
স্বাস্থ্যসাথী কার্ড নিয়ে মমতার সরকারের নতুন নির্দেশিকায় বিতর্ক, প্রশ্ন তুলে চিঠি চিকিৎসক সংগঠনের
স্বাস্থ্যসাথীর কার্ড (swasthasathi card) নিয়ে নতুন করে বিতর্ক। এই বিতর্কের পিছনে রয়েছে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (mamata banerjee) তৃতীয়বার ক্ষমতার আসার পরেই হেলথ ডিরেক্টরেটের (health directorate) একটি নির্দেশিকা। সেখানে বলা হয়েছে, এবার থেকে সরকারি হাসপাতালে বেশি খরচের চিকিৎসায় লাগবে স্বাস্থ্যসাথীর কার্ড। সরকারি হাসপাতালে তো বিনা পয়সায় চিকিৎসা করার কথা, কিন্তু সেখানে কেন স্বাস্থ্যসাথীর কার্ড ব্যবহার করা হবে, প্রশ্ন তুলে স্বাস্থ্য দফতরের (health department) প্রধান সচিবকে চিঠি দিয়েছে সরকারি চিকিৎসকদের সংগঠন অ্যাসোসিয়েশন অফ হেলথ সার্ভিস ডক্টর্স (AHSD)।

ভোটে বড় প্রতিশ্রুতি ছিল স্বাস্থ্যসাথী কার্ড
এবারের বিধানসভা নির্বাচনে তৃণমূলের প্রচারের অন্যতম বিষয় ছিল স্বাস্থ্যসাথী কার্ড। কেননা বিপক্ষে ছিল বিজেপির আয়ুষ্মাণ ভারত। প্রতিশ্রুতিতে বলা হয়েছিল সব মানুষকে এবার স্বাস্থ্যসাথী প্রকল্পের আওতায় আনা হবে। বিনা খরচে পাবেন সরকারি স্বাস্থ্য বিমার সুবিধা পাবেন বেসরকারি হাসপাতালে। পরিবারের সব সদস্যের জন্য বছরে পাঁচ লক্ষ টাকা পর্যন্ত সুবিধা। কোনও বিমা সংস্থা নয়, সরকারই এই প্রক্রিয়া নিয়ন্ত্রণ করবে বলে জানিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। ডিসেম্বরে দুয়ারে সরকার প্রকল্পে সব থেকে বেশি লোক হাজির হয়েছিলেন স্বাস্থ্যসাথী প্রকল্পের কার্ড করাতে। যদিও এখনও সবাই এই কার্ড এখনও পেয়ে ওঠেননি।

জুনের শুরুতেই নতুন নির্দেশিকা
জুন মাসের শুরুতেই রাজ্যের হেলথ ডিরেক্টরেটের তরফ থেকে নির্দেশ দিয়ে বলা হয়েছে, সরকারি হাসপাতালে বেশি খরচের চিকিৎসাতেও এবার থেকে লাগবে স্বাস্থ্যসাথীর কার্ড। তবে বেশি খরচের ব্যাখ্যা দেওয়া হয়নি। কোনও একটি নির্দিষ্ট রোগের ক্ষেত্রে এক-এক রোগীর রোগ নিরাময় করতে একেক রকম খরচ হয়ে থাকে। সেই পরিস্থিতিতে সরকারের এই নির্দেশিকা নিয়েই প্রশ্ন উঠেছে। তবে নির্দেশিকায় বলা হয়েছে, এই প্রর্পিয়া মেডিক্যাল কলেজ এবং হাসপাতালগুলির টাকার চাহিদা মেটানো যাবে।

কেন সরকারি হাসপাতালে স্বাস্থ্যসাথীর কার্ড
সরকারি চিকিৎসকদের সংগঠন অ্যাসোসিয়েশন অফ হেলথ সার্ভিস ডক্টর্সের তরফ থেকে প্রশ্ন তুলে বলা হয়েছে, যেখানে সরকারি হাসপাতাল গুলিতে পুরো বিনা পয়সায় চিকিৎসা হওয়ার কথা, সেখানে কেন স্বাস্থ্যসাথীর কার্ডে সুবিধা পাওয়ার করা বলা হচ্ছে। চারজনের একটি পরিবারের কোনও সদস্য যদি পাঁচ লক্ষ টাকার কার্ড নিয়ে সরকারি হাসপাতালেই বিমা মূল্যের বড় অংশ খরচ করে ফেলেন, তাহলে সারাবছরের অন্য সময় যদি প্রয়োজন পরে তাহলে সরকারের প্রতিশ্রুতি মতো তো তিনি বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসা করাতে পারবেন না। সেক্ষেত্রে তাঁকে চিকিৎসা পেতে জমানো টাকা খরচ করতে হবে। তাহলে কি সরকার পরোক্ষে বলে দিচ্ছে সরকারি হাসপাতালেও চিকিৎসা পেতে গেলে টাকা লাগবে, সে প্রশ্নও তোলা হয়েছে, স্বাস্থ্য দফতরের প্রধান সচিবকে দেওয়া চিঠিতে। এছাড়াও স্মরণ করিয়ে দেওয়া হয়েছে, স্বাস্থ্যসাথী প্রকল্প ঘোষণার সময়ও বলা হয়নি যে সরকারি হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য এই প্রকল্প ব্যবহার করা হবে।

বিমা কোম্পানিকে যুক্ত করার অভিযোগ
স্বাস্থ্যসাথী প্রকল্প ঘোষণার সময় বলা হয়েছিল কিংবা সর্বত্র প্রচার করা হয়েছিল, কোনও বিমা কোম্পানির সাহায্য ছাড়াই সরকার পুরো বিষয়টি পরিচালনা করবে। কিন্তু সরকারি চিকিৎসকদের সংগঠন অ্যাসোসিয়েশন অফ হেলথ সার্ভিস ডক্টর্সের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, নতুন সরকারি ঘোষণায় স্বাস্থ্য দফতর বিমা কোম্পানিকে যুক্ত করার কথা জানিয়েছে। এক্ষেত্রে কোন কোম্পানিকে নিয়োগ করা হচ্ছে তা বলা হয়নি। আর বিমা কোম্পানিকে নিয়োগ করতে আগ্রহী সংস্থার থেকে কোনও দরপত্রও নেওয়া হয়নি। এক্ষেত্রে তদন্তের দাবি করে, সরকার প্রতিশ্রুতি থেকে যেন কোনওভাবেই সরে যা যায়, তার দাবিও তোলা হয়েছে।
ঘুরে বেড়িয়েছেন ক্ষমতার অলিন্দে, প্রভাবশালীদের সঙ্গে থেকে দেবাঞ্জন সাজিয়েছেন প্রতারণার ছক