বৈশাখীর গলায় হঠাৎই পার্থ-কল্যাণ বন্দনা! 'বিজয়া বিতর্ক'-এর মাঝেই ফের তাল কাটল?
ফের তৃণমূল কংগ্রেসে ফিরে যাওয়া নিয়ে জল্পনা উসকে দিলেন বৈশাখী বন্দ্যোপাধ্যায়! এই নিয়েই এখন রাজনৈতিক মহলে তরজা তুঙ্গে। এদিন একটি ফেসবুক পোস্টে নিজের রাজনৈতিক জীবনের বিভিন্ন মুহূর্তের ছবি আপলোড করেন বৈশাখীর, এর অধিকাংশ ছবিই, তৃণমূলে থাকাকালীন। এছাড়া পোস্টে পার্থ চট্টোপাধ্যায়, কুণাল ঘোষ, কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের মতো তৃণমূল নেতাদের প্রশংসা করেন তিনি। বৈশাখী বলেন, পার্থ চট্টোপাধ্যায়, কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়রাই তাঁর রাজনৈতিক গুরু।
বিজেপির বুদ্ধিজীবী সেলের সভানেত্রী হচ্ছেন বৈশাখী ?
কয়েকদিন আগেই অরবিন্দ মেনন এবং অমিতাভ চক্রবর্তীর সঙ্গে বৈঠক করেছিলেন শোভন চট্টোপাধ্যায় ও বৈশাখি বন্দ্যোপাধ্যায়৷ এরপই সূত্র মারফত জানা যায়, কলকাতা উত্তর ও দক্ষিণ, দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলার পর্যবেক্ষকের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে শোভনকে৷ আর বিজেপির বুদ্ধিজীবী সেলের সভানেত্রী হচ্ছেন বৈশাখী বন্দ্যোপাধ্যায়।
এরই মাঝে ফের তাল কাটে
তবে এরই মাঝে তাল কাটে। নেপথ্যে বিজেপির বিজয়া সম্মেলনীকে ঘিরে তৈরি হওয়া বিতর্ক। বৈশাখীকে আমন্ত্রণ জানানো হয়নি বলেই সেই সম্মেলনী বয়কট করেন শোভন। তবে সেই বিতর্কের আগুনে ছাই চাপা দিয়ে দিলীপ ঘোষকে মধ্যাহ্নভোজের আমন্ত্রণ জানিয়েছিলেন শোভন-বৈশাখী। যা গ্রহণ করেছিলেন দিলীপ ঘোষ। তবে এরপরই রাজনৈতিক ময়দানে বৈশাখীর 'মূল্য' নিয়ে বিতর্কিত মন্তব্য করে ফের পরিস্থিতি ঘোলাটে করে দেন মহিলা মোর্চা নেত্রী অগ্নিমিত্রা পাল।
পার্থ বন্দনায় বৈশাখী
সেই প্রেক্ষিতেই এদিন এক দীর্ঘ পোস্টে অগ্নিমিত্রাকে রাজনৈতিক শিষ্টাচারের পাঠ পড়ান বৈশাখী। সেখানেই তিনি উল্লেখ করেন, তাঁর কোনও রাজনৈতি গডফাদার নেই। তবে বিভিন্ন সময়ে রাজনৈতিক শিক্ষা পেয়েছেন পার্থ চট্টোপাধ্যায়, কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের মতো তৃণমূল নেতাদের থেকে। অবশ্য তিনি এই পোস্টে অরবিন্দ মেনন, ভারতী ঘোষ, রূপা গঙ্গোপাধ্যায়, লকেট চট্টোপাধ্যায়ের মতো বিজেপি নেতাদেরও প্রশংসা করেন।
শোভন-বৈশাখী দূরত্ব তৈরি করতে চাইছে বিজেপি!
বৈশাখীর অভিযোগ ছিল, শোভনকে তাঁর থেকে দূরে করতে বিজেপির একাংশ উঠে পড়ে লেগেছে। তবে সেই ভুল বোঝাবুঝি দূরে সরিয়ে বিজেপির হয়ে সক্রিয়া ভূমিকা পালন করার বার্তা দিয়েছিলেন শোভন-বৈশাখী। অমিত শাহর সফর চলাকালীন তাঁর সঙ্গে দেখা করেছিলেন এই জুটি। তারপর অরবিন্দ মেনন এবং অমিতাভও দেখা করে ভাই ফোঁটার উপহার দিয়েছিলেন তাঁদের। তবে ফের অগ্নিমিত্রা 'চোখে আঙুল' দিয়ে দেখিয়ে দেওয়ার এই ভঙ্গিমা পোষায়নি বৈশাখীর। তাই কী ফের তৃণমূল নেতাদের প্রশংসা করে জল্পনা উসকে দিলেন তিনি?
কলকাতায় দলকে আরও শক্তিশালী করতে বদ্ধপরিকর বিজেপি
এদিকে দিলীপ ঘনিষ্ঠ একংশের সূত্রে খবর, বিধানসভা নির্বাচনে কলকাতায় দলকে আরও শক্তিশালী করতে বদ্ধপরিকর বিজেপি৷ আর সেই কারণেই শোভন চট্টোপাধ্যায়ের সঙ্গে রাজ্য সভাপতির বৈঠক অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ৷ চলতি সপ্তাহেই শোভন-বৈশাখি সঙ্গে গোলপার্কের বাড়িতে বৈঠক হতে পারে বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ।
শোভন চট্টোপাধ্যায়কে কাজে লাগাতে মরিয়া বিজেপি
বাংলায় বিধানসভা নির্বাচনে শোভন চট্টোপাধ্যায়কে কাজে লাগাতে মরিয়া বিজেপি। বারে বারেই সামনে উঠে এসেছে বিজেপির সেই প্রচেষ্টা৷ কখনও শোভনের গোলপার্কের বাড়িতে দৌড়ে গেছেন মুকুল রায় তো আবার রাজ্য বিজেপির পর্যবেক্ষক কৈলাশ বিজয়বর্গীয়৷ তবে বিজেপিতে সক্রিয় হওয়ার আগেই ফের বিতর্ক তৈরি হয়েছে শোভন-বৈশাখীকে ঘিরে।
ফোকাসে কলকাতা ও ২৪ পরগনা
মূলত, উত্তর-দক্ষিণ কলকাতা, দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলায় বিজেপির সংগঠন খুবই দুর্বল। এদিকে এই দুই জেলায় শোভন চট্টোপাধ্যায়ের ভালো প্রভাব আছে। তাঁর প্রচুর লোকবলও আছে। তাই তাঁর পরামর্শ মেনে ২০২১-এর বিধানসভা নির্বাচনে কাজ করতে চায় বিজেপি। এবিষয়ে বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষও তৎপরতা দেখাতে ইচ্ছুক।
পিছু ছাড়ছে না বিতর্ক, বৈশাখী বন্দ্যোপাধ্যায় 'মর্মাহত' হতেই তিতিবিরক্ত শোভন চট্টোপাধ্যায়!