মমতার উত্থানের গড়ে শক্তি প্রদর্শন অমিত শাহের, সিঙ্গুরে খেলা ঘোরানোই লক্ষ্য
তৃতীয় দফার ভোট শেষ হতেই চতেই প্রচারে ঝড় তুলতে রাজ্যে আসছেন মোদী, অমিত শাহ। আজ সিঙ্গুরে রোড শো করবেন অমিত শাহ। নন্দীগ্রামের পর সিঙ্গুরকে টার্গেট করে প্রচারে ঝাঁপাচ্ছে বিজেপি। সিঙ্গুরে এবার বিজেপি প্রার্থী করেছে দলবদলি তৃ
লক্ষ্য বাংলা দখল! আর তাই কার্যত বাংলায় ডেলি প্যাসেঞ্জারি করছেন অমিত শাহ। নন্দীগ্রামের পর বাংলায় বিজেপির নজরে সিঙ্গুর। কার্যত এই সিঙ্গুরই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে মুখ্যমন্ত্রী পদের জন্যে এগিয়ে দিয়েছিল। আর সেখানেই শক্তিপ্রদর্শন অমিত শাহের। সিঙ্গুরের মাটিতে রোড শো করলেন অমিত শাহ। সিঙ্গুরে এবার বিজেপি প্রার্থী করেছে দলবদলি তৃণমূল কংগ্রেস বিধায়ক রবীন্দ্রনাথ ভট্টাচার্যকে। সিঙ্গুরে এবার তাঁর প্রতিপক্ষ বেচারাম মান্না। একটা সময় এক দলের মধ্যে থেকে লড়াই করেছিলেন। এবার অন্য দুই দলের হয়ে সম্মুখ সময়ে একসময়ের দুই যোদ্ধা।
নন্দীগ্রামের পর সিঙ্গুরকে টার্গেট করে ঝাঁপাচ্ছে বিজেপি
সিঙ্গুরে নজর বিজেপির। যে জায়গা থেকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উত্থান হয়েছে কার্যত সেখানেই তাঁকে ধাক্কা দিতে চায় বিজেপি। আর তাই সিঙ্গুর দখলে ঝাপাচ্ছে বিজেপি। ইতিমধ্যে সিঙ্গুরে সভা করে গিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। চাঁচাছোলা ভাষায় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে আক্রমণ শানিয়েছেন। এবার সিঙ্গুরের অলিতে গলিতে রোড শো খোদ কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর। দুপুরের প্রখর রোদকে উপেক্ষা করেই কয়েকশ মানুষের ভিড় ছিল এই সমাবেশে।
১০ বছরের কিছুই করেননি মমতা
গত ১০ বছরে সিঙ্গুরের জন্যে কিছুই করেননি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। রোড শো থেকেই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে তীব্র আক্রমণ শাহের। তিনি বলেন, ভোটের মুখে শিল্পের কথা মনে পড়েছে তাঁর। এতদিন এখানকার মানুষের জন্যে কেন কিছু করেননি মমতা? প্রশ্ন অমিত শাহের। একই সঙ্গে প্রার্থী নিয়ে শাহ বলেন, বর্তমান পরিস্থিতিতে প্রার্থী বড় কথা নয়, দলই বড়। মানুষ বিজেপিকে দেখে ভোট দেবে বলে দাবি কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের। মানুষ সরকার বদলাতে চাইছে। আর পরিবর্তনের পরিবর্তন দেখবে বলে দাবি শাহের।
সিঙ্গুরে বিজেপির গোষ্ঠী কোন্দল কাঁটা!
সিঙ্গুরে রবীন্দ্রনাথ ভট্টাচার্যকে প্রার্থী করা নিয়ে প্রকাশ্যে আসে বিজেপির গোষ্ঠী কোন্দল। প্রার্থী বদলের দাবিতে লাগাতার বিক্ষোভ ছিল। কিন্তু সেখানেই শক্তি প্রদর্শন করলেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী।
সিঙ্গুরের সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা করেছেন মমতা
গত কয়েকদিন আগে হুগলিতে দাঁড়িয়ে সিঙ্গুর নিয়ে মমতা বন্দ্যপধ্যায়কে তীব্র আক্রমণ করেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। তারকেশ্বরে দাঁড়িয়ে মোদী বার্তা দেন, সিঙ্গুরে কী কী করেননি মমতা। তিনি বলেন, 'মমতা শিল্প ফিরিয়ে দিয়েছেন, কিন্তু সিঙ্গুরের মানুষের জন্য কিছুই করেননি।' সেখানকার মানুষ সব হারিয়ে ফেলেছেন বলেই দাবি করেন মোদী। ১০ বছরে সিঙ্গুরের জন্য কী করেছেন মুখ্যমন্ত্রী? তা নিয়েই প্রশ্ন তুলে দিয়ে যান মোদী। সিঙ্গুরের জমি থেকে টাটাকে ফেরানোর পর তাঁদের গন্তব্য হয়েছিল গুজরাট। সে রাজ্যে তখন মুখ্যমন্ত্রী মোদী। আর এ রাজ্যে তখনও পদ্ম শিবিরের জমিই ছিল না। তাই বাংলার মাটি থেকে ফিরে যাওয়া শিল্পকে স্থান দেওয়ার তেমন কোনও রাজনৈতিক তাৎপর্য ছিল না তখনও। অথচ ২০২১-এ এসে সেটাই কী সুবিধা করে দিল মোদীকে? এ দিন সিঙ্গুর নিয়ে মমতাকে তোপ তাই নিছক প্রচারের চেনা স্ক্রিপ্টের থেকে কিছু বেশি গুরুত্ব রাখল।
সিঙ্গুরে চাপে আছে শাসকদল?
সিঙ্গুরের রাজনৈতিক চিত্র যে তৃণমূলকে খুব একটা স্বস্তি দিচ্ছে, এমনটাও নয়। লোকসভা নির্বাচনে হুগলি আসন থেকে জয়ী হয়ে বিজেপির সংসদ হন লকেট চট্টোপাধ্যায়। শুধু তাই নয়, বিধানসভার নিরিখেও ফল ভালো ছিল লকেটের। সিঙ্গুর বিধানসভায় তৃণমূল প্রার্থী রত্না দে নাগের চেয়ে ১০,৪২৯ ভোট বেশি পেয়েছিলে লকেট। এমনকি টাটাদের প্রকল্প এলাকাতেও ফল আাশানুরূপ ছিল না তৃণমূলের। যে তিনটি মৌজার জমি ওই প্রকল্পের জন্য অধিগ্রহণ করা হয়েছিল, তার দুটিতে অধিকাংশ পঞ্চায়েত আসনে পিছিয়ে ছিল তৃণমূল। গোপালনগরে মোট ১৮টি পঞ্চায়েত আসনের মধ্যে ১১টিতেই জয়ী হয় বিজেপি, ৭টিতে তৃণমূল।