কংগ্রেসের প্রার্থী তালিকায় চাপা উত্তেজনা আলিমুদ্দিনে!
কলকাতা, ৯ মার্চ : বাংলার ভোটযুদ্ধের দামামা বেজে গিয়েছে। সৈন্যসন্ত্রী নিয়ে প্রস্তুতি শুরু করে দিয়েছে রাজনৈতিক দলগুলি। অঘোষিত জোটের পথে হেঁটেই কংগ্রেসের সঙ্গে আসন সমঝোতার পথ খোলা রেখে প্রথম দফায় ১১৬ জন প্রার্থীর নাম ঘোষণা করে বামফ্রন্ট। পিছিয়ে না থেকে কংগ্রেসও ৭৫টি আসনে প্রার্থী ঘোষণা করে। আর সেই তালিকা ঘিরেই আপাতত কংগ্রেস-বাম শিবিরে চাপা উত্তেজনা।
কংগ্রেস যে তালিকা প্রকাশ করেছে তা আপাতদৃষ্টিতে বন্ধুত্বপূর্ণ হলেও একটি বিধানসভা কেন্দ্র নিয়ে দেখা দিয়েছে দুই শিবিরে শীতল মনোভাব। পুরুলিয়ার জয়পুর বিধানসভা কেন্দ্রে বামেরা প্রার্থী দিয়েছে। সেই একই বিধানসভা কেন্দ্রে সমঝোতার বাইরে বেরিয়ে 'বন্ধুত্বপূর্ণ লড়াইয়ের' জন্য প্রার্থী ঘোষণা করেছেন প্রদেশ কংগ্রেস নেতা অধীর চৌধুরিও। উল্লেখ্য অধীরবাবু শুধুমাত্র কেন্দ্রের নাম ঘোষণা করেছেন। প্রার্থী নির্বাচন করবে হাইকমান্ড।
বাংলায় শাসকদলকে হঠাতে কং ও বাম মেরু এক হওয়ার পথে হাঁটার কথা ভেবেছে। তা নিয়ে নানা চাপানোতর। রাজ্য কং-বাম তৈপরি হলেও হাইকমান্ডের দিক থেকে সেভাবে স্পষ্ট জবাব মেলেনি। হাইকমান্ডও বৃহত্তর স্বার্থে বিষয়টি নিজেদের ঘাড়ে না নিয়ে ফেলেছে রাজ্য নেতৃত্বের ঘাড়েই। দুই শিবিরের রাজ্য নেতৃত্বও তলে তলে জোট মনোভাবে নিয়েই এগিয়ে চলতে শুরু করে।
এদিকে প্রথম সমস্যা তৈরি হয় আসন সমঝোতা নিয়ে আলোচনা শুরু হতেই। সে ধাক্কাও সামাল দিয়ে একটা সিদ্ধান্তে আসতে সমর্থ হয় বাম-কং নেতৃত্ব। তবে কংগ্রেসের তালিকা প্রকাশের পর তা ফের খানিকটা জটিল হয়েছে।
কংগ্রেসের জন্য পুরুলিয়া, বাঘমুণ্ডি ও বলরামপুর তিনটি আসন ছেড়েছে কংগ্রেস। এই তলে তলে রফা সূত্রের কথা প্রদেশ কংগ্রেসের নেতৃত্বের বড় অংশই জানতেন। তারপরও পুরুলিয়া, বাঘমুণ্ডি ও বলরামপুর-এর পাশাপাশি জয়পুরের নামও কংগ্রেস তালিকায় রাখায় তা মোটেই ভাল চোখে দেখছে না বাম শিবির। বাম শিবিরের একাংশ মনে করছে প্রথম পদক্ষেপেই কথার খেলাপ করছে কংগ্রেস।
বামফ্রন্টের প্রথম দফার প্রার্থী তালিকা প্রকাশ বিমান বসুর
নির্বাচন ২০১৬: প্রার্থী তালিকা প্রকাশ তৃণমূলের, কামারহাটিতে লড়ছেন মদন মিত্র, কালিম্পং থেকে হরকা
জয়পুরের পাশাপাশি জট পাকিয়ে রয়েছে আরও দুটি বিধানসভা কেন্দ্র হরিহড়পাড়া ও ডোমকল নিয়ে বামেরা চালাকি করছে বলে মনে করছেন কংগ্রেসের একাংশ। হরিহরপাড়া ও ডোমকলে সিপিএম প্রার্থী দিয়েছে। এই দুটি আসনে প্রার্থী দেওয়া নিয়ে কংগ্রেসের সঙ্গে আলোচনা চলছিল বামেদের। আলোচনা চলাকালীন কেন এই এলাকায় প্রার্থী দেওয়া হল তা নিয়ে চাপা উত্তেজনা রয়েছে কং শিবিরেও।
শক্তির দিক থেকে এইমূহূর্তে কিছুটা দুর্বল ঠিকই, সমঝোতার পথেও রাজি তা বলে বামেদের কাছে পুরোপুরি মাথা নুইয়ে দিতে রাজি নয়, এই বার্তা দিয়ে বাম শিবিরকে চাপে রাখতেই জয়পুর কেন্দ্রকে তালিকায় রাখা কংগ্রেসের চাল বলেই মনে করছেন রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা।
বাম নেতৃত্ব আগেই জানিয়ে দিয়েছে যৌথ প্রচারের পথে তারা যাচ্ছে না। যদিও অধীর চৌধুরির কথায় স্পষ্ট বামেদের সঙ্গে যৌথ প্রচার করতে চেয়েছিল কংগ্রেস। তবে. বামেরা রাজি না হওয়ায় সে পথে হাঁটতে পারছে না তারা। তবে পাশাপাশি "কংগ্রেসের মঞ্চ তৃণমূল বিরোধী যে কোনও শক্তির জন্যই খোলা " বলে বামেদের যৌথ প্রচারের জন্যই অধীরবাবু আহ্বাণ জানিয়েছেন বলেই মনে করছেন অনেকে।
বিধানসভা ভোটের দিন ঘোষনা হওয়ার কয়েক ঘন্টার মধ্যে প্রার্থী তালিকা প্রকাশ করে দিয়েছিলেন তৃণমূল নেত্রী তথা মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বাংলায় একাই লড়ছে তৃণমূল কংগ্রেস। ইতিমধ্যে প্রার্থী তালিকার ঘোষণা সেরে চটপট প্রচারে নেমে পড়েছেন তৃণমূল নেত্রী। উত্তরবঙ্গ দিয়েই নির্বাচনী প্রচার শুরু করতে চান নেত্রী।