মুকুল-দিলীপের দ্বৈরথে সিঁদুরে মেঘ বিজেপিতে, একুশের আগে ঐক্য ফেরানোই চ্যালেঞ্জ
মিশন ২০২১-এর আগে বিজেপির ঘুম কেড়েছে মুকুল রায় বনাম দিলীপ ঘোষ দ্বৈরথ। যদিও উভয়েই জানিয়েছেন, তাঁদের মধ্যে কোনও দ্বন্দ্ব নেই, কোনও বিরোধী নেই।
মিশন ২০২১-এর আগে বিজেপির ঘুম কেড়েছে মুকুল রায় বনাম দিলীপ ঘোষ দ্বৈরথ। যদিও উভয়েই জানিয়েছেন, তাঁদের মধ্যে কোনও দ্বন্দ্ব নেই, কোনও বিরোধী নেই। দিলীপ ঘোষ তো আবার বিজেপিকে কোনও দল বা পার্টি বলতে নারাজ, বিজেপিকে তিনি একটা পরিবার বলে ব্যাখ্যা করেছেন। তারপরও বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব বারেবারে বিব্রত হচ্ছে মুকুল-দিলীপদের বিরোধ নিয়ে।
বিজেপির কাছে এখন মস্তবড় চ্যালেঞ্জ
বিজেপির কাছে এখন মস্তবড় চ্যালেঞ্জ হয়ে গিয়েছে মুকুল বনাম দিলীপের দ্বন্দ্বে রাশ টানা। সেজন্য বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি জেপি নাড্ডা যেমন রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষকে তলব করেছেন, তেমনই শীঘ্রই বঙ্গে দূত পাঠাচ্ছেন অমিত শাহ। তিনি চাইছেন উভয়ের দ্বন্দ্ব মিটিয়ে ঐক্যবদ্ধভাবে তৃণমূলকে মোকাবিলা করতে।
মতানৈক্য মানেন না মুকুল-দিলীপরা
দিল্লির বৈঠকের পর থেকেই যত সমস্যা তৈরি হয়েছে বঙ্গ বিজেপিতে। বৈঠকে মুকুল ও দিলীপের মধ্যে মতানৈক্য তৈরি হয়েছিল বলে রটনা হয়েছিল। যদি তা বিজেপি বা উভয়ের কেউই মেনে নেননি। তাঁদের দাবি ছিল, ওই বৈঠকে কোনও সিদ্ধান্তই হয়নি, শুধু আলোচনা হয়েছে। মতানৈক্যের কোনও কারণই নেই।
মুকুলের কলকাতায় ফেরার পরই...
আসলে মুকুল রায়ের বৈঠক ছেড়ে কলকাতায় ফিরে আসাতেই জল্পনা বাড়ে। কিন্তু সেটা ছিল একেবারেই ব্যক্তিগত কারণে। সেই ব্যাখ্যা দেওয়া হয় বিজেপির পক্ষ থেকে। মুকুল রায় ও দিলীপ ঘোষের পক্ষ থেকেও। মুকুল রায়ের চোখে ইঞ্জেকশনই প্রধান কারণ ছিল তাঁর ফিরে আসার নেপথ্যে।
দিলীপ ঘোষের একাই পরিবর্তন আনার বার্তায়...
কিন্তু দিলীপ ঘোষের একাই পরিবর্তন আনার বার্তা আর বুকে পা দিয়ে রাজনীতি করার নিদানে ফের নতুন করে অনৈক্যের সুর শুনতে পেয়েছে বিজেপি তারপর বিজেপিতে আদি-নব্য দ্বন্দ্বও মাথাচাড়া দিচ্ছে মাঝেমধ্যে। মুকুল রায়ের হাত ধরে যাঁরা বিজেপিতে এসেছিলেন, তাঁদেরকে সেভাবে আমল দেওয়া হচ্ছে না বলে অভিযোগ।
দ্বৈরথে ২০২১-এ বুমেরাং হবে বিজেপির
এই বিরোধ বিপর্যয় ডেকে আনতে পারে বলে অনুমান করেই কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের পক্ষ থেকে কড়া ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। বিজেপির এক ও একমাত্র লক্ষ্য বাংলার মসনদ দখল করা। সেটা করতে যেমন মুকুল রায়কে দরকার, তেমনই দরকার দিলীপ ঘোষ। কিন্তু উভয়কে ঘিরে যদি এভাবে বিরোধ মাথাচাড়া দিতে থাকে, তবে তা বুমেরাং হবে বিজেপির পক্ষ থেকে।
মুকুল রায় ও দিলীপ ঘোষের বিরোধ মেটাতে
এবার বাংলাকে বিশেষ গুরুত্ব দিচ্ছেন বিজেপির সেকেন্ড ইন কম্যান্ড অমিত শাহ। শীঘ্রই অমিত শাহ বাংলায় পাঠাচ্ছেন পর্যবেক্ষক কৈলাশ বিজয়বর্গীয়কে। মুকুল রায় ও দিলীপ ঘোষের বিরোধ মেটানোর জন্যই কৈলাশকে তড়িঘড়ি পাঠানোর চিন্তাভাবনা নিয়েছেন অমিত শাহ। করোনার আবহে বিজেপির একাংশ বসে গিয়েছে একেবারেই। সেটা সুখকর নয় বিজেপির পক্ষে।
বিজেপির আকাশে সিঁদুরে মেঘ
এমতাবস্থায় অমিত শাহের লক্ষ্য যত শীঘ্র সম্ভব বাংলার সমস্ত গোষ্ঠীকে একজোট করা। লোকসভা নির্বাচনের আগে বিজেপিকে যেভাবে সংগঠিত মনে হয়েছিল, বিধানসভা নির্বাচনের আগে বাঁধন আলগা বলে মনে হচ্ছে। বারবার বিজেপির অন্দরে দ্বৈরথের সৃষ্টি হওয়া, নানা জল্পনা তৈরি হওয়া বিজেপির আকাশে সিঁদুরে মেঘ হয়ে উঠছে।