west bengal assembly election 2021 election assembly election west bengal bangla news পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভা নির্বাচন ২০২১
কে এই বিবেক দুবে যিনি ফের বাংলায় 'শান্তিপূর্ণ' ভোট করানোর দায়িত্ব পেলেন?
বাংলায় সুষ্ঠ এবং অবাধ ভোট করানোটা বড় চ্যালেঞ্জ নির্বাচন কমিশনের কাছে। আর সেই কারনে এবার প্রথম দিন থেকেই কড়া কমিশন। ভোটের আগেই বাহিনী এসেছে বাংলা। শুরু হয়েছে এরিয়া ডোমিনেশনের কাজ।
অন্যদিকে, দুজন পুলিশ পর্যবেক্ষক নিয়োগ করল নির্বাচন কমিশন। মুখ্য নির্বাচন কমিশনার সুনীল অরোরা ভোট ঘোষণার সময় জানিয়েছেন, পশ্চিমবঙ্গের ভোটে থাকছেন দুজন আইপিএস পর্যবেক্ষক। প্রথম জন বিবেক দুবে। যিনি কিনা অন্ধ্রপ্রদেশ ক্যাডারের ১৯৮১ ব্যাচের আইপিএস অফিসার।
গত লোকসভা ভোটে বাংলাতেই পুলিশ পর্যবেক্ষক হিসাবে কাজ করেছেন। ফলে বাংলাতে কাজ করার অভিজ্ঞতা রয়েছে তাঁর। সেই কারনে বিবেক দুবের উপরেই ভরসা রাখছে কমিশন। এর সঙ্গে রয়েছেন মৃনাল কান্তি দাস। তিনি মনিপুর ক্যাডারের ১৯৭৭ ব্যাচের আইপিএস অফিসার ছিলেন। তাকেও পর্যবেক্ষক হিসাবে বাংলায় বিশেষ দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।

বাংলায় পুলিশ পর্যবেক্ষক হিসেবে দায়িত্বে ছিলেন তিনি
গত ২০১৯ সালে লোকসভা নির্বাচনে বাংলায় পুলিশ পর্যবেক্ষক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছিলেন বিবেক দুবে। নির্বাচন কমিশনের জানিয়েছে ১৯৮১ সালে অন্ধ্র প্রদেশ ক্যাডারের আইপিএস বিবেক কুমার। রাজ্য পুলিশের পাশাপাশি কেন্দ্রীয় সরকারের গুরুদায়িত্ব সামলেছেন তিনি। জঙ্গি দমন থেকে শুরু করে একাধিক ক্ষেত্রে এই আইপিএসের নজির রয়েছে। এমনকি নকশালের বিরুদ্ধে লড়াইয়েও বিবেক দুবের নাম রয়েছে। ২০১৯ সালে লোকসভা নির্বাচনের সময় রাজ্যের দায়িত্ব প্রাপ্ত পুলিশ পর্যবেক্ষক কেকে শর্মাকে সরিয়ে নিয়ে আসা হয়েছিল বিবেক দুবেকে। কিন্তু তাঁর কাজ নিয়ে উঠেছিল প্রশ্ন। অবাধ-সন্ত্রাস নিয়ে বিরোধীদের কোনও কিছুই নাকি শোনেননি তিনি। এমনটাই অভিযোগ উঠেছিল তাঁকে নিয়ে। শাসকদলেরও পালটা ছিল। কিন্তু সেই তাঁকে বাংলায় ফের পাঠাচ্ছে কমিশন।

বিলকিস বানো কাণ্ডের তদন্তে ছিলেন বিবেক!
বিবেক দুবে কর্মজীবনে একাধিক গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব সামলেছেন৷ দীর্ঘদিন সিবিআইতে ছিলেন তিনি। আর সেই পদে থাকার সময় গুজরাতের বিতর্কিত বিলকিস বানো কাণ্ডের তদন্তে যুক্ত ছিলেন বিবেক৷ বিবেকের নেতৃত্বে সিবিআই তদন্তে ১১ অভিযুক্তকে দোষী সাব্যস্ত করা হয়। রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের মতে, গুজরাতে তৎকালীন মুখ্যমন্ত্রী মোদী-শাহের গড়েই নিরপেক্ষ তদন্তের নেতৃত্ব দিয়েছিলেন বিবেক দুবে। তাঁর টিমের পেশ করা চার্জশিটে গুজরাত প্রশাসনের দিকেই আঙুল উঠেছিল। আঙুল উঠেছিল গুজরাতের সেসময়ের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের দিকেও। পেশাগত জীবনে অবশ্য এই অফিসার একাধিকবার স্বীকার করে জানিয়েছন যে, বিলকিস বানো মামলার তদন্তে বাজপেয়ী নেতৃত্বাধীন এনডিএ সরকার সবসময় পূর্ণ সমর্থন দিয়েছে। আর তা দেওয়ার জন্যেই নাকি তিনি তাঁর কাজে সফল।

জঙ্গি-নকশাল দমনেও অভিজ্ঞতা রয়েছে
অন্যদিকে সিআরপিএফেও দীর্ঘদিন কর্মরত ছিলেন এই অফিসার। আর সিআরপিএফে থাকার সময়েও তিনি তাঁর অবদান রেখেছেন তিনি। বিশেষ করে জঙ্গি দমনে তাঁর নজির রয়েছে। পাশাপাশি নকশালদের সঙ্গেও লড়াইয়ের অভিজ্ঞতা রয়েছে এই অফিসারের। অন্ধ্রপ্রদেশে নকশালের মোকাবিলায় একেবারে ফ্রন্টে ছিলেন বিবেক দুবে।

আবু সালেমের প্রত্যর্পণেও নাকি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা ছিল এই অফিসারের
সিবিআইয়ের জয়েন্ট ডিরেক্টর হিসেবে আবু সালেমের প্রত্যর্পণেও নাকি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নিয়েছিলেন এই দুঁদে আইপিএস। ৯৩-এর মুম্বই বিস্ফোরণ ছাড়াও সঙ্গীত শিল্পী ও প্রযোজক গুলশন কুমারকে হত্যার অভিযোগ রয়েছে দাউদ ইব্রাহিমের এক সময়ের সঙ্গী আবু সালেমের বিরুদ্ধে। দীর্ঘ কয়েক বছর ধরে আইনি প্রক্রিয়া চালানোর পর ২০০৫-এ আন্ডারওয়ার্ল্ড ডন আবু সালেমকে পর্তুগাল থেকে ভারতে প্রত্যর্পণ করায় তত্কালীন এনডিএ সরকার। সেই সময় নাকি পুরো বিষয়ে ঘুঁটি সাজিয়ে ছিলেন নাকি এই বিবেক দুবেই। কর্মজীবন জুড়ে একাধিক নজির রাখার পর ২০১৫-য় অন্ধ্রের এডিজি (ওয়েলফেয়ার) হিসেবে অবসর নেন এই বিবেক দুবে। আর তাঁকেই ফের একবার পশ্চিমবঙ্গের পর্যবেক্ষক হিসাবে নিয়গ করল কমিশন।