বিজেপিই প্রথম পরিবর্তন এনেছিল কৃষ্ণনগরে, তৃণমূল কিন্তু নয়! একঝলকে এই কেন্দ্রের ভোট-ইতিহাস
প্রথম দু-দফায় পাঁচটি কেন্দ্রে ভোটগ্রহণ হয়ে গিয়েছে। এবার ২০১৯-এর লোকসভা যুদ্ধে তৃতীয় দফার ভোটগ্রহণের অপেক্ষা। এই দফায় বাংলায় পাঁচটি কেন্দ্রে ভোট হচ্ছে। একঝলকে কৃষ্ণনগরের ভোট ইতিহাস।
প্রথম তিন দফায় ১০টি কেন্দ্রে ভোটগ্রহণ হয়ে গিয়েছে। এবার ২০১৯-এর লোকসভা নির্বাচনের যুদ্ধে চতুর্থ দফার ভোটগ্রহণের অপেক্ষা। এই দফায় বাংলায় আটটি কেন্দ্রে ভোট হচ্ছে। বহরমপুর, কৃষ্ণনগর, রানাঘাট, বর্ধমান পূর্ব, বর্ধমান-দুর্গাপুর, আসানসোল, বীরভূম ও বোলপুরে ভোট হবে এই দফায়। তার আগে ফিরে দেখা কৃষ্ণনগরের ভোট-ইতিহাস।
কৃষ্ণনগর
বাংলার ৪২ লোকসভার কেন্দ্রের মধ্যে ১২ নম্বর লোকসভা কেন্দ্র হল এই কৃষ্ণনগর। বরাবরই বামফ্রন্টের শক্তঘাঁটি এই কৃষ্ণনগর লোকসভা কেন্দ্রটি। ১৯৬৭ সালে তৈরি হওয়া এই কেন্দ্রটিতে মাঝে বিজেপি শক্তি বাড়িয়ে প্রথম পরিবর্তব আনে। গত দুবার এই কেন্দ্র ছিল তৃণমূলের দখলে।
কোন কোন বিধানসভা
কৃষ্ণনগর লোকসভা কেন্দ্রের মধ্যে সাতটি বিধানসভা কেন্দ্র হল- তেহট্ট, পলাশিপাড়া, কালীগঞ্জ, নকশীপাড়া, চাপড়া, কৃষ্ণনগর উত্তর ও কৃষ্ণনগর দক্ষিণ। সাতটি কেন্দ্রই নদিয়া জেলার অধীন।
১৯৬৭
১৯৬৭ সালে প্রথম তৈরি হয় এই কৃষ্ণনগর লোকসভা কেন্দ্র। প্রথমবার নির্দল প্রার্থী হিসেবে এই কেন্দ্র থেকে জিতে সংসদে যান হরিপদ চট্টোপাধ্যায়। তিনি জাতী কংগ্রেসের সদস্য ছিলেন। তবে নবদ্বীপ ও কৃষ্ণনগর থেকে তিনি লোকসভায় যান নির্দল প্রার্থী হিসেবেই।
১৯৭১ থেকে ১৯৮৪
১৯৭১ থেকে ১৯৮৪-র পর্যন্ত টানা চারবার এই কেন্দ্র থেকে সাংসদ নির্বাচিত হন রেণুপদ দাস। তিনি বামফ্রন্ট তথা সিপিএমের সদস্য হিসেবে কৃষ্ণনগর থেকে সংসদে যান।
১৯৮৯ থেকে ১৯৯৮
১৯৮৯ থেকে ১৯৯৮ সাল পর্যন্ত চারটি নির্বাচনেও এই কেন্দ্রটি সিপিএমের দখলে ছিল। এই চারবারই অজয় মুখোপাধ্যায় জয়ী হন। কৃষ্ণনগর থেকে সংসদের প্রতিনিধিত্ব করেন তিনি।
১৯৯৯
১৯৯৯-তে প্রথম পরিবর্তন আসে এই কেন্দ্রে। প্রথমবার বামফ্রন্ট শাসনের অবসান ঘটিয়ে এই কেন্দ্র থেকে জয়ী হয় বিজেপি। বিজেপির সত্যব্রত মুখোপাধ্যায় সাংসদ নির্বাচিত হন। ৯৮ সালের নির্বাচনে তিনি অজয় মুখোপাধ্যায়ের কাছে হেরেছিলেন। এবার সিপিএমের দিলীপ চক্রবর্তীকে হারিয়ে দেন।
২০০৪
২০০৪-এর লোকসভা নির্বাচনে ফের এই কেন্দ্রটি পুনরুদ্ধার করে সিপিএম। জ্যোতির্মীয় শিকদার এই কেন্দ্রে জয়ী হন বিজেপির সত্যব্রত মুখোপাধ্যায়কে হারিয়ে।
২০০৯ ও ২০১৪
২০০৯-এর নির্বাচনে কৃষ্ণনগরে সিপিএমকে হারিয়ে প্রথমবার জয়ী হয় তৃণমূল কংগ্রেস। ২০১৪-র নির্বাচনেও তাদের জয়ধারা অব্যাহত ছিল। দু-বারই এই কেন্দ্র থেকে জয়ী হয়ে সংসদে গিয়েছিলেন তৃণমূলের তাপস পাল।
২০১৪ সালে কার কত ভোট
২০১৪ সালে তৃণমূল কংগ্রেসের তাপস পাল পেয়েছিলেন ৪,৩৮,৪৮৯ ভোট। দ্বিতীয় স্থান পেয়েছিল সিপিএম। সিপিএমের শান্তনু ঝা পেয়েছিলেন ৩,৬৭,৫৩৪ ভোট। তৃতীয় স্থানে নেমে যাওয়া বিজেপি প্রার্থী সত্যব্রত মুখোপাধ্যায় পেয়েছিলেন প্রাপ্ত ভোট ৩,২৯,৮৭৩ ভোট। কংগ্রেসের রাজিয়া আবমেদ পেয়েছিলেন ৭৪,৭৮৯ ভোট।
২০১৯-এ কারা প্রার্থী
তৃণমূল কংগ্রেস এবার সিটিং এমপি তাপস পালকে প্রার্থী করেনি। এই কেন্দ্র তৃণমূল কংগ্রেসের প্রার্থী মহুয়া মৈত্র, বিজেপির প্রার্থী হয়েছেন কল্যাণ চৌবে। সিপিএম প্রার্থী হয়েছেন শান্তনু ঝা। কংগ্রেসের ইন্তাজ আলি শাহ।