‘লালের বদলে নীল এসেছে, হাল ফেরেনি’, বিরোধী মেনে মমতাকেই নিশানা অমিতের
একটা সময় বাংলা দেশকে পথ দেখাত। এখন বাংলা ক্রমশ পিছিয়ে পড়ছে। সেজন্য মমতার সরকারকে দায়ী করলেন অমিত শাহ।
রাজ্যে লালের বদলে নীল সরকার এসেছে। কিন্তু রাজ্যের হাল ফেরেনি। এখনও একই জায়গায় রয়ে গিয়েছে রাজ্যের পরিস্থিতি। কোনও উন্নয়ন হয়নি। সাত বছর পেরিয়ে গিয়েছে, বদলায়নি ছবি। কোথায় গেল অনুদানের টাকা? জবাব দিতে হবে মমতার সরকারকে। বাংলায় এসে এভাবেই চাঁছাছোলা ভাষায় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে বিঁধলেন বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি অমিত শাহ।
মঙ্গলবার আইসিসিআর-এর সভায় বিজেপি সভাপতি তাঁদের প্রধান বিরোধী হিসেবে মেনে নেন এ রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে। এদিন অমিত শাহের কথাতেই উঠে আসে দিল্লির রাজনীতিতেও মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের গুরুত্বের কথা। তিনি বলেন, 'কেন্দ্রে তিন বছর হল মোদীজির নেতৃত্বে গরিবের সরকার প্রতিষ্ঠা হয়েছে। কিন্তু কোনও দুর্নীতির অভিযোগ ওঠেনি। এমনকী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মতো বিরোধীরাও কোনও অভিযোগ তুলতে পারেননি।'
এ প্রসঙ্গেই পাল্টা অভিযোগ করেন অমিত শাহ। তাঁর অভিযোগ, 'বাংলার জন্য অনুদান বৃ্দ্ধি করা হয়েছে। অনুদান বাড়ানো হয়েছে ৩৪ হাজার ৪৭২ কোটি টাকা। সেই টাকা কোথায় গেল? এর জবাব দিতে হবে মমতার সরকারকেই। হিসেব দিতে হবে। আসলে আঁধারে ডুবে আছে বাংলা। সেই আঁধার দ্রুত দূর হবে। সেদিন আর বেশি দেরি নয়। পরেরবারই বাংলায় বিজেপি সরকার আসছে।'
এদিন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধেই ধর্মীয় বিভাজনের রাজনীতির অভিযোগ তোলেন অমিত শাহ। এ প্রসঙ্গে তিনি মনে করিয়ে দেন বসিরহাট, ধূলাগড়-সহ বাংলার বিভিন্ন এলাকায় সন্ত্রস্ত পরিস্থিতির কথা। তারপর দুর্গাপুজোর বিসর্জন নিয়েও তিনি মমতার সিদ্ধান্তের কঠোর সমালোচনা করেন। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ই রাজ্যে ধর্মীয় বিভাজন ঘটানোর চেষ্টা করছেন বলে অভিযোগ তোলেন অমিত শাহ।
শুধু মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও তাঁর তৃণমূল কংগ্রেসকেই নয়, এদিন কংগ্রেসকেও নিশানা করেন বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি। তিনি বলেন, 'দুর্নীতিতে ডুবে ছিল ভারত। এমন সরকার কেন্দ্রে চলছিল যে, সব মন্ত্রীই নিজেকে মনে করতেন প্রধানমন্ত্রী। ২০১৪ সালে সেই সরকারের অবসান ঘটিয়ে ঐতিহাসিক সিদ্ধান্ত নিয়েছে দেশের মানুষ। দিল্লিতে নরেন্দ্র মোদীর নেতৃত্বে গরিবের সরকার প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। মানুষ দুর্নীতিমুক্ত সমাজ ফিরে পেয়েছে।'
অমিত শাহ আরও বলেন, 'দেশকে উন্নতির পথ দেখিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। তাঁর সুচিন্তিত পরিকল্পনায় দেশ এগিয়ে চলেছে। তিনি সাহসী সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষমতা রাখেন। যা বিগত সরকারের মধ্যে চূড়ান্ত অভাব ছিল।' এদিন মোদীন জনধন যোজনা থেকে শুরু করে স্বচ্ছভারত, বিদ্যুৎ পরিকল্পনা থেকে সার্জিক্যাল স্টাইকের প্রশংসা করেন অমিত শাহ।
এদিন নেতাজি সুভাষচন্দ্রের কথা দিয়ে ভাষণ শুরু করেন অমিত শাহ। এরপরই তিনি বলেন, 'একটা সময় বাংলা দেশকে পথ দেখাত। এখন বাংলা ক্রমশ পিছিয়ে পড়ছে। বাংলায় এখন শিল্পীরা প্রকৃত সম্মান পান না। দেশের মানচিত্রে বাংলা এখনও উঠে আসতে পারেনি। এবার তৃণমূলকে সরিয়ে বাংলায়ে পরিবর্তন আনতে হবে। তবেই বাংলার উন্নতি হবে।'