ভোটের মুখে নয়া সমীকরণ! অধীরের জন্যে বিজেপির দরজা কেন খুললেন দিলীপ
জোট নিয়ে কার্যত ল্যাজে গোবরে কংগ্রেস। ঘরে-বাইরে রীতিমত অস্বস্তিতে অধীর চৌধুরী। আব্বাসের সঙ্গে ব্রিগেডের মঞ্চ ভাগাভাগি করা নিয়েও দিল্লির তোপের মুখে প্রদেশ সভাপতি।
জোট নিয়ে কার্যত ল্যাজে গোবরে কংগ্রেস। ঘরে-বাইরে রীতিমত অস্বস্তিতে অধীর চৌধুরী। আব্বাসের সঙ্গে ব্রিগেডের মঞ্চ ভাগাভাগি করা নিয়েও দিল্লির তোপের মুখে প্রদেশ সভাপতি।
পশ্চিমবঙ্গের নির্বাচনী আবহে বাম-কংগ্রেস জোট নিয়ে সোমবার টুইট করেন কংগ্রেসের রাজ্যসভার সাংসদ আনন্দ শর্মা। আনন্দ শর্মার সেই টুইট ঘিরে ক্ষোভ ছড়িয়েছে প্রদেশ কংগ্রেসে। আর এই অবস্থায় অধীর চৌধুরীকে নিজেদের দলে টানলেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ। বললেনম, রাস্তা খোলা রয়েছে!
বেশিদিন কংগ্রেসে থাকতে পারবেন অধীর
জোট সহ একাধিক ইস্যুতে চাপে প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি। বারবার সংবাদমাধ্যমের কাছে মেজাজ হারাচ্ছেন। স্পষ্ট অধীর চৌধুরীর মানসিক চাপ। আর এই অবস্থায় প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতিকে বিজেপিতে যোগ দেওয়ার আহ্বান দিলীপ ঘোষের। এক সংবাদমাধ্যমে দেওয়া সাক্ষাৎকারে দিলীপ ঘোষ জানিয়েছেন, ''অধীরবাবুকে নিয়ে চিন্তার কারণ আছে, অধীরবাবু নিজেও চিন্তায় আছেন। উনি কত দিন কংগ্রেসে থাকবেন জানা নেই। তাই পশ্চিমবঙ্গের জন্য যদি কাজ করতে চান, তাহলে দেখুন কংগ্রেসে থাকবেন নাকি অন্য কোনও রাস্তায় যাবেন।'' বিজেপিতে আসার জন্য দরজা খোলা আছে কিনা সেই বিষয়ে জিজ্ঞাসা করা হলে দিলীপ ঘোষ বলেন, ''সবার জন্যই আমাদের দরজা খোলা।'' রাজনৈতিকভাবে দিলীপ ঘোষের বার্তা যথেষ্ট তাৎপর্যপূর্ণ বলেই মনে করা হচ্ছে।
গান্ধী-নেহরুর আদর্শের পরিপন্থী।
প্রসঙ্গত, সোমবার এক টুইট বার্তায় আনন্দ শর্মা কিছুটা বেসুরো হয়ে বাম-কংগ্রেস জোটের বিপক্ষে বার্তা দিয়েছেন। এমনকি আব্বাসের সঙ্গে মঞ্চ ভাগাভাগি করা নিয়েও আনন্দ শর্মার রোষানলে পড়েছেন অধীর। তাঁর দাবি, আইএসএফের বা এই ধরনের দলের সঙ্গে জোট গান্ধী-নেহরুর আদর্শের পরিপন্থী। ব্রিগেডের মঞ্চে অধীর চৌধুরীর উপস্থিতিও ভালো চোখে দেখেননি তিনি। তিনি লিখেছেন, পশ্চিমবঙ্গের কংগ্রেস সভাপতির উপস্থিতি লজ্জাজনক। ওনাকে এর ব্যাখ্যা দিতে হবে। যা দেখে প্রবল ক্ষোভ অধীর চৌধুরীর। প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরী জানান, 'আনন্দ শর্মার বলা উচিৎ ছিল, স্বৈরতান্ত্রিক তৃণমূল এবং সাম্প্রদায়িক বিজেপির বিরুদ্ধে। দিল্লিতে বসে এই রাজ্য সম্পর্কে কিছু জানেন না আনন্দ শর্মা। উনি রাজ্যসভার টিকিটের জন্য এই সব কথা বলছেন।'
কংগ্রেসে কোন্দল!
ইতিমধ্যে বিধানসভা ভোট ঘোষণা হয়ে গিয়েছে। কিন্তু এখনও পর্যন্ত বামেদের সঙ্গে জোট সমঝোতা সম্পূর্ণ নয়। যদিও অধীর জানিয়েছেন, ৯০ টি আসন সংরক্ষণ করা গিয়েছে। এর মধ্যে আবার আব্বাসকে কিছু আসন ছাড়তে হচ্ছে বলে কংগ্রেসের মধ্যেই কোন্দল তৈরি হয়েছে। আব্বাসের সঙ্গে জোট চাইছেন প্রদেশ কংগ্রেসের একাংশ। ক্ষোভ এমনটাই তৈরি হয়েছে যে কোনও বৈঠকেই থাকছেন না এক নেতা। ভোটে দাঁড়াবেন কিনা তিনি তা নিয়েও তৈরি হয়েছে সন্দেহ। আর এই অবস্থাকে কাজে লাগানোর চেষ্টা করলেন দিলীপ ঘোষ। সরাসরি অধীরকে বিজেপিতে যোগদানের প্রস্তাব বিজেপির রাজ্য সভাপতির। যদিও তা কখনও সম্ভব নয়।
আটটি আসন ছাড়ল কংগ্রেস
কংগ্রেসের সঙ্গে আসন রফা নিয়ে কিছুটা সমস্যা মিটল৷ দক্ষিণবঙ্গে আইএসএফ-কে পাঁচটি আসন ছাড়তে রাজি ছিল কংগ্রেস৷ এ দিন আরও তিনটি আসন ছাড়তে রাজি হয় তারা৷ ফলে দক্ষিণবঙ্গে সবমিলিয়ে আইএসএফ-কে আটটি আসন ছাড়ল কংগ্রেস৷ আরও দু'টি আসন ছাড়া হবে কি না, তা নিয়ে আলোচনা চলছে৷ অন্যদিকে উত্তরবঙ্গে আইএসএফ-কে মোট ছ'টি আসন ছাড়তে পারে কংগ্রেস৷ তা নিয়েও আলোচনা অনেক দূর এগিয়ে গিয়েছে৷ এ দিন রাতের মধ্যেই উত্তরবঙ্গ নিয়েও চূড়ান্ত সিদ্ধান্তে পৌঁছে যেতে পারে দুই দল৷