বদলেছে পরিস্থিতি বদলেছে অঙ্ক, ২০১৯-এর নিরিখে দার্জিলিংয়ের ভোট-ইতিহাসের একঝলক
জলপাইগুড়ি, দার্জিলিং ও রায়গঞ্জে ভোট হবে দ্বিতীয় দফায়। তার আগে তিন কেন্দ্রের ভোট ইতিহাসের দিকে আরও একটিবার ফিরে দেখা। একঝলকে দার্জিলিংয়ের ভোট-ইতিহাস।
প্রথম দফায় দুটি কেন্দ্রে ভোটগ্রহণ হয়ে গিয়েছে। এবার ২০১৯-এর লোকসভা যুদ্ধে দ্বিতীয় দফার ভোটগ্রহণের অপেক্ষা। এই দফায় বাংলায় তিনটি কেন্দ্রে ভোট হচ্ছে। জলপাইগুড়ি, দার্জিলিং ও রায়গঞ্জে ভোট হবে এই দ্বিতীয় দফায়। তার আগে তিন কেন্দ্রের ভোট ইতিহাসের দিকে আরও একটিবার ফিরে দেখা। একঝলকে দার্জিলিংয়ের ভোট ইতিহাস।
দার্জিলিং
বাংলার ৪২ লোকসভার কেন্দ্রের মধ্যে চার নম্বর লোকসভা কেন্দ্র হল দার্জিলিং। সাতটি বিধানসভা কেন্দ্র নিয়ে গঠিত এই লোকসভা আসন। দার্জিলিং লোকসভা কেন্দ্রের মধ্যে সাতটি বিধানসভা কেন্দ্র হল- কালিম্পং, দার্জিলিং, কার্শিয়াং, মাটিগাড়া-নকশালবাড়ি, শিলিগুড়ি, ফাঁসিদেওয়া ও চোপড়া। এই সাতটি কেন্দ্রের মধ্যে কালিম্পংয়ের একটি বিধানসভা কেন্দ্র, উত্তর দিনাজপুরের একটি বিধানসভা কেন্গ্র এবং বাকি পাঁচটি এই দার্জিলিং জেলায়।
১৯৫৭ থেকে ১৯৬৭
দার্জিলিং কেন্দ্রে ভোট হচ্ছে ১৯৫৭ সাল থেকে। ৫৭ থেকে ৬৭ তিনটি নির্বাচন হয়। ৫৭ ও ৬২-তে এই কেন্দ্র থেকে বিজয়ী হয় কংগ্রেস। সাংসদ নির্বাচিত হন দেওধর মেনন। ৬৭ সালের ভোটে এই কেন্দ্র থেকে নির্দল প্রার্থী হিসেবে জয়ী হন মৈত্রেয়ী বসু। তিনি কংগ্রেসের বিধানসভার সদস্য ছিলেন। পরে নির্দল প্রার্থী হয়ে দার্জিলিং লোকসভা আসন থেকে সাংসদ নির্বাচিত হন।
১৯৭১ থেকে ১৯৯১
১৯৭১ থেকে ১৯৯১ সালের মধ্যে ৬টি নির্বাচন সংঘটিত হয়েছে। বারবার বদল হয়েছে দার্জিলিং কেন্দ্রের রাজনৈতিক রং। ১৯৭১ সালে সিপিমের রতনলাল ব্রাহ্মিণ জয়ী হন এই কেন্দ্র থেকে। পরেরবার ফের পালাবদল হয়। কংগ্রেস জয়ী হয় ১৯৭৭ সাল। সাংসদ হন কৃষ্ণবাহাদুর ছেত্রী। তারপরের দু-বার অর্থাৎ ৮০ ও ৮৪ সালে বিজয়ী হন সিপিএমের আনন্দ পাঠক। ৮৯ সালে জিএনএলএফ প্রার্থী হিসেবে ইন্দরজিৎ সাসংদ নির্বাচিত হন। তিনিই ফের কংগ্রেসের টিকিটে পরেরবার অর্থাৎ ৯১ সালে বিজয়ী হন।
১৯৯৬ থেকে ২০০৪
১৯৯৬ থেকে ১৯৯৯-তিনটি নির্বাচনেই দার্জিলিং থেকে বিজয়ী হয় সিপিএম। সাংসদ নির্বাচিত হন যথাক্রমে আরবি রাই, আনন্দ পাঠক ও এসপি লেপচা। ২০০৪ সালের নির্বাচনে ফের এই কেন্দ্রের দখল নেয় কংগ্রেস। দাওয়া নারবুলা নির্বাচিত হন সংসদ সদস্য।
২০০৯ ও ২০১৪-র নির্বাচনে
এরই মধ্যে দার্জিলিংয়ের রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে পরিবর্তনের লহর লেগেছে। জিএনএলএফের পরিবর্তে রাজনৈতিক ক্ষমতা হস্তান্তর হয়েছে গোর্খা জনমুক্তি মোর্চা অর্থাৎ জিজেএমের। ২০০৯ সালে মোর্চার সমর্থনেরই এই কেন্দ্র থেকে জয়ী হন বিজেপির যশবন্ত সিনহা। ২০১৪-য় ফের এখই অঙ্কে জয়ী হন বিজেপির সুরিন্দর সিং আলুওয়ালিয়া।
২০১৪ সালে কার কত ভোট
২০১৪ সালে তৃণমূল প্রার্থী বাইচুমং ভুটিয়া পান ২,৯১,০১৮ ভোট। বিজেপি প্রার্থী সুরিন্দর সিং আলুওয়ালিয়া পান ৪,৮৮,২৫৭ ভোট। সিপিএম প্রার্থী সমন পাঠক পান ১,৬৭,১৮৬ ভোট। আর কংগ্রেস প্রার্থী সুজয় ঘটক ভোট পান ৯০,০৭৬। নির্দল প্রার্থী মহেন্দ্র লামা পান ৫৭ হাজার ভোট আর নোটায় পড়ে ১৮ হাজারেরও বেশি ভোট।
২০১৯-এ কারা প্রার্থী
বিজেপি এবার তাদের সিটিং এমপিকে প্রার্থী করেনি। বিজেপি টিকিট দিয়েছে রাজু সিং বিস্তকে। তৃণমূল এবার ভূমিপুত্র মোর্চার বিধায়ক অমর সিং রাইকে তাদের টিকিটে প্রার্থী করেছে। আর কংগ্রেসের প্রার্থী হয়েছেন শঙ্কর মালাকার। সিপিএমের সমন পাঠক। এছাড়া জন আন্দোলন পার্টি-সহ অন্যান্য প্র্রার্থীও রয়েছে এই কেন্দ্রে।