ভোটের আগে গারদে ভরতে হবে ২৭ হাজার পলাতক অভিযুক্তকে, কমিশনের চাপে ঘুম ছুটেছে রাজ্য পুলিশের
সারা রাজ্য মিলিয়ে পুলিশের খাতায় 'পলাতক' প্রায় ২৭ হাজার অভিযুক্ত। এই সংখ্যাটাই লোকসভা ভোটের মুখে বড় মাথাব্যথার কারণ নির্বাচন কমিশনের।
সারা রাজ্য মিলিয়ে পুলিশের খাতায় 'পলাতক' হিসাবে নাম রয়েছে প্রায় ২৭ হাজার অভিযুক্তর। এই সংখ্যাটাই লোকসভা ভোটের মুখে বড় মাথাব্যথার কারণ নির্বাচন কমিশনের। গত ১০ মার্চ ভোটের নির্ঘণ্ট ঘোষণার পর থেকেই জামিন অযোগ্য ধারায় অভিযুক্ত 'পলাতক'দের ধরপাকড় করে জেলে পুরতে শুরু করেছে রাজ্য প্রশাসন।
যদিও
কমিশনের
কথায়,
রাজ্য
পুলিশের
ধরপাকড়ের
গতি
খুব
একটা
সন্তোষজনক
নয়৷
আর
তাতেই
বেশ
অসন্তুষ্ট
নির্বাচন
কমিশন।
কমিশনের
ধারণা,
এই
বিপুল
সংখ্যক
অভিযুক্তর
জামিন
অযোগ্য
গ্রেফতারি
পরোয়ানা
থাকায়
এদের
গ্রেফতার
করতে
না
পারলে
রাজ্যে
অবাধ
এবং
শান্তিপূর্ণ
নির্বাচন
করানো
সম্ভব
নয়
বলেই
মনে
করা
হচ্ছে।
কমিশনের ধারণা, এই জামিন অযোগ্য গ্রেফতারি পরোনায়া থাকা পলাতকদের একাংশকে কাজে লাগিয়েই ভোটে অশান্তি পাকানোর চেষ্টা হতে পারে। তাই কমিশনের নির্দেশ, ভোট শুরুর আগেই জামিন অযোগ্য গ্রেফতারি পরোয়ানা মাথায় নিয়ে থাকা অভিযুক্তদের অবিলম্বে গ্রেফতার করতে হবে।
ফলে
কমিশনের
প্রবল
চাপে
রাজ্য
পুলিশ
বিভিন্ন
এলাকা
থেকে
পলাতকদের
গ্রেফতারি
অভিযান
শুরু
হয়েছে।
তবে,
পলাতকদের
মধ্যে
কতজনকে
পুলিশ
গ্রেফতার
করতে
পারবে,
তা
নিয়ে
সংশয়
রয়েছে
কমিশনের
কর্তাদের।
অতীতের
লোকসভা
ও
বিধানসভা
ভোট
থেকে
শিক্ষা
নিয়ে
ভারতের
নির্বাচন
কমিশনের
মনে
হয়েছে,
দেশজুড়ে
অবাধ
এবং
শান্তিপূর্ণ
ভোট
করানোর
জন্য
পুলিশের
খাতায়
পলাতক
অভিযুক্তরা
বড়সড়
অন্তরায়।
অনেক ক্ষেত্রে শাসক এবং অন্য রাজনৈতিক দলগুলি পলাতক অভিযুক্তদের মাঠে নামিয়ে ভোট মেশিনারি হিসেবে ব্যবহার করে। ভোটে অশান্তি পাকানোর জন্য পলাতকদের একাংশকে কাজে লাগানো নয়। ফলে আগেই ভারতের নির্বাচন কমিশন ঠিক করেছিল, ভোটের সময় পুলিশের খাতায় পলাতক সমস্ত অভিযুক্তকে গারদে ভরা হবে। পাশাপাশি, ছয়মাসের বেশি সময় ধরে পুলিশের খাতায় পলাতকদের নামও ভোট তালিকা থেকে বাতিল করা হবে৷ সেই লক্ষ্যেই প্রতিটি ভোটের সময় জামিন অযোগ্য গ্রেফতারি পরোয়ানা থাকা অভিযুক্তদের গ্রেফতার করে গারদে ভরা হয়।
এবারের লোকসভা ভোটকে অবাধ এবং শান্তিপূর্ণ করার লক্ষ্যে রাজ্য পুলিশের কাজ থেকে ইতিমধ্যেই জামিন অযোগ্য গ্রেফতারি পরোয়ানার তালিকা নিয়েছে নির্বাচন কমিশন।
সেই তালিকা অনুযায়ী, চলতি বছরের ১৫ মার্চ পর্যন্ত রাজ্যের বিভিন্ন থানা এলাকায় জামিন অযোগ্য গ্রেফতারি পরোয়ানা থাকা পলাতক অভিযুক্তের সংখ্যা ২৬, ৮৩৮ জন। তার মধ্যে লাল তালিকাভুক্ত পলাতক অভিযুক্তের সংখ্যা ২১,২৮৯ জন এবং কালো তালিকাভুক্ত পলাতক অভিযুক্তের সংখ্যা ৫,৫৪৯ জন।
নির্বাচন কমিশন সুত্রে পাওয়া তথ্য থেকে জানা গিয়েছে, জামিন অযোগ্য গ্রেফতারি পরোয়ানা থাকা অভিযুক্তের সংখ্যার বিচারে সব থেকে শীর্ষে রয়েছে মালদহ পুলিশ। এই জেলায় পুলিশের খাতায় পলাতক অভিযুক্তের সংখ্যা ২৬২৩ জন। এর পরে প্রথম পাঁচে রয়েছে পূর্ব মেদিনীপুর পুলিশ জেলা (২৪৫৫জন), হাও়ড়া থানা (২১৪৭জন), উত্তর দিনাজপুর পুলিশ জেলা (১৯৫৮), হাওড়া গ্রামীণ পুলিশ জেলা (১৬৩৩) এবং বারুইপুর পুলিশ জেলা (১০৮৪)।
[আরও পড়ুন: ২৭টি আসনে প্রার্থীদের নাম চূড়ান্ত করে ফেলল বিজেপি! জানুন কে কোথায় লড়তে পারেন]
কমিশনের নির্দেশে জামিন অযোগ্য গ্রেফতারি পরোয়ানা থাকা পলাতকদের গ্রেফতার করার ব্যাপারে একেবারে হাত গুটিয়ে বসে নেই রাজ্য পুলিশ। পরিসংখ্যান বলছে, চলতি বছরের ১৫ মার্চ পর্যন্ত রাজ্যের বিভিন্ন থানা এলাকা থেকে পুলিশ ৬৮৯৯ জনকে গ্রেফতার করে আদালতে হাজির করেছে।তবে অভিযুক্তদের গ্রেফতারির হার খুব একটা সন্তোষজনক নয়। রাজ্য পুলিশকে আরও তৎপর হতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।