তৃণমূলের চিন্তা বাড়িয়ে একাধিক আসনে প্রার্থী দিল আসাদউদ্দিন দল, এক নজরে কে কোথায় দাঁড়ালেন
মমতা দিদির চলে যাওয়া শুধু সময়ের অপেক্ষা। অন্যদিকে, মমতার বন্দ্যোপাধ্যায়ের দাবি, ওরা বিভ্রান্ত করার চেষ্টা করছে। ভোটারদের কোনও প্রলোভন পা নেওয়ার পরামর্শ মমতার।
বাংলায় চলছে ভোট যুদ্ধ! বিজেপি-তৃণমূল টানটান লড়াই। বারবার বাংলায় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী এসে দাবি করছেন যে, মমতা দিদির চলে যাওয়া শুধু সময়ের অপেক্ষা। অন্যদিকে, মমতার বন্দ্যোপাধ্যায়ের দাবি, ওরা বিভ্রান্ত করার চেষ্টা করছে। ভোটারদের কোনও প্রলোভন পা নেওয়ার পরামর্শ মমতার।
এমনকি হিন্দু-মুসলিম সবাইকে একজোট হওয়ার বার্তাও দেন তিনি। এই অবস্থায় চিন্তা বাড়ল তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের। বাংলায় বেশ কয়েকটি আসনে প্রার্থী ঘোষণা করলেন অল ইন্ডিয়া মজলিস-ই-ইত্তেহাদুল মুসলিমিন সুপ্রিমো!
বিহারের সাফল্য পাওয়ার পর বাংলায় নজর মিমের
বিহারের বিধানসভা নির্বাচনে ভালো সাফল্য পেয়েছে মিম। এরপরেই আসাদউদ্দিন বাংলায় নির্বাচন লড়াই কথা বলেন। আর সেই লক্ষ্যেই আব্বাসের সঙ্গে কথা বলেন তিনি। কিন্তু মিমের সঙ্গে জোটে রাজি ছিলেন না আব্বাস। এরপর বাংলায় মিমের অবস্থান নিয়ে তৈরি হয় হাজারো জল্পনা। এমনকি তাঁদের প্রার্থী দেওয়া নিয়েও তৈরি হয় সন্দেহ। এর মধ্যে লাগাতার মিমে ভাঙন ধরায় শাসকদল তৃণমূল। একাধিক নেতা মিম ছেড়ে তৃণমূলে যোগ দেন। এই অবস্থায় বাংলায় মিমের সংগঠন নিয়ে তৈরি হয় হাজারো প্রশ্ন। তবে ভাঙা সংগঠন নিয়েই কার্যত বাংলার ভোটে প্রার্থী দিল মিম।
প্রার্থী ঘোষণা করল মিম
সাতটি বিধানসভা কেন্দ্র থেকে ভোটে লড়ছে অল ইন্ডিয়া মজলিস-ই-ইত্তেহাদুল মুসলিমিন (এআইএমআইএম) বা মিমের প্রার্থীরা। মঙ্গলবার তৃতীয় দফার ভোট চলাকালীন প্রার্থী তালিকা প্রকাশ করলেন আসাদউদ্দিন। উত্তর দিনাজপুরে একটি আসনে লড়ছে ওয়েইসির দল। পাশাপাশি মুর্শিদাবাদের তিনটি, মালদহের দু'টি ও পশ্চিম বর্ধমানের একটি আসনে লড়াই করবে তারা। এই সমস্ত অঞ্চলে কংগ্রেসের শক্ত ঘাঁটি। সংখ্যালঘু অঞ্চল। তবে গত এক বছরে এই সমস্ত অঞ্চলে মিমের শক্তি বেড়েছে এই সমস্ত অঞ্চলে।
এক নজরে প্রার্থীদের নাম!
উত্তর দিনাজপুরের ইটাহার কেন্দ্রে মিমের প্রার্থী মোফাক্কেরুল ইসলাম। মুর্শিদাবাদের জলঙ্গিতে লড়বেন অলসুকুয়াত জামান, সাগরদিঘিতে নুরে মেহেবুব আলম, ভরতপুরে সাজ্জাদ হোসেন। মালদহের মালতীপুরে মিম প্রার্থী মৌলানা মতিউর রহমান, রতুয়ায় প্রার্থী সইদুর রহমান। আসানসোল উত্তর কেন্দ্রে ওয়েইসির দলের মুখ দানিশ আজিজ। বাংলায় প্রায় ৩০ শতাংশ সংখ্যালঘু ভোট। বিরোধীরা বলে, এই ভোটের সিংহভাগ নাকি শাসকদলের জন্য 'সংরক্ষিত'। যদিও ভোটের বাংলায় ফুরফুরা শরিফের পীরজাদা আব্বাস সিদ্দিকির সক্রিয় রাজনীতিতে অভিষেক সে তত্ত্বে খানিক চিড় ধরিয়েছে। রাজনৈতিক মহল বলছে, এবার সে চিড় আরও খানিক বাড়ল ওয়েইসির হাত ধরে।
ওয়েইসিকে বারবার নিশানা করেছেন তৃণমূল সুপ্রিমো
মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় প্রচারে বেরিয়ে একাধিক আসাদউদ্দিনকে আক্রমণ শানিয়েছেন। তিনি অভিযোগ করে বলেছেন যে, 'বিজেপি হায়দরাবাদের একটি পার্টিকে নিয়ে এসে এখানে সংখ্যালঘুদের ভোট কাটতে চেষ্টা করছে। হিন্দু ভোট নিয়ে যাবে একটি দল, অন্য একটি দল মুসলিম ভোট নিয়ে চলে যাবে। আর আমি কি কাঁচকলা খাব? ওরা শুধু বিভেদের রাজনীতির মাধ্যমে মানুষের মধ্যে দূরত্ব তৈরি করে। ওদের থেকে টাকা নেবেন, কিন্তু ভোটটা গিয়ে তণমূলকে দেবেন।'
৭৫ থেকে ৮০টি আসনে মুসলিম ভোট নির্ধাণকারী হবে
বাংলার ২৯৪টি আসনের মধ্যে ৭৫ থেকে ৮০টি আসনে মুসলিম ভোট নির্ধাণকারী ফ্যাক্টর। সেই ভোট যদি তিন ভাগে হয়ে যায়, লাভ হবে বিজেপির। সার্বিক ভাবে বাংলায় মোট ২৭ শতাংশ ভোট রয়েছে। সেই ভোট যদি কোনও দল নিজেদের পক্ষে নিশ্চিত করতে পারত, তাহলে বিজেপির পক্ষে বাংলা জয় খুবই কঠিন হত। তাই বাংলায় এমআইএম-এর প্রবেশ আরও উল্লেখযোগ্য।