'ভোট নিয়ে কোনও দায়িত্ব থাকবে না মতুয়া মহাসঙ্ঘের', হুঁশিয়ারির পরেই শান্তনুর সঙ্গে বৈঠকে শাহ
একুশের বিধানসভা ভোটে একজন মতুয়াকেও প্রার্থী করা হয়নি। বিজেপির তরফেও প্রার্থী তালিকায় নেই কোনও মতুয়া। এরফলে বিজেপির বিরুদ্ধে তোপ দেগেছেন অল ইন্ডিয়া মতুয়া মহাসঙ্ঘের প্রধান সেবায়েত মঞ্জুলকৃষ্ণ ঠাকুর। আর এই হুঁশিয়ারির পরে
একুশের বিধানসভা ভোটে একজন মতুয়াকেও প্রার্থী করা হয়নি। বিজেপির তরফেও প্রার্থী তালিকায় নেই কোনও মতুয়া। এরফলে বিজেপির বিরুদ্ধে তোপ দেগেছেন অল ইন্ডিয়া মতুয়া মহাসঙ্ঘের প্রধান সেবায়েত মঞ্জুলকৃষ্ণ ঠাকুর।
ম
আর এই হুঁশিয়ারির পরেই সরগরম রাজ্য-রাজনীতি।
ক্ষোভ রয়েছে মতুয়াদের মধ্যে!
গত লোকসভা নির্বাচনে মতুয়াদের পাশে পেয়েছিল বিজেপি। মূলত নাগরিকত্ব আইন লাগু করা হবে। গত লোকসভা নির্বাচনে এমনটাই প্রতিশ্রুতি দেয় বিজেপি। কিন্তু কেন্দ্রে সরকার গঠনের কয়েক বছর কেটে গেলেও নাগরিকত্ব আইন নিয়ে কিছুই করেনি বিজেপি সরকার। তা নিয়ে ক্ষোভ রয়েছে। প্রকাশ্যেও এসেছে বারবার। খোদ বিজেপি সাংসদ শান্তনু ঠাকুর এই বিষয়ে ক্ষোভ উগরে দিয়েছেন। এই অবস্থায় মতুয়া গড়ে আসেন অমিত শাহ। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ আশ্বাস দেন, করোনা টিকাকরণ শেষ হলেই মতুয়াদের নাগরিকত্ব দেওয়া হবে। ইস্তেহারেও তার উল্লেখ রয়েছে।
বিস্ফোরক মতুয়া মহাসঙ্ঘের প্রধান সেবায়েত
একদিকে সিএএ নিয়ে কিছুটা চুপ করানো গেলেও বিধানসভা ভোটে টিকিট না পাওয়া নিয়ে বিস্ফোরক অল ইন্ডিয়া মতুয়া মহাসঙ্ঘের প্রধান সেবায়েত মঞ্জুলকৃষ্ণ ঠাকুর। তিনি বলেন, একুশের বিধানসভা ভোটে একজন মতুয়াকেও প্রার্থী করা হয়নি। বিজেপির তরফে প্রার্থী তালিকায় নেই কোনও মতুয়া। ফলে, এরপর আর মতুয়াদের ভোট নিয়ে কোনও দায়িত্ব থাকবে না মতুয়া মহাসঙ্ঘের। খোদ সাংসদের বাবার এহেন হুঁশিয়ারির পরেই নড়েচড়ে বসে বিজেপি নেতৃত্ব। মতুয়া মহাসঙ্ঘের ক্ষোভের জেরে সিঁদুরে মেঘ দেখতে শুরু করেছে বিজেপি নেতৃত্ব। তড়িঘড়ি ডেকে পাঠানো হয় শান্তনু ঠাকুরকে।
শাহের সঙ্গে বৈঠক বিজেপি সাংসদের
এই পরিস্থিতিতে নিউটাউন পাঁচতারা হোটেলে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ বৈঠক করেন কৈলাস বিজয়বর্গীয়। গুরুত্বপূর্ণ এই বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন শান্তনু ঠাকুরও। সেখানে এই প্রসঙ্গটি উঠে আসে। যদিও বৈঠক শেষে হোটেল থেকে গুয়াহাটির উদ্দেশ্যে রওনা দেন অমিত শাহ। তারপর বৈঠক থেকে শান্তনু ঠাকুর বেরিয়ে জানান, ব্যক্তিগত আলোচনা ছিল। অবশ্যই রাজনৈতিক ব্যাপারেও ছিল। আমার বিধানসভার কিছু বিষয় নিয়ে কিভাবে কি করা যায় তা নিয়ে কথা হয়েছে। আনন্দের বিষয় হল, যেটা চেয়েছিলাম সেটা হয়েছে! তবে কি চেয়েছিলেন তা স্পষ্ট করেননি সাংসদ। রাজনৈতিকমহলের মতে, বেশ কয়েকটি আসনে এখনও প্রার্থীর নাম ঘোষণা হয়নি। সেখানে কি মতুয়াদের নাম সামনে আনা হবে?
