'পদ্ম' পুকুরে নেমে কাদা ঘাটবেন না ওয়েইসি, মমতার হাতিয়ার ছিনিয়ে 'ঘাসফুল' কাটার প্রস্তুতি
সিএএ, এনআরসি, এনপিআর ইস্যুতেই বাংলা এবং অসমে লড়বেন আসাদউদ্দিন ওয়েইসি। একটি ম্যাগাজিনকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে এমনটাই জানিয়েছেন আসাদউদ্দিন ওয়েইসি। আর এতেই তৃণমূল, বাম-কংগ্রেস জোটের কপালে আরও চওড়া হতে চলেছে চিন্তার রেখা। মূলত ২০২০-র শুরু থেকেই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের জন্য বিজেপি বিরোধী আক্রমণের মূল মন্ত্র হয়ে দাঁড়িয়েছিল এনআরসি, সিএএ। এবার ওয়েইসি মমতার সেই 'অস্ত্র' হাইজ্যাক করার পথে।

সিএএ-এনপিআর নিয়ে ওয়েইসির প্রস্তুতি
আউটলুক ম্যাগাজিনকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে ওয়েইসি স্পষ্ট বলেন, 'সিএএকে আমাদের এনপিআর-এর লেন্সের মাধ্যমে দেখতে হবে। এটা বিজেপির নেতৃত্বাধীন সরকারের সব থেকে বড় ঐক্যনাশা পদক্ষেপ। ২০১০ সালে যখন এনপিআর নিয়ে কথা শুরু হয়, তখন সিএএ-র সঙ্গে এর কোনও যোগ ছিল না। তবে বর্তমান প্রেক্ষিতে এই দুটি একে অপরের সঙ্গে জড়িয়ে।'

এনআরসি নিয়ে মুসলিমদের 'এক' করার চেষ্টা
ওয়েইসি আরও বলেন, 'মোহন ভাগবত খুব সুন্দর সুন্দর বক্তব্য পেশ করতে পারেন, কিন্তু আমরা তো ছোটো শিশু নই যে সেই বক্তব্যে ভুলে যাব। অসমের ক্ষেত্রে সুপ্রিমকোর্টের নির্দেশ ছিল এনআরসি-র। তবে এখন বিজেপি মুসলিমদের তালিকাচ্যুত করতে উঠে পড়ে লেগেছে। এর জন্যে তারা আরও একটি এনআরসি চায়।'

বাংলার নির্বাচনী ময়দানে ওয়েইসি
এদিকে বাংলায় নির্বাচন লড়ার প্রসঙ্গে প্রশ্ন করার হলে কোনও বিলম্ব না করেই এক কথায় ওয়েইসি জানিয়ে দেন যে তাঁর দল নিশ্চিত ভাবেই আগামী বছরের নির্বাচনে অংশ গ্রহণ করবে। এদিকে বাংলার নির্বাচনী ময়দানে ওয়েইসির দলের অভিষেক যে বিজেপিকে সাহায্য করবে, তা নিয়ে নিশ্চিত রাজনৈতিক মহল। তবে বাংলায় যে ওয়েইসি আসতে চলেছেন তার আভাস মিলেছিল ২০১৯ সালের শেষ থেকেই।

মমতার ওয়েইসি বিরোধী সুর
মমতার গলায় এর আগেও ওয়েইসি বিরোধী সুর শোনা গিয়েছিল। আজ থেকে ঠিক একবছর আগে ধুমাপাহাড়ে দাঁড়িয়ে মুখ্যমন্ত্রী বলেছিলেন, 'কেউ কেউ হায়দরাবাদ থেকে টাকার থলি নিয়ে (পশ্চিমবঙ্গে) এসেছে৷ মিটিং করে বলছে, তোমাদের জন্য আমরা লড়ব৷ কী করে লড়বে? তোমরা তো বিজেপি-র সবচেয়ে বড় দালাল৷ তোমরা কোনওদিন লড়তে পারবে না৷ লড়লে আমরাই লড়ব, যারা বেঁচে আছি, যারা লড়াই করছি৷'

ওয়েইসির দল বিজেপির ব-টিম?
তবে বাংলায় ওয়েইসির দল বিজেপির ব-টিম বা ভোট কাটুয়া হয়ে উঠবে কি না, তা নিয়ে প্রশ্ন করা হলে হায়দরাবাদের সাংসদের স্পষ্ট বক্তব্য, 'লোকসভা নির্বাচনে তো আমরা ছিলাম না। তখনও তো বিজেপি ১৮টি আসন জিতেছিল বাংলা থেকে। এদিকে পশ্চিমবঙ্গের ২৮ শতাংশ মুসলিমদের দুর্দশা দিন দিন বেড়ে চলেছে। নেতারা ইফতার পার্টি দিয়ে ভাবে মুসলিমরা খুশি। আসলে তো তা নয়। আমরা দুর্দশায় থাকা মানুষদের হয়ে লড়তে এসেছি।'

মমতাকে কটাক্ষ ওয়েইসির
প্রসঙ্গত, এর আগে বিজেপি বহুবার তৃণমূল নেতাদের এবং খোদ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের অনুষ্ঠিত ইফতার পার্টিকে বিদ্রুপ করে সংখ্যালঘু তোষণের অভিযোগ তুলেছিল। এবার সেই ইফতার পার্টি দিয়ে মুসলিম ভোট পাওয়ার মমতার কৌশলকে কটাক্ষ করতে ছাড়লেন না আসাদউদ্দিন ওয়েইসিও।

অনেকের ঘুম কেড়ে নিয়েছেন ওয়েইসি
এদিকে বিজেপির বি-টিম তকমা প্রসঙ্গে ওয়েইসি আরও বলেন, 'আমি বি-টিম তকমা পেতে পেতে ক্লান্ত। আমি এবার এ-টিম হতে চাই। আমার দল অন্যান্য রাজনৈতিক দলের মধ্যে ভয় ঢুকিয়েছে। অনেকের ঘুম কেড়ে নিয়েছি আমরা। এটা ভালো জিনিস। আমার রাজনৈতিক যাত্রা খুব একটা সহজ ছিল না। এখন কোনও আক্রমণই আর আমার গায়ে লাগে না।'
হোয়াইট হাউজে তিব্বতের প্রেসিডেন্ট, চিনা বিস্তারবাদের বিরুদ্ধে মার্কিন পদক্ষেপের ইঙ্গিত?