কলা বউয়ের ‘বস্ত্রহরণ’! মহানবমীর সকালে আজব ঘটনার সাক্ষী হুগলির পুজো মণ্ডপ
এ ঘটনা পাগলের কাণ্ড হলে সে ঘট উল্টে দিতে পারত, কলা বউয়ের কাপড় খুলে নিতে পারত। কিন্তু পরিপাটি করে সমস্ত কাপড়-আলতা-সিঁদুর নিয়ে পালাত না।
এই ঘটনাকে কী-বা বলা যায়! কলা বউয়ের বস্ত্রহরণ! নাকি কোনও পাগলের কাণ্ডকারখানা! পুকুর চুরি দেখেছেন, কিন্তু এমন শাড়ি চুরির কথা কি কখনও শুনেছেন! মহানবমীর সকাল সেই সাক্ষী হয়ে রইল হুগলির ব্যান্ডেলের সাহেববাগানে। সকালে উঠেই এলাকার মানুষ দেখেন, দুর্গামণ্ডপে কলা বউয়ের গায়ে কোনও কাপড় নেই। নেই মণ্ডপে পুজোয় পড়া কোনও শাড়িই।
এ কি কাণ্ড! হইহই পড়ে যায় তৎক্ষণাৎ। কোথায় গেল কলা বউয়ের কাপড়। মণ্ডপে মায়ের পা থেকে শাড়িগুলিই বা কোথায়? কোনও কিছুই বুঝে উঠতে পারেননি উদ্যোক্তারা। সকলের অজান্তেই খোয়া গিয়েছে মণ্ডপের যাবতীয় বস্ত্র। সাহেববাগানের মানসপুর দুর্গাপুজো কমিটির এই মণ্ডপ থেকে মোট ৫১টি শাড়ি চুরি গিয়েছে বলে অভিযোগ।
৫৩ বছর ধরে এই পুজো চলছে, কোনওদিনও এমন ঘটনা ঘটেনি- মায়ের বস্ত্র চুরি হয়ে যাচ্ছে। এ কী দিন এল! আক্ষেপ করছিলেন উদ্যোক্তারা। এলাকার সাধারণ মানুষও হতবাক। খবর দেওয়া হয় স্থানীয় থানায়। পুলিশ আসে। তদন্ত শুরু হয়। এই ঘটনায় একজন মানসিক বিকারগ্রস্ত যুবক তারক মোদককে গ্রেফতার করা হয়েছে। তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করছে পুলিশ। একাংশের অভিযোগ ওই মানসিক বিকারগ্রস্তেরই কাজ এটা।
তাহলে বস্ত্রগুলি গেল কোথায়? পাগলের কাণ্ড হলে সে ঘট উল্টে দিতে পারত, কলা বউয়ের কাপড় খুলে নিতে পারত। কিন্তু পরিপাটি করে সমস্ত কাপড়-আলতা-সিঁদুর নিয়ে পালাত না। যদি নিয়েও যায় একটা-আধটা রাস্তায় পড়ে যেতেও পারত! তা কিন্তু হয়নি। তাই এই ঘটনা পরিকল্পিতভাবেই ঘটানো হয়েছে বলে অভিযোগ।
খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে যান বিধায়ক অসিত মজুমদার। তিনি বলেন, যারা এই ঘটনা ঘটিয়েছে, তাদের উপযুক্ত শাস্তি হওয়া উচিত। অবিলম্বে জড়িত ব্যক্তিদের গ্রেফতার ও শাস্তির ব্যবস্থা করবেন বলে তিনি প্রতিশ্রুতি দেন। শুধু শাড়ি নয়, আলতা, সিঁদুরও চুরি গিয়েছে মণ্ডপ থেকে। একটা বস্তায় ভরা আলতা-সিঁদুর উদ্ধার করা হয়েছে স্থানীয় একজায়গা থেকে। তদন্ত চলছে।