মৈত্রীর বন্ধনে বিশ্বভারতীকে বাঁধলেন শেখ হাসিনা, মোদী-মমতার ভূয়সী প্রশংসা
বিশ্বভারতীর সমাবর্তনে এসে ভারত-বাংলাদেশের মৈত্রীকে আরও সুদৃঢ় করার বার্তা দিলেন শেখ হাসিনা। মানবজাতির জন্য দুই বাংলা, দুই দেশ এক হয়ে কাজ করবে বলে তাঁর বিশ্বাস।
বিশ্বভারতীর সমাবর্তনে এসে ভারত-বাংলাদেশের মৈত্রীকে আরও সুদৃঢ় করার বার্তা দিলেন শেখ হাসিনা। মানবজাতির জন্য দুই বাংলা, দুই দেশ এক হয়ে কাজ করবে বলে তাঁর বিশ্বাস। তিনি জানালেন, রবীন্দ্রনাথ ও নজরুল আমাদের দুই দেশের কবি। বঙ্গবন্ধু বাংলাদেশে যে সম্মান পান, একই সম্মান পান ভারতেও। এটা আমাদের কাছে বাড়তি পাওনা।
শুক্রবার বিশ্বভারতীতে বাংলাদেশ ভবনের উদ্বোধন করে শেখ হাসিনা বলেন, বন্ধুত্বপূর্ণ পরিবেশে দুই দেশের ছিটমহল বিনিময় হয়েছে। এটা সারা বিশ্বের কাছে দৃষ্টান্ত। আমরা দুই দেশ যে কীর্তি স্থাপন করেছি, তা অন্য কোনও দেশ পারেনি। ভারত যেভাবে বাংলাদেশের পাশে দাঁড়িয়েছিল, তা চিরকাল স্মরণ করবে বাংলাদেশ।
Rabindranath Tagore belongs to both the countries because he has written the national anthems of both the nations. He wrote most of his poems in Bangladesh and that is why we can claim a greater right over him: Bangladeshi PM Sheikh Hasina pic.twitter.com/JcuRQiyVeQ
— ANI (@ANI) May 25, 2018
তিনি এদিন জানান, আমরা মনে করি, শান্তিনিকেতন শুধু পশ্চিমবাংলার নয়, শান্তিনিকেতন বাংলাদেশেরও। যে আঙ্গিকে বিশ্বভারতীতে বাংলাদেশ ভবন তৈরি হয়েছে, সেই একইরকম ভাবে আমরা বাংলাদশে রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয় গড়ে তুলেছি। আরও একটি রবীন্দ্রভারতী বিশ্ববিদ্যালয় গড়ে তোলা হবে ভারত-বাংলাদেশ যৌথ উদ্যোগে।
হাসিনা বলেন, শাহদাদপুরে রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয় তৈরি হচ্ছে। শিলাইদহের কুঠিয়াবাড়ির সংস্কার সাধন হয়েছে। আমরা দুই দেশ যৌথ উদ্যোগ অনেক কাজ করেছি। ভবিষ্যতেও করব। তিনি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কেও ধন্যবাদ জানান। তাঁকে যে সম্মান জানানো হয়েছে বাংলায়, তার জন্য তিনি গর্বিত বলে জানান। বলেন, আমাদের মধ্যে সুসম্পর্কের যে মেলবন্ধন তৈরি হয়েছে, তা আরও দৃঢ় হবেই।
Rohingyas have taken shelter in Bangladesh. We've given them a place on humanitarian grounds. We want them to return to their country as early as possible. I request you to help us to interact with Myanmar so that they take Rohingyas back: Bangladeshi PM Sheikh Hasina pic.twitter.com/tpV5SDuTvC
— ANI (@ANI) May 25, 2018
এ প্রসঙ্গে বাংলাদেশের মানবতাও তিনি তুলে ধরেন। মানবিক দৃষ্টিভঙ্গি থেকেই বাংলাদেশ ১১ লক্ষ রোহিঙ্গাকে আশ্রয় দিয়েছে বলে জানান তিনি। হাসিনা বলেন, আমার বোন রেহনা আমাকে একদিন বলেছিল, ১৬ কোটি মানুষকে খাওয়াতে পারছো, আর ১৬ লক্ষ রোহিঙ্গাকে খাওয়াতে পারবে না। আমি বলেছিলাম, অবশ্যই পারব। আমাদের যা আছে, তা আমরা ভাগ করে খাব। সেইমতোই আমরা ১১ লক্ষ রোহিঙ্গাকে আশ্রয় দিয়েছি।
[আরও পড়ুন:বিশ্বভারতীর তীর্থভূমি হবে বাংলাদেশ ভবন! দ্বারোদ্ঘাটনে এক সূত্রে গাঁথা হল দুই বাংলা]
তিনি বলেন, কারও পাশে দাঁড়ানোর এই শিক্ষাও আমাদের দিয়েছে ভারতবর্ষ। কারণ ভারতবর্ষ একদিন আমাদের আশ্রয় দিয়েছিল। সেদিন যদি ইন্দিরা গান্ধী আমাদের পাশে না দাঁড়াতেন, তাহলে কী হত! মহান মুক্তিযুদ্ধে ভারত আমাদের পাশে দাঁড়িয়েছে। সেখান থেকে শিক্ষা নিয়ে আমিও তাই রোহিঙ্গাদের পাশে দাঁড়িয়েছি। একজনের দুর্দিনে অন্যজন পাশে দাঁড়াবে- এর নামই মানবতা। আমরা দুই দেশ সেই মানবতা বজায় রেখে কাজ করতে চাই একসঙ্গে।
[আরও পড়ুন:বিশ্বভারতী তাঁর কাছে মন্দিরের মতো, গুরুদেব-বন্দনায় সমাবর্তন অনুষ্ঠান মাতালেন মোদী]
এদিন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীও বলেন, দুই দেশ কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে কাজ করবে। মহাকাশ গবেষণাতেও দুই দেশে একযোগে গবেষণা চালাবে বলে জানান তিনি। এছাড়া রেল-সড়ক যোগাযোগ থেকে বিদ্যুৎ পরিষেবা-সহ একাধিক কাজ দুই দেশ একয়োগে করবে বলে জানান নরেন্দ্র মোদী।