বিরোধী প্রার্থীর দুই ছেলেকে অপহরণ! তারপর ফোনে কী কথা হল আরাবুলের সঙ্গে, শুনুন অডিও ক্লিপিংস
শুক্রবার সকালে জমি জীবিকা বাস্তুতন্ত্র ও পরিবেশ রক্ষা কমিটির ভাঙড়ের দক্ষিণ গাজিপুরের ১০২ নম্বর সংসদের প্রার্থী ফতিমা বিবির দুই ছেলেকে অপহরণের অভিযোগ ওঠে আরাবুল ইসলাম ও তাঁর দলবলের বিরুদ্ধে।
শুক্রবার সকালে জমি জীবিকা বাস্তুতন্ত্র ও পরিবেশ রক্ষা কমিটির ভাঙড়ের দক্ষিণ গাজিপুরের ১০২ নম্বর সংসদের প্রার্থী ফতিমা বিবির দুই ছেলেকে অপহরণের অভিযোগ ওঠে আরাবুল ইসলাম ও তাঁর দলবলের বিরুদ্ধে। আরাবুল ইসলামের দলবল নাবালক নাজিবুল ও রিয়াজুলের মাথায় বন্দুক ঠেকিয়ে খুনের খুমকিও দেয় বলে অভিযোগ।
এরই মধ্যে বারুইপুর থানায় মেল করে অভিযোগ জানান জমি জীবিকা বাস্তুতন্ত্র ও পরিবেশ রক্ষা কমিটির পক্ষে শর্মিষ্ঠা চৌধুরী। বারুইপুর থানাতে ফতিমা বিবি লিখিত অভিযোগও করেন। আরাবুল ও তার দলের সঙ্গে ফোনে কথোপকোথনের পর সেই অডিও ক্লিপ-সহ অভিযোগ জানানো হয়। কী কথোপকোথন হয়েছিল আরাবুল ও তাঁর দলবলের সঙ্গে।
আরাবুলের লোকজন অপহৃত নাজিবুল ও রিয়াজুলের বাবাকে ফোন করে হুঁশিয়ারিও দেয়। ফোনে তাদের কথোপকোথন হয় দীর্ঘক্ষণ। আরাবুলও ফোন ধরে তাঁর বাড়িতে চলে আসার জন্য অনুরোধ করে ফতিমার স্বামীকে। আরাবুল বলে তোর দায়িত্ব আমার। তুই আমার বাড়িতে থাকবি। ভোট মিটলে বাড়ি যাবি। তোর কোনও ক্ষতি করবে না কেউ। তাঁদের মধ্যে চার মিনিটেরও বেশি সময় কথোপকথন হয়। কী কথা হয় শুনুন অডিও ক্লিপিংস।
অডিও ক্লিপিংসের কথোপকথন তুলে দেওয়া হল লিখিত আকারে
ফতিমার
স্বামী
:
বল
কি
হয়েছে,
ওরা
কী
বলছে
বল।
নাজিবুল
ও
রিয়াজুল
:
ওরা
এখন
বন্দুক
ধরেছে
মাথায়।
ফতিমার
স্বামী
:
বন্দুক
ধরেছে,
বলছে
মেরে
দেব।
(আরাবুলের
দলবলকে)বাচ্চা
ছেলেকে
ধরে
মস্তানি
দেখাচ্ছো।
আরাবুলের
দলবদল
:
আমরা
মস্তানি
দেখাচ্ছি।
ফতিমার
স্বামী
:
তোমরা
কী
মেরে
দেবে
আরাবুলের
দলবদল
:
হ্যাঁ
ফতিমার
স্বামী
:
দাও,
মেরে
দাও।
আরাবুলের
দলবদল
:
হ্যালো,
তুমি
কি
বলছো?
তুমি
আসবে
কি
না
বলো?
ফতিমার
স্বামী
:
ওদের
মারতে
হবে
না,
আমি
বিষ
খেয়ে
মরে
যাচ্ছি।
আমি
মরে
যাবো।
আরাবুলের
দলবদল
:
এমনি,
এমনি
ধরে
রেখেছি।
ফতিমার
স্বামী
:
আমি
গেলেই
তো
মারবে।
আমি
বিষ
খেয়ে
মরে
যাবো
আমার
দরকার
নেই।
আরাবুলের
দলবদল
:
তোমার
গায়ে
কেউ
হাত
দেবে
না।
তুমি
তুলে
নেবে
আরাবুল
:
শোন,
তোর
দায়িত্ব
আমার,
আমি
আরাবুল
বলছি।
তোর
ঘর
দোর
সব
করে
দেব।
আমি
দায়িত্ব
নিচ্ছি।
ফতিমার
স্বামী
:
আরাবুল
দা
বলছো,
আরাবুল
:
হ্যা,
ভাই,
আমি
বলছি,
আরাবুল
বলছি
ফতিমার
স্বামী
:
আমার
তো
ভয়
পাচ্ছে।
ওখানে
গেলে
মারবে
আরাবুল
:
আমার
বাড়িতে
থাকবি।
ভোট
হলে
বাড়ি
চলে
যাবি।
আমার
খামারে
১০০
লোক
আছে,
তুইও
থাকবি।
আমার
বাড়িতেও
থাকতে
পারিস।
আমি
দায়িত্ব
নিচ্ছি।
পুলিশ
পোস্টিং
করে
দেব।
সাজ্জাদ
যাচ্ছে,
খামারআটি
মোড়ে
চলে
যায়।
তোকে
নিয়ে
আসবে।
তুই
তো
আমাকে
চিনিস।
তুই
তো
আমার
ঘরে
আগেও
এসেছিস,
বল।
ই
যা
যা
বলবি
সব
করে
দেব।
আমি
যা
বলি
তাই
করি।
তুই
নিশ্চিন্তে
থাক।
চলে
আয়।
আমার
ছেলেগুলো
তো
ওদের
ছাড়বে
না।
মেরে
দেবে।
তুই
চলে
আয়।
তোর
কোনও
অসুবিধা
হবে
না।
বল,
আর
কী
বলবি?
ফতিমার
স্বামী
:
ঠিক
আছে,
যাচ্ছি।
আরাবুল
:
আমি
কথা
দিচ্ছি।
তোদের
গায়ে
কেউ
হাত
দেবে
না।
তুই
দুপুরে
চলে
আয়।
তুই
রাস্তায়
বেরিয়ে
আয়।
বেরিয়ে
এসে
ফোন
কর।
কখন
আসবি
বল।
ফতিমার
স্বামী
:
আধঘণ্টা
পরেই
যাচ্ছি।
রাস্তায়
বেরিয়ে
ফোন
করছি।
আরাবুল
:
চলে
আয়,
চলে
আয়।
এরপরই ফোন রেখে দেয় আরাবুল। এই অডিও ক্লিপিংস নিয়েই থানায় যান ফতিমা। লিখিত অভিযোগ দায়ের করে, তাঁর দুই নাবালকর ছেলেকে উদ্ধারের আর্জি জানান তিনি। সেইসঙ্গে বুঝিয়ে দেন, তিনিও তৈরি পঞ্চায়েত ভোটে টক্কর দেওয়ার জন্য। এবার এত সহজে জমি ছেড়ে দেবে না জমি জীবিকা বাস্তুতন্ত্র ও পরিবেশ রক্ষা কমিটিও। আরাবুল বাহিনী তাই এবার শক্ত চ্যালেঞ্জের মুখে।