পথে বেড়ে ওঠা শিশুদের জীবন সংগ্রাম তুলে ধরছে বেহালার দেবদারু ফটক
কলকাতার অন্যান্য থিম পুজোগুলোর সঙ্গে যুদ্ধে নয়। বরং শহরের ফুটপাতে বেড়ে ওঠা শিশুদের জীবন সংগ্রামকে পুজোর মাধ্যমে তুলে ধরতে চাইছে বেহালার ১৪ নম্বর দেবদারু ফটক।
কলকাতার অন্যান্য থিম পুজোগুলোর সঙ্গে যুদ্ধে নয়। বরং শহরের ফুটপাতে বেড়ে ওঠা শিশুদের জীবন সংগ্রামকে পুজোর মাধ্যমে তুলে ধরতে চাইছে বেহালার ১৪ নম্বর দেবদারু ফটক। তাদের মূল বিষয়ই হল রাস্তার ফুটপাথে কীভাবে বেঁচে রয়েছে পথশিশুরা? কীভাবে তারা তাদের পঠন-পাঠন, খেলাধুলা ছেড়ে দারিদ্রতার সঙ্গে লড়াই করে শৈশবের দিনগুলো যাপন করছে? এই বিষয়গুলিই এবারের পুজোয় তুলে ধরতে চাইছে বেহালা 14 নম্বর দেবদারু ফটক।
''নিস্তব্ধ
নিঝুম
রাত
..
ফুটপাতের
দেয়াল
ঘেঁষে
ছেঁড়া
ন্যাকড়ায়
পেঁচানো
ছোট্ট
শিশু
ঘুমে
বিভোর।''
সত্যিই
ফুটপাথের
দেওয়াল
ঘেঁষে
ন্যাকড়া
পেঁচানো
শিশু
ঘুমিয়ে
আছে
অকাতরে।
তাই
দেবদারু
ফটক
তাদের
৪৬
তম
বর্ষের
পুজো
এই
বিষয়
নিয়ে
অভিনবত্বের
নিদর্শন
দিতে
চলেছে।
ক্লাবের সভাপতি, সম্পাদক, অন্যান্য সদস্যদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, কলকাতার পুজো কমিটিগুলোর সঙ্গে 'থিম যুদ্ধ নয়', বরং 'হে মহাজীবন' অর্থাৎ মানুষের জীবনকেই এবারের পুজোয় প্রাধান্য দিতে চাইছে পুজো উদ্যোক্তারা। যাঁদের না আছে মাথা গোঁজার ঠাঁই, না পায় দু'বেলা-দু'মুঠো খাবার। শিক্ষা-স্বাস্থ্য-লৌকিকতা তো দূরের কথা অভাব-অনটনের সংসারে যারা টিকে আছে কোনও রকমে। যাদের মাথার উপর খোলা, আকাশ নিচে ফুটপাত, চারিদিকে এদো ঝুপড়ি টিকে আছে যেসব ক্ষুদে, যারা ব্রাত্য নানা ভাবে সেই মানুষগুলোর মুখেই হাসি ফোটাতে চাইছেন উদ্যোক্তারা।
তাদের
এই
অভিনব
ভাবনার
প্রকাশ্যে
না
আনলেও
এবছরের
পুজোয়
থিম
যুদ্ধে
না
গিয়ে
পথ
শিশুদের
মুখে
হাসি
ফোটাতে
পারবেন
আশাবাদী
ক্লাবের
সদস্যরা।
এই
ভাবনা
চিন্তা
থেকেই
ক্লাবের
সভাপতি
শক্তিপদ
মণ্ডলের
কথায়,
'আকর্ষণ
হিসেবে
তুলে
ধরা
হবে
দারিদ্র্যসীমার
নিচে
বসবাসকারী
পথ
শিশুদের
জীবনযাপন।
কেমন
কাটে
পুজো
তাও
তুলে
ধরা
হবে।
এছাড়াও
বর্তমানে
নারীরা
বিভিন্ন
প্রতিকূলতার
শিকার
হচ্ছে।
এজন্য
এবার
পুজোয়
পাড়ার
মহিলাদের
অতিথি
আপ্যায়নের
গুরুদায়িত্ব
দেওয়া
হবে।
পুজোর
দিনগুলোতে
তাঁরা
আগত
দর্শনার্থীদের
অতিথি
মন্ডপে
ঢুকতে
সাহায্য
করবেন।'
তিনি
আরও
জানান,
'আকর্ষণ
হিসেবে
এবার
অনুষ্ঠিত
হবে
ভাষ্যপাঠ।
এই
প্রথমবার
চলচ্চিত্র
অভিনেতা
সব্যসাচী
চক্রবর্তী
ভাষ্যপাঠে
অংশগ্রহণ
করতে
চলেছেন
তাদের
থিমে।
[আরও পড়ুন:তিনশো বছরের ঐতিহ্য বাঁচিয়ে রেখে আজও অমলিন গোবরডাঙার জমিদার বাড়ির পুজো]
শুধুমাত্র পুজোতেই থেমে নেই বেহালার দেবদারু ফটক। সারা বছর ধরে সমাজ সেবাতেও মন কেড়েছে স্থানীয়দের। এই বিষয়ে ক্লাবের অন্যতম সদস্য অরিজিৎ হালদার জানান, সারা বছরই আকর্ষণীয় কর্মকাণ্ড রয়েছে তাদের। শীতল পানীয় জলের ব্যবস্থা, ডেঙ্গু প্রতিরোধে কর্মসূচি, রক্তদান শিবির, বৃক্ষরোপণের মতো একাধিক কর্মসূচির পাশাপাশি ভারতীয় সেনাবাহিনী আয়োজিত রক্তদান শিবিরে রক্ত দান করেছেন সদস্যরা।
[আরও পড়ুন: 'সৃষ্টির তরণী বেয়ে আমি'! হরিদেবপুর ৪১ পল্লী ক্লাবের এবারের আকর্ষণ ]
গত ২৫ ডিসেম্বর ক্লাবের সদস্যরা সান্তাক্লজ সেজে বস্তির বাচ্চাদের উপহার খাবার পৌঁছে দিয়েছেন।' আরও বলেন, 'গতবছর বসন্ত উৎসবের দিনে আনুষ্ঠানিকভাবে এ বছরের পুজোর উদ্বোধন করা হয়েছে। পথ শিশুদের নিয়ে যেহেতু পুজোর মূল ভাবনা তাই এলাকারই পথ শিশুদের দিয়ে পুজোর উদ্বোধন করা হবে এবছর।