‘আক্রান্ত আমরা’র উপর হামলায় পুলিশি মদতের অভিযোগ, পিছপা হচ্ছে না অম্বিকেশ-রা
‘আক্রান্ত আমরা’র আহ্বায়ক অম্বিকেশ মহাপাত্র বলেন, ‘পুলিশ প্রশাসনের যোগসাজোশে হামলা চালানো হয়েছে। পুলিশ প্রশাসনকে আগাম জানানো সত্ত্বেও কোনও ব্যবস্থা নেয়নি।
ফের আক্রান্ত হলেন 'আক্রান্ত আমরা'র সদস্যরা। অভিযোগ, সম্পূর্ণ পরিকল্পিতভাবে তাঁদের প্রচার-কার্য ভঙ্গ করতে এই হামলা চালানো হয়েছে। 'আক্রান্ত আমরা'র আহ্বায়ক অম্বিকেশ মহাপাত্র বলেন, 'পুলিশ প্রশাসনের যোগসাজোশে হামলা চালানো হয়েছে। পুলিশ প্রশাসনকে আগাম জানানো সত্ত্বেও কোনও ব্যবস্থা নেয়নি। এমনকী বৃহস্পতিবার তাঁদের সভাও বানচাল করার পরিকল্পনা করা হচ্ছে প্রশাসনের মদতে।
অম্বিকেশবাবু বলেন, 'আমরা ইতিমধ্যেই থানায় অভিযোগ জানিয়েছি। কিন্তু আমাদের আশঙ্কা, অভিযোগ জানানো সত্ত্বেও কোনও ব্যবস্থা নেওয়া হবে না। ইতিমধ্যেই যারা আমাদের উপর হামলা করেছে, তারাই পাল্টা অভিযোগ জানিয়েছে আমাদের বিরুদ্ধে। হামলাকারীরাই আমাদের কর্মী মইদুল ইসলাম ও অলোক প্রামাণিকের বিরুদ্ধে অভিযোগ জানিয়েছে থানায়।
আমাদের কর্মীদের বিরুদ্ধে অভিযোগ মাইক প্রচারের নামে মুখ্যমন্ত্রীর নামে কুৎসা করার। এসবই চক্রান্ত বলে জানান অম্বিকেশ মহাপাত্র। তিনি বলেন, 'আক্রান্ত আমরা'র পক্ষ থেকে অবস্থান বিক্ষোভ হবে। 'আক্রান্ত আমরা' কিছুতেই পিছু হটবে না। তিনি জানান, বিক্ষোভ অবস্থানে উপস্থিতি থাকবেন প্রাক্তন মেয়র আইনজীবী বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্য, কবি মন্দাক্রান্ত সেন, ফুরফুরা শরিফের পির ইব্রাহিম সিদ্দিকি প্রমুখ। থাকবেন ভাঙড়ের গ্রামবাসীরা, থাকবেন নিহত রিয়াজুল মোল্লা ও হাসান লস্করের পরিবারের লোকজনও। রিয়াজুলের বাবাও থাকতে পারেন বিক্ষোভ অবস্থানে।
অম্বিকেশবাবু এদিন বলেন, 'ক্যানিং-এ আমাদের বিক্ষোভ অবস্থানের জন্য বারুইপুর জেলা পুলিশ সুপার অরিজিৎ সিনহাকে ইমেল পাঠিয়ে আবেদন করেছিলাম। এমনও জানিয়েছিলাম যে, আমরা ১৩ ও ১৪ তারিখ বিক্ষোভ অবস্থানের জন্য মাইক প্রচার করব। এখন আমাদের সেই আবেদনকে খারিকজ করে নিয়ে নিয়ম-নীতির বড়াই করছে প্রশাসন।
তাঁর অভিযোগ, ১৮ জানুয়ারি ছাত্র খুনের ঘটনা ঘটছে। এক মাস হতে চলল, এখনও একজনও গ্রেফতার হল না। তার বেলায় কোনও নিয়ম-নীতি নেই। আর আমরা বিক্ষোভ অবস্থান করব, প্রশাসনের নিষ্ক্রিয়তার বিরুদ্ধে সরব বলেই আমাদের বেলায় নিয়ম-নীতির বড়াই। এখন প্রশাসন বলছে, 'আপনারা অনুমতি নেননি, আবেদন করেননি।' প্রসিডিওর মতো অনুমতি নেওয়া হয়নি বলে প্রশাসনের দাবি। অম্বিকেশবাবুর কথায়, ৯ ফেব্রুয়ারি অফিসিয়াল লেটার হেডে চিঠি লিখে ইমেল অ্যাটাচ করে আমরা পাঠিয়েছি। এর মাঝে কোনও যোগাযোগ করেনি প্রশাসন। আমাদের জানানো হয়নি প্রসিডিওর মেন্টেন করে আবেদন করার কথা। আজ হামলার পরে যোগাযোগ করতে পুলিশ-প্রশাসন বলছে, ইমেলে লেটার পাঠিয়ে হয় না। সভার অনুমতি নিতে গেলে একটা প্রসিডিওর মেনে তা করতে হয়।'
অম্বিকেশবাবু বলেন, আসলে এসব হচ্ছে 'আক্রান্ত আমরা'র বৃহস্পিতবারের সভা বানচাল করার জন্য। প্রশাসনের পক্ষ থেকে প্রচ্ছন্নভাবে এসব করা হচ্ছে। তবু আমরা পিছপা হব না। আমরা আমাদের কর্মসূচি পালন করব। ক্যানিংয়ে বৃহস্পতিবার বিক্ষোভ অবস্থান হবে 'আক্রান্ত আমরা'র পক্ষ থেকে। কোনও শক্তিই আমাদের আটকাতে পারবে না।'
উল্লেখ্য, তৃণমূল কংগ্রেসের দুই গোষ্ঠীর প্রকাশ্যে গুলির লড়াইয়ের মাঝখানে পড়ে মৃত্যু হয় স্কুল ছাত্র রিজাউল মোল্লা এবং হাসান আলি লস্করের। চতুর্থ শ্রেণির ছাত্র রিজাউল ঘটনার সময় মা-এর সঙ্গে স্কুল থেকে বাড়ি ফিরছিল। আলমগীর নামে আরও এক ছাত্রের পায়ে গুলি লাগে। এই গুলি চালনার ঘটনায় অভিযুক্ত খোদ রিজাউলের স্কুলের প্রধান শিক্ষক তপু মাহাতো। তিনি আবার চড়বিদ্যা গ্রাম পঞ্চায়েতের তৃণমূল প্রধানের ছেলে। এই ঘটনার প্রতিবাদেই বিক্ষোভ অবস্থানের ডাক দেয় 'আক্রান্ত আমরা'।