একের পর এক কেন্দ্রে প্রার্থী বদল করল তৃণমূল! হঠাৎ সিদ্ধান্ত ঘিরে জল্পনা তুঙ্গে
আর মাত্র কয়েকদিন বাকি ভোট গ্রহণের। সবার আগে প্রার্থী তালিকা প্রকাশ করে কার্যত চমক দিয়েছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। প্রচারও শুরু হয়ে গিয়েছে। হঠাত করে তিন কেন্দ্রের প্রার্থী বদল করা হল। কেন তা নিয়ে শুরু হয়েছে জোর জল্পনা
ভোটের তারিখ ঘোষণা হয়ে গিয়েছে। আর ভোটের তারিখ ঘোষণা হতেই সবার আগে প্রার্থী তালিকা প্রকাশ করে কার্যত ফাস্ট বয় তৃণমূল কংগ্রেস। আর প্রার্থী তালিকা ঘোষণা হতেই বিভিন্ন জায়গায় ক্ষোভ-বিক্ষোভ শুরু হয়।
বহিরাগত নয়, ভূমিপুত্রের দাবিতে বিভিন্ন জায়গায় শুরু হয় ক্ষোভ। তা সামাল দেওয়া গেলেও প্রার্থী নিয়ে যে এখনও অসন্তোষ রয়েছে স্থানীয় নেতা-কর্মীদের মধ্যে! তা স্পষ্ট বুঝতে পারেন তৃণমূল নেতৃত্ব। যা ভোটের ব্যালেটেও প্রভাব পড়তে পারে। আর সেই আশঙ্কাতেই একের পর এক কেন্দ্রের প্রার্থী বদল করলেন তৃণমূল সুপ্রিমো।
চার কেন্দ্রে প্রার্থী বদল করল তৃণমূল
কল্যাণী, অশোকনগর, আমডাঙা এবং দুবরাজপুর এই চার বিধানসভা কেন্দ্রের প্রার্থী বদল করল তৃণমূল। এই চার বিধানসভা কেন্দ্রে প্রার্থী নিয়ে চরমে উঠেছিল অসন্তোষ। এমনকি, খোদ অনুব্রত মন্ডলের দুবরাজপুরের প্রার্থী নিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করেছিলেন। এরপরেই এই চার কেন্দ্রের প্রার্থী বদল করা হল। কল্যাণী বিধানসভা কেন্দ্রে প্রার্থী ছিলেন রমেন্দ্র নাথ বিশ্বাস হলেন অনিরুদ্ধ বিশ্বাস। অশোকনগরে প্রার্থী করা হয়েছিল ধীমান রায়কে। তাঁকে প্রার্থী করা নিয়েও ব্যাপক অসন্তোষ ছড়ায়। এরপরেই নারায়ণ গোস্বামীকে প্রার্থী করা হল। অন্যদিকে, মোস্তাক মুর্তজাকে সরিয়ে আমডাঙাতে প্রার্থী করা হল রফিকুর রহমানকে। এছাড়াও দুবরাজপুরেও প্রার্থী বদল করা হল। সেখানে নতুন প্রার্থী হলেন দেবব্রত বিশ্বাস। আগে প্রার্থী করা হয়েছিল অসীমা ধীবর।
প্রার্থী বদল করা হবে বলে আগেই ইঙ্গিত দিয়েছিলেন খাদ্যমন্ত্রী!
প্রার্থীদের নিয়ে রয়েছে বিক্ষোভ। কিন্তু আদৌ প্রার্থী বদল করা হবে কিনা সেই সিদ্ধান্ত নেবে দল। আমডাঙ্গা ও অশোকনগরে তৃনমূল প্রার্থীদের নিয়ে এমনটাই গত ২৪ ঘন্টা আগে জানিয়েছিলেন রাজ্যের খাদ্যমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক। তৃনমূলের প্রার্থী তালিকা ঘোষণার পরেই উত্তর ২৪ পরগনার একাধিক জায়গায় পাওয়া গিয়েছিল বিক্ষোভের আঁচ। প্রার্থীর নাম ঘোষণার পর বিক্ষোভ চরমে উঠেছিল। আমডাঙ্গা ও অশোকনগর বিধানসভার কেন্দ্রের প্রার্থী নিয়ে অসন্তোষের আঁচ ভাবাচ্ছিল তৃণমূলের শীর্ষ নেতৃত্বকেও। জেলা তৃণমূলের অন্দরে জল্পনা চলছিল, এই দুটি কেন্দ্রে প্রার্থী বদলের বিষয়ে চিন্তাভাবনা চলছে। মধ্যমগ্রাম জেলা তৃণমূলের কার্যালয়ে জেলা সভাপতি জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক বলেন, 'দল চাইলে প্রার্থী বদল হবে। কিন্তু আপাতত প্রচারে নেমেছেন দুজনেই।'
দুবরাজপুরের প্রার্থী নিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করেছিলেন খোদ অনুব্রত
দুবরাজপুরের প্রার্থী নিয়ে একটা হেস্তনেস্ত চেয়ে ছিলেন বীরভূমের বেতাজ বাদশা অনুব্রত মণ্ডল। বিশ্বস্ত সূত্রের খবর ছিল যে প্রার্থী নিয়ে কার্যত দলের শীর্ষ নেতৃত্বের কাছে বিশেষ বার্তাও পাঠিয়ে ছিলেন বীরভূম জেলা তৃণমূলের সভাপতি। দল যাঁকে ওই কেন্দ্রে প্রার্থী করেছে, সেই অসীমা ধীবরকে নিয়ে দুবরাজপুরের নেতা-কর্মীদের মধ্যে বিস্তর ক্ষোভ ছড়িয়েছে। তার জেরেই অনুব্রতের এই পদক্ষেপ বলে মনে করা হয়। দলের স্থানীয় নেতারাও প্রার্থী বদলের দাবিতে অনুব্রতের কাছে দরবার করেন। অনুব্রতও ঘনিষ্ঠ মহলে এই নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছিলেন। এমনকি, প্রার্থী বদল করা না হলে আলাদা প্রার্থী দেওয়ারও হুঁশিয়ারি দিয়েছিলেন অনুব্রত। এরপরেই প্রার্থী বদল!