বা সংক্ষেপে এনআরসি। এই একটি শব্দ বাংলার রাজনীতিতে চূড়ান্ত আলোড়ন ফেলে দিয়েছে।
জাতীয় নাগরিকপঞ্জী বা সংক্ষেপে এনআরসি। এই একটি ইস্যু সাম্প্রতিক সময়ে বাংলার রাজনীতিতে চূড়ান্ত আলোড়ন ফেলে দিয়েছে। লোকসভা নির্বাচনের সময় থেকেই এই এনআরসি ইস্যু মাথাচাড়া দিয়েছিল। তবে তখনও ততটা ডালপালা মেলেনি। তবে বিজেপি লোকসভা নির্বাচনে বাংলা থেকে ১৮টি আসন জেতে। ভোটে জেতার পর বঙ্গের বিজেপি নেতারা তো বটেই এমনকী কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব স্পষ্ট জানিয়ে দেন বাংলায় এনআরসি হবে। এবং এই একটি ঘটনাকে কেন্দ্র করেই লোকসভা ভোটের পর থেকে আবর্তিত হতে শুরু করে বাংলা রাজনীতি।
এনআরসি জুজু
এনআরসি জুজু বাংলার মানুষদের মধ্যে এতটাই আতঙ্কের সৃষ্টি করেছে তা আন্দাজ করা যায়নি। আন্দাজ করতে পারেনি বিজেপি। এমনকী আন্দাজ করেনি শাসক দল তৃণমূল কংগ্রেসও। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় প্রথম থেকেই এনআরসির বিরোধিতায় সরব হয়েছেন। বাংলায় হোক অথবা কেন্দ্রীয় মঞ্চে, বারবার তিনি এর বিরোধিতা করেছেন। এবং স্পষ্ট জানিয়েছেন, বাংলায় কোনওভাবেই এনআরসি চালু হবে না।
অমিত শাহের ঘোষণা
তবে তারপরও যুদ্ধ জারি থেকেছে। সংসদ থেকে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ সরাসরি জানিয়েছেন, বাংলা সহ সারাদেশে এনআরসি চালু হবে। তার পাল্টা মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও জানিয়েছেন, কোনওভাবেই বাংলায় এনআরসি চালু করতে দেবেন না তিনি। এই প্রেক্ষাপটেই বাংলার তিন কেন্দ্রের উপনির্বাচন। এবং ফলাফলে যা উঠে এসেছে তা বিজেপির মনে আতঙ্ক ধরানোর জন্য যথেষ্ট। তিন কেন্দ্রে, বিশেষ করে কালিয়াগঞ্জ ও করিমপুরে ভোট হয়েছে এনআরসি ইস্যুকে ভিত্তি করেই। আর সেখানেই সজোরে চপেটাঘাত খেয়েছে বিজেপি।
ধাক্কা খেল বিজেপি
বাংলার মানুষ কোনওভাবেই এনআরসিকে মেনে নেবে না। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের এই বক্তব্যে সহমত হয়েছেন কালিয়াগঞ্জ ও করিমপুরের ভোটাররা। এমনকী খড়্গপুরের মতো কেন্দ্রের ভোটে জেতার পর তৃণমূল কর্মীরা স্লোগান দিয়েছেন - এনআরসি হটাও দেশ বাঁচাও। এই স্লোগান কোথাও গিয়ে বৃহত্তর ক্ষেত্রে সাধারণ নাগরিকের কথাকেই প্রতিফলিত করেছে।
বাংলায় চলবে না এনআরসি
এনআরসি যে বাংলায় চলবে না তা এবার বিজেপির বুঝে যাওয়া উচিত। বিজেপির অভ্যন্তরেও এই নিয়ে দ্বন্দ্ব রয়েছে। তবে যেহেতু কেন্দ্র থেকে এই বিষয়টিকে তুলে আনা হয়েছে, তাই বঙ্গের অনেক বিজেপি নেতা-কর্মীরাই এর বিরুদ্ধে মুখ খুলতে পারেননি। তবে উপনির্বাচনের ফলাফল বুঝিয়ে দিচ্ছে, এনআরসি ইস্যুতে ভিত্তি করে বাংলায় পথ চলতে হলে হুমড়ি খেয়ে পড়তে হবে গেরুয়া শিবিরকে।