কংগ্রেসের জমি কেড়ে গনি-গড়ে জয়ের স্বপ্ন তৃণমূলের! একনজরে মালদহ উত্তরের ভোটের ইতিহাস
প্রথম দু-দফায় পাঁচটি কেন্দ্রে ভোটগ্রহণ হয়ে গিয়েছে। এবার ২০১৯-এর লোকসভা যুদ্ধে তৃতীয় দফার ভোটগ্রহণের অপেক্ষা। এই দফায় বাংলায় পাঁচটি কেন্দ্রে ভোট হচ্ছে। একঝলকে মালদহ উত্তরের ভোট ইতিহাস।
প্রথম দু-দফায় পাঁচটি কেন্দ্রে ভোটগ্রহণ হয়ে গিয়েছে। এবার ২০১৯-এর লোকসভা যুদ্ধে তৃতীয় দফার ভোটগ্রহণের অপেক্ষা। এই দফায় বাংলায় পাঁচটি কেন্দ্রে ভোট হচ্ছে। বালুরঘাট, উত্তর মালদহ, দক্ষিণ মালদহ, মুর্শিদাবাদ ও জঙ্গিপুরে ভোট হবে এই দফায়। তার আগে ৫ কেন্দ্রের ভোট ইতিহাসের দিকে ফিরে দেখা যাক। একঝলকে মালদহ উত্তরের ভোট ইতিহাস।
মালদহ উত্তর
বাংলার ৪২ লোকসভার কেন্দ্রের মধ্যে সাত নম্বর লোকসভা কেন্দ্র হল এই মালদহ উত্তর। ২০০৯ সালের আগে মালদহ কেন্দ্র নামেই পরিচিত ছিল। আরও স্পষ্ট করে বললে, ২০০৯-এ ডিলিমিটেশেন মালদহ ভেঙে মালদহ উত্তর ও দক্ষিণ পৃথক কেন্দ্র হয়েছে। এই লোকসভা আসনটিতে বরাবরই কংগ্রেস দাপট দেখিয়ে এসেছে। ৭১ ও ৭৭ ছাড়া বামফ্রন্ট ছাড়া গনি-গড়ে দাঁত ফোটাতে পারেনি কেউই।
কোন কোন বিধানসভা
মালদহ উত্তর লোকসভা কেন্দ্রের মধ্যে সাতটি বিধানসভা কেন্দ্র হল- হাবিবপুর, গাজোল, চাঁচল, হরিশচন্ত্রপুর, মালতিপুর, রতুয়া ও মালদহ। এই সাতটি বিধানসভা কেন্দ্রের মধ্যে সব কটিই মালদহ জেলার অন্তর্গত।
১৯৫২ থেকে ২০০৯ সাল পর্যন্ত মালদহ
১৯৫২ থেকে ২০০৯ সাল পর্যন্ত মালদহ লোকসভায় মোট ১৫টি নির্বাচন হয়েছে। এই ১৫টি নির্বাচনের মধ্যে মাত্র দুটি নির্বাচনে জয়ী হয়েছিল বামফ্রন্ট। ৭১ ও ৭৭ সালে সিপিএমের দীনেশচন্দ্র জোয়ারদার কংগ্রেসকে হারিয়ে সাংসদ নির্বাচিত হল। বাকি ১৩টি নির্বাচনেই জয় পায় কংগ্রেস। ৫২ সাল থেকে ৬৭ সাল পর্যন্ত চারটি নির্বাচনে সাসংদ নির্বাচিত হন কংগ্রেসের সুরেন্দ্রমোহন ঘোষ, রেণুকা রায় দু'বার ও উমা রায়।
৮০ সাল থেকে টানা গনি-রাজ
১৯৮০ সালে তার জয়যাত্রা শুরু হয়েছিল। ৮০-র নির্বাচনে সিপিএমের সাংসদ দীনেশচন্দ্র জোয়ারদারকে হারিয়ে তিনি সংসদে গিয়েছিলেন। তারপর টানা ৮টি নির্বাচনে তিনি তিনি জয়ী হয়েছেন। ২০০৪ সালে শেষবার তিনি জয় পান মালদহ কেন্দ্র থেকে। তাঁর প্রয়াণে শূন্য হয় এই আসনটি। ২০০৬ সালে উপনির্বাচনে মালদহ কেন্দ্র থেকে সাংসদ হন গনিখানের অনুজ আবু হাসেম খান চৌধুরী।
২০০৯ সালে তৈরি মালদহ উত্তরের
২০০৯ সালে মালদহ উত্তর কেন্দ্র তৈরি হওয়ার পর প্রথম সাংসদ নির্বাচিত হন গনিখান চৌধুরীর ভাগ্নি মৌসম বেনজির নুর। তিনি সিপিএমের শৈলেন সরকারকে হারিয়ে মালদহ উত্তরের সাংসদ নির্বাচিত হন। ২০১৪ সালেও কংগ্রেসের টিকিটে জয়ী হন মৌসম। সিপিএমের খগেন মুর্মুকে হারিয়ে মৌসম ফের সংসদে যান।
২০১৪ নির্বাচনের ফল
২০১৪ সালে মালদহ উত্তর কেন্দ্র থেকে বিজয়ী হন কংগ্রেসের মৌসম বেনজির নুর। ৬৫ হাজার ভোটে তিনি জয়ী হন সিপিএমের প্রার্থীর বিরুদ্ধে। এই কেন্দ্রে তৃণমূলের সৌমিত্র রায় ও বিজেপির সুভাষকৃষ্ণ গোস্বামীও নজরকাড়া ভোট পান। তৃণমূল তৃতীয় হয়, বিজেপি চতুর্থ স্থান পায়। উভয়ের ভোট ছিল প্রায় সমান-সমান।
২০১৪ সালে কার কত ভোট
২০১৪ সালে কংগ্রেস পেয়েছিল ৩,৮৮,৬০৯ ভোট। সিপিএম পেয়েছিল ৩,২২,৯০৪ ভোট, তৃণমূল কংগ্রেস পেয়েছিল ১,৯৭,৩১৩ ভোট। আর বিজেপি প্রার্থী ভোট পান ১,৭৯,০০০। এছাড়া সমাজবাদী পার্টি পায় ১২ হাজার ভোট আর নোটায় পড়ে ১০ হাজারেরও বেশি ভোট।
২০১৯-এ কারা প্রার্থী
কংগ্রেসের সাংসদ মৌসম বেনজির নুর দল ছেড়ে তৃণমূল কংগ্রেসের প্রার্থী এবার। সিপিএম ছেড়ে বিজেপির প্রার্থী হয়েছেন খগেন মুর্মু। কংগ্রেসের প্রার্থী হয়েছেন মৌসমের দাদা ইশা খান চৌধুরী। আর সিপিএম প্রার্থী করেছে বিশ্বনাথ ঘোষকে।