অমিত শাহই জিতিয়ে দিলেন মমতাকে! উপনির্বাচনে তৃণমূলের বড় জয়ে উঠছে প্রশ্ন
রাজনৈতিক মহলের বড় একটা অংশ মনে করছে লোকসভায় প্রভূত সাফল্যের পর ছ-মাসের মধ্যে উপনির্বাচনে মুখ থুবড়ে পড়ার জন্য দায় এড়াতে পারেন না বিজেপি সর্বভারতীয় সভাপতি অমিত শাহ।
শাসক তৃণমূল থেকে শুরু করে চ্যালেঞ্জার বিজেপি- উভয়েই মনে করছে এনআরসি ফ্যাক্টরই ব্যাক-ফায়ার করেছে বিজেপিকে! রাজনৈতিক মহলের বড় একটা অংশ মনে করছে লোকসভায় প্রভূত সাফল্যের পর ছ-মাসের মধ্যে উপনির্বাচনে মুখ থুবড়ে পড়ার জন্য দায় এড়াতে পারেন না বিজেপি সর্বভারতীয় সভাপতি অমিত শাহ।
বিজেপির এনআরসি প্রচারই খলনায়ক
অসমে এনআরসির পর থেকেই বিজেপি প্রচার শুরু করেছিল ক্ষমতায় এলে বাংলাতেও এনআরসি হবে। অমিত শাহ সংসদে দাঁড়িয়েও বলেছেন গোটা দেশেই এনআরসি হবে, বাংলাও বাদ যাবে না। বিজেপি সর্বভারতীয় সভাপতির এই কথার উপর ভিত্তি করেই বঙ্গ বিজেপির নেতারা ঝাঁপিয়ে পড়েছিল বাংলায় এনআরসি নিয়ে প্রচারে।
এনআরসি প্রচারের ঝড় তুলতে গিয়েই বিপত্তি
যদিও তৃণমূলের পাল্টা প্রচারে চাপে পড়ে অমিত শাহ কলকাতায় এসে বলে গিয়েছিলেন এখনই এনআরসি নিয়ে প্রচার নয়। এখন পাখির চোখ করতে হবে নাগরিকত্ব বিলকে। নাগরিকত্ব বিল হয়ে যাওয়ার পর এনআরসি প্রচারের ঝড় তুলতে হবে। কিন্তু বিজেপি এই এনআরসি ও নাগরিকত্ব বিলকে নিয়ে ঘেঁটে ঘ হয়ে গিয়েছে।
সুযোগটাই কাজে লাগিয়েছে তৃণমূল কংগ্রেস
বিজেপি বোঝাতে পারেনি মানুষকে। এনআরসির ভয়ঙ্করতাই মানুষকে ভীত-সন্ত্রস্ত করে তুলেছে। আর সেই সুযোগটাই নিয়েছে তৃণমূল কংগ্রেস। তৃণমূল কংগ্রেস এনআরসির ভয়াবহতা প্রচার করেই কিস্তিমাত করে গিয়েছে। বিজেপির এনআরসি বার্তা কোনও একটি বিশেষ সম্প্রদায়কে বারবার টার্গেট করেছে। তৃণমূল সেই সুযোগটাও কাজে লাগিয়েছেন।
মমতার এনআরসি নিয়ে দুই মুখ!
বিজেপি এবার উপনির্বাচনে এই এনআরসিকেই মূল ইস্যু করে তৃণমূলের বিরুদ্ধে প্রচারে ঝাঁপায়। তাঁদের প্রচারে তৃণমূলের বিরুদ্ধে একটাই কথা, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও একটা সময়ে এনআরসি চেয়েছিলেন। তখন বলেছিলেন অনুপ্রবেশকারীরা সব সিপিএমের ভোটব্যাঙ্ক। এখন তারা তৃণমূলের ভোটব্যাঙ্কে পরিণত হয়েছে বলেই পাল্টি খেয়েছেন মমতা।
অসমে হিন্দু বাঙালিদেরও দুরবস্থার চিত্র
আর মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আর প্রশান্ত কিশোরের নির্দেশে তৃণমূল প্রচার চালিয়ে গিয়েছে এনআরসির ভয়ঙ্করতাকে নিয়ে। এতদিনের সাধের ভিটে ছেড়ে পরিবার থেকে আলাদা করে দেওয়ার চক্রান্ত বলে দেখিয়েছে তৃণমূল। অসমে যা হয়েছে, সেই বাস্তব চিত্র তুলে ধরে বুঝিয়েছেন মানুষকে। মানুষও দেখেছে অসমে হিন্দু বাঙালিদেরও দুরবস্থার চিত্র।
এনআরসি হলে রক্ষে নেই হিন্দুদেরও
তৃণমূল প্রমাণ করতে পেরেছে, শুধু মুসলিমরাই নন, এনআরসি হলে রক্ষে নেই হিন্দুদেরও। তাঁদেরও ঘর ছেড়ে পরিবার-পরিজন ছেডে় ডিটেনশন ক্যাম্পে কাটাতে হবে। বিজেপি এলে রাজ্যে নেমে আসবে আঁধার। রাজ্যবাসীকে সেই অন্ধকারে ডুবে মরতে হবে। বাংলার মানুষ কি তাই চান! এই বার্তাতেই মানুষ ঘুরে গিয়েছেন।
হারের জন্য দায়ী অমিত শাহও
তাই লোকসভায় সাফল্য পাওয়ার পর উপনির্বাচনে বিজেপির হারের জন্য দায়ী বিজেপি সভাপতি অমিত শাহও। আর সেই সুযোগ কাজে লাগিয়েই লোকসভায় বিপুল ভোটে পিছিয়ে থেকেও উপনির্বাচনে অসাধারণ কামব্যাক করতে সমর্থ হল তৃণমূল কংগ্রেস। মমতা-ঝড়ে ম্লান হয়ে গেল গেরুয়া শিবির। করিমপুর কেন্দ্রটি ধরে রাখার পাশাপাশি কালিয়াগঞ্জ ও খড়গপুরও বাম-কংগ্রেস ও বিজেপির কাছ থেকে ছিনিয়ে নিল তৃণমূল।
পিছন থেকে ছুটে এসে শুধুমাত্র 'ভোট মেকআপ' দিয়ে উপনির্বাচনে বাজিমাত তৃণমূলের