বড় ফ্যাক্টার মতুয়া ভোট!
এবার ভোটে বড় ফ্যাক্টার মতুয়া ভোট! যে সমস্ত আসনে মতুয়া ভোটের প্রভাব রয়েছে, তার একটা অংশে মতুয়ারাই প্রার্থী হোন। এমনই ইচ্ছা প্রকাশ করেছিলেন বনগাঁর বিজেপি সাংসদ শান্তনু ঠাকুর। বিজেপির সমর্থনে রাজ্যের বিভিন্ন জায়গায় সভাও করেছেন তিনি। উল্লেখ্য, মতুয়াদের পক্ষ থেকে এমনও দাবি করা হয়েছিল যে, ২০২১-এর বিধানসভা নির্বাচনে ৩০ জনকে প্রার্থী করা হোক। কিন্তু সেই দাবি মানা হয়নি। বরং প্রার্থী তালিকা প্রকাশের পর দেখা যায়, একজন মতুয়াকেও প্রার্থী করা হয়নি। আর তাতেই ক্ষুব্ধ অল ইন্ডিয়া মতুয়া মহাসঙ্ঘের প্রধান সেবায়েত তথা সাংসদ শান্তনু ঠাকুরের বাবা মঞ্জুলকৃষ্ণ ঠাকুর।
প্রার্থী না করা নিয়ে ক্ষোভ মমতারও
গাইঘাটার তৃণমূল কংগ্রেস প্রার্থীর বিরুদ্ধে প্রকাশ্যেই ক্ষোভ উগরে দিলেন তৃণমূল কংগ্রেস সাংসদ মমতা বালা ঠাকুর। তিনি অভিযোগ করেছেন গাইঘাটার তৃণমূল কংগ্রেস প্রার্থী নরোত্তম বিশ্বাস প্রচারে গিয়ে ঠাকুরবাড়ির নামে অপ প্রচার চালাচ্ছে। সকলকে ঠাকুরবাড়িতে না যাওয়ার কথা বলছে। এই নিয়ে তিনি কালীঘাটে অভিযোগ জানাবেন বলে জানিয়েছেন। তৃণমূল কংগ্রেস প্রার্থী নরোত্তম বিশ্বাস অবশ্য এই অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। তিনি পাল্টা দাবি করেছেন ঠাকুর বাড়ির ভক্ত তিনি। তবে সেখানকার কয়েকজনের সঙ্গে নীতিগত মতপার্থক্য রয়েছে। সেকারণেই এই জটিলতা তৈরি হয়েছে। অন্যদিকে, বেশ কয়েকটি আসনে মতুয়াদের প্রার্থী করা হোক, এমনটাই দলের কাছে চেয়েছিলেন মমতাবালা ঠাকুর। আর তা না করাতে ক্ষোভ উগরে দিয়েছেন তিনিও।