মমতার রাজনৈতিক উত্তরণ শুরু এই কেন্দ্রে জিতেই, একনজরে যাদবপুরের ভোট ইতিহাস
প্রথম ছ-টি দফায় রাজ্যের ৩৩টি কেন্দ্রে ভোটগ্রহণ হয়ে গিয়েছে। এবার ২০১৯-এর লোকসভা যুদ্ধে শেষ দফার ভোটগ্রহণের অপেক্ষা। তার আগে ফিরে দেখা যাদবপুরের ভোট-ইতিহাস।
প্রথম ছ-টি দফায় রাজ্যের ৩৩টি কেন্দ্রে ভোটগ্রহণ হয়ে গিয়েছে। এবার ২০১৯-এর লোকসভা যুদ্ধে শেষ দফার ভোটগ্রহণের অপেক্ষা। এই দফায় বাংলার বাকি ন'টি কেন্দ্রে ভোট হচ্ছে। এই ন'টি কেন্দ্র হল- দমদম, বারাসত, বসিরহাট, জয়নগর, মথুরাপুর, ডায়মন্ড হারবার, যাদবপুর, কলকাতা দক্ষিণ ও কলকাতা উত্তর। তার আগে ফিরে দেখা যাদবপুরের ভোট-ইতিহাস।
যাদবপুর
বাংলার ৪২ লোকসভার কেন্দ্রের মধ্যে ২২ নম্বর লোকসভা কেন্দ্র হল এই যাদবপুর। ১৯৭৭ সাল থেকে এই কেন্দ্রের ভোট হচ্ছে। এটি এমন একটি কেন্দ্র, যে কেন্দ্র থেকে জিতে রাজনৈতিক উত্তরণ শুরু হয়েছিল বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের। তিনি ছিলেন জায়ান্ট কিলার। হারিয়েছিলেন হেভিওয়েট সোমনাথ চট্টোপাধ্যায়কে। বামফ্রন্টের ঘাঁটিতে সবুজ পতাকা উড়িয়েছিলেন। এখনও তিনিই কিং-মেকার।
কোন কোন বিধানসভা
যাদবপুর লোকসভা কেন্দ্রের মধ্যে সাতটি বিধানসভা কেন্দ্র হল- বারুইপুর পূর্ব, বারুইপুর পশ্চিম, সোনারপুর দক্ষিণ, সোনারপুর উত্তর, ভাঙড়, যাদবপুর ও টালিগঞ্জ। এই সাতটি কেন্দ্রই দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলার অন্তর্গত।
১৯৭৭ সাল থেকে ১৯৯১
১৯৭৭ সালে থেকে এই কেন্দ্রে নির্বাচন শুরু। প্রথম দুবার এই কেন্দ্র থেকে জয়ী হন সিপিএমের সোমনাথ চট্টোপাধ্যায়। তারপর ১৯৮৪ সালে হেভিওয়েট সোমনাথকে হারিয়ে চমকে দেন রাজনীতিতে নবাগতা কংগ্রেসের মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তারপর অবশ্য দু-বার এই কেন্দ্র থেকে ফের জয়ী হয় সিপিএম। সাংসদ হন মালিনী ভট্টাচার্য।
১৯৯৬ সাল থেকে ২০০৯
১৯৯৬ সাল থেকে ১৯৯ সাল পর্যন্ত তিনটি নির্বাচনে জিতে এই কেন্দ্র থেকে জয়ের হ্যাটট্রিক করেন কৃষ্ণা বসু। তিনিই একমাত্র সাংসদ, যিনি এই কেন্দ্রে পরপর তিনটি নির্বাচনে জয়ী হয়েছিলেন। প্রথমবার কংগ্রেসের টিকিটে। পরের দুবার তৃণমূলের টিকিটে জিতে সংসদে যান কৃষ্ণাদেবী। ২০০৪ সালে এই কেন্দ্র থেকে জয়ী হন সিপিএমের সুজন চক্রবর্তী। আর ২০০৯ সালে ফের তৃণমূল কংগ্রেস এই কেন্দ্র থেকে জয়ী হয়। সেবার সাংসদ নির্বাচিত হন সুবিখ্যাত গায়ক কবীর সুমন।
২০১৪ সালের ফল
২০১৪-র নির্বাচনে যাদবপুর কেন্দ্র থেকে তৃণমূল কংগ্রেসের টিকিটে জয় পান সুগত বসু। তিনি সিপিএমের সুজন চক্রবর্তীকে ১ লক্ষ ২৫ হাজার ২০৩ ভোটে পরাজিত করেন। সুগতবাবু পান ৫,৮৪,২৪৪ ভোট। নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী সিপিএমের সুজন চক্রবর্তীর প্রাপ্ত ভোট ৪,৫৯,০৪১। বিজেপির স্বরূপপ্রসাদ ঘোষ পান ১,৫৫,৫১১ ভোট। কংগ্রেসের সমীর আইচের প্রাপ্ত ভোট ২৬,৩৪৪।
২০১৯-এ কারা প্রার্থী
তৃণমূল কংগ্রেস এবার সিটিং এমপি সুগত বসুকে প্রার্থী করেনি। ফের এক নবাগতকে এই কেন্দ্রে প্রার্থী করেছে তৃণমূল। প্রার্থী হয়েছেন অভিনেত্রী মিমি চক্রবর্তী। বিজেপির প্রার্থী হয়েছেন তৃণমূল-ত্যাগী সাংসদ অনুপম হাজরা। সিপিএম প্রার্থী করেছে বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্যকে। কংগ্রেস এই কেন্দ্রে কোনও প্রার্থী দেয়নি।