দ্বন্দ্ব জর্জরিত বঙ্গ বিজেপি, অমিত শাহের সফরে কী মিলবে কোনও দিশা?
দ্বন্দ্বে জর্জরিত দল। দিলীপ বনাম সুকান্ত বিরোধ চরমে উঠেছে। কার্যত দুই দলে ভাগ হয়ে গিয়েছে বঙ্গ বিজেপিষ এই পরিস্থিতিতেই রাজ্য সফরে আসছেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। একুশের নির্বাচনের পর প্রথম রাজ্য সফরে অমিত শাহ। তাতে কি মিটবে দ্বন্দ্ব। এই নিয়ে তুমুল জল্পনা চলছে রাজনৈতিক মহলে।

তিন দিনের সফরে অমিত শাহ
তিন দিনের রাজ্য সফরে অমিত শাহ। ৪ মে রাজ্যে আসছেন তিনি। তিন দিন রাজ্যে থাকবেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী। একুশের নির্বাচনের পর প্রথম রাজ্য সফর অমিত শাহের। রাজ্যে একাধিক কর্মসূতি রয়েছে তাঁর। দলীয় কর্মসূচি ছাড়াও রয়েছে সরকারি অনুষ্ঠান। উত্তরবঙ্গের শিলিগুড়িতে জনসভা করার কথা রয়েছে অমিত শাহের। সেখানে বিজয় সংকল্প যাত্রা করবেন অমিত শাহ। সেখানে কলকাতার নেতৃত্বরাও উপস্থিত থাকবেন বলে জানা গিয়েছে।

বঙ্গ বিজেপিতে তুমুল বিদ্রোহ
বঙ্গ বিজেপিতে তুমুল বিদ্রোহ শুরু হয়ে গিয়েছে একুশের ভোটের পরেই। দিলীপ ঘোষকে সরিয়ে সুকান্ত মজুমদারকে আনা হয়েছে রাজ্য সভাপতি পদে। কিন্তু দলের দ্বন্দ্ব যেন থামছে না। বঙ্গ বিজেপি কার্য আড়াআড়ি দুই ভাগে ভাগ হয়ে গিয়েছে। সুকান্ত বনাম দিলীপের দ্বন্দ্ব চরমে উঠেছে। প্রকাশ্যে বিজেপির রাজ্য সভাপতির যোগ্যতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন দলের সর্বভারতীয় সহ সভাপতি দিলীপ ঘোষ। দলের নেতৃত্ব দেওয়ার ক্ষেত্রে ব্যর্থ বিজেপি এমনই অভিযোগ করেছেন তিনি।

পদ ছাড়ছেন বিজেপি নেতারা
বঙ্গ বিজেপির অন্দরে বিক্ষোভ এতটাই প্রকট হয়ে উঠেছে যে পদ ছাড়তে শুরু করেছেনএকের পর এক বিজেপি নেতা। নদিয়া, মুর্শিদাবাদে বিেজপির অন্দরে বিদ্রোহ চরমে উঠেছে। বিজেপি নেতাদের মধ্যে পদ ছাড়ার হিড়িক পড়ে গিয়েছে। তাঁদের অভিযোগ রাজ্য নেতৃত্ব নীচু তলার নেতাদের কোনও কথাই শুনতে চাইছেন না। তাঁদের মতামত নিেত চাইছেন না। এই নিয়ে শুরু হয়ে গিয়েছে তরজা। প্রকাশ্যে রাজ্য নেতৃত্বের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ ঘোষণা করে একের পর এক বিজেপি নেতা হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপ ছাড়তে শুরু করেছেন। এমনকী রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীও তমলুক শাখার নেতৃত্ব ছাড়তে শুরু করে দিয়েছেন।

দ্বন্দ্ব সামাল দিতেই কি শাহের সফর
অমিত শাহের হঠাৎ বঙ্গ সফর ঘিরে নতুন জল্পনা শুরু হয়ে গিয়েছে। অনেকেই মনে করছেন বঙ্গ বিজেপির অন্দরে দ্বন্দ্ব সামাল দিতেই অমিত শাহের হঠাৎ এই সফর।কারণ এই মুহূুর্তে বঙ্গ সফরের মত জরুরি কিছু ছিল না। তারপরেও যখন অমিত শাহ বাংলায় আসছেন তখন দলের দ্বন্দ্ব সামাল দেওয়াই যে মূল লক্ষ্য সেটা বোঝাই যাচ্ছে।
জেলায় জেলায় বিজেপির মধ্যে এই ক্ষোভের কারণ কী তার সব স্তরের জানার চেষ্টা করবেন তিনি। তার জন্যই রাজ্য নেতৃত্ব এর সঙ্গে বৈঠক করতে পারেন অমিত শাহ। আদি বিজেপির নেতৃত্বের সঙ্গে কথাও বলবেন তিনি।

কি কি কর্মসূচি রয়েছে শাহের
৪ মে রাতে কলকাতায় পৌচ্ছাবেন অমিত শাহ। পরের দিন সকালে উত্তর ২৪ পরগনার হিঙ্গলগঞ্জে যাবেন, BSF এর সরকারি অনুষ্ঠানে যোগ দেবেন। ওই দিনই শিলিগুড়ি চলে যাবেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী। বিকেলে রেলওয়ে ইনস্টিটিউটের মাঠে দলীয় জনসভা করবেন। রাতে পাহাড়ের বিভিন্ন অরাজনৈতিক সংগঠনের প্রতিনিধিদের সঙ্গে বৈঠক করার কথা রয়েছে। বৈঠকে ডাকা হতে পারে সুবাস ঘিসিংয়ের দল GNLF-কেও। ৬ মে সকালে কোচবিহারের তিন বিঘায় সরকারি অনুষ্ঠানে যোগ দেবেন অমিত শাহ। ওই দিনই কলকাতায় ফিরে এসে, রাজ্য নেতৃত্ব ও জেলা নেতৃত্বের সঙ্গে দফায় দফায় সাংগঠনিক বৈঠক করবেন তিনি। রাতে ফিরে যাবেন দিল্লি।