দিলীপ ছাড়ছেন বিজেপির সভাপতি পদ! উপনির্বাচনে হারের ধাক্কায় জল্পনায় 'অন্য' নাম
২০১৮ সালে দিলীপ ঘোষের মেয়াদ শেষ হওয়ার পর থেকেই জল্পনা চলছিল। আবারও সেই একই জল্পনার অবতারণা উপনির্বাচনে হারের পর।
২০১৮ সালে দিলীপ ঘোষের মেয়াদ শেষ হওয়ার পর থেকেই জল্পনা চলছিল। আবারও সেই একই জল্পনার অবতারণা উপনির্বাচনে হারের পর। দিলীপ ঘোষ ছাড়তে চলেছেন বিজেপি সভাপতির পদ, এই জল্পনা বেড়েছে। একইসঙ্গে জল্পনা চলছে দিলীপ ঘোষের পরিবর্তে বিজেপির রাজ্য সভাপতির পদে আসতে পারেন মোদী তথা আরএসএস ঘনিষ্ঠ সেই নেতাই।
দিলীপের বর্ধিত মেয়াদকাল শেষ হচ্ছে ২০১৯ ডিসেম্বরে
২০১৮-তেই শেষ হয়েছে দিলীপ ঘোষের মেয়াদ। তারপর ২০১৯-এ লোকসভা ভোটের আগে ঝুঁকি নিয়ে দিলীপ ঘোষের পরিবর্ত না খুঁজে তাঁর মেয়াদ এক বছর বৃদ্ধি করা হয়েছে। সেই মেয়াদকাল শেষ হচ্ছে ২০১৯ ডিসেম্বরে। তারপর সম্প্রতি উপনির্বাচনে হার সেই জল্পনাকে আরও ত্বরাণ্বিত করেছে।
প্রথম ভাবনা, দিলীপের হাতেই রাজ্য সভাপতির দায়িত্ব
এই অবস্থায় রাজ্য বিজেপিতে এখন দুটি ভাবনা কাজ করছে। এক, দিলীপ ঘোষের হাতেই রাজ্য সভাপতির দায়িত্ব থাকবে। কারণ, লোকসভায় দিলীপের নেতৃত্বে বিজেপি ভালো ফল করার পর কেন্দ্রীয়য় নেতৃত্বে চাইছিল বঙ্গ বিজেপির শীর্ষপদে পরিবর্তন না করে ২০২১ নির্বাচন লড়তে। তা থেকেই ভাবনা আরও দু-বছর দিলীপ ঘোষকে তাঁর পদে বহাল রাখা।
দ্বিতীয় ভাবনা, দিলীপকে সরিয়ে নতুন মুখ আনা
আর দ্বিতীয় ভাবনাটি হল দিলীপকে সরিয়ে নতুন মুখ আনা। বিশেষ করে এই ভাবা জোরদার হয়েছে সম্প্রতি উপনির্বাচনে হারের পর। দিলীপের ঘোষের খাস তালুকেই এবার হারতে হয়েছে তৃণমূলের কাছে। এই অবস্থায় বিজেপিতে সভাপতি বদলের সুর বেজে গিয়েছে ফের।
পরিবর্তনের আবহে ভাসছে আশিস সরকারের নাম
আর পরিবর্তনের আবহে ভাসছে যে নাম, তিনি হলেন আশিস সরকার। মোদী-অমিত শাহরা নাকি চূড়ান্ত করে রেখেছন এই নাম। রাজ্য বিজেপির সভাপতি পদে দিলীপ ঘোষকে সরিয়ে এই প্রবাসী বাঙালিকে বসাতে চাইছেন তাঁরা। বাংলায় তৈরি হওয়া একাধিক লবিকে ভেঙে মোদী-শাহ চাইছেন এমন একজনকে যিনি রাজ্য বিজেপির সমস্ত লবিকে এক বিন্দুতে আনতে পারেন।
বিজেপিতে অন্তর্দ্বন্দ্বের কথা একেবারে অজানা নয়
মুকুল রায় যোগদানের রাজ্য বিজেপিতে দিলীপের সঙ্গে তাঁর অন্তর্দ্বন্দ্বের কথা রাজনৈতিক মহলে অজানা নয়। আর বিজেপির একটি অংশ রাহুল সিনহার পক্ষে ছড়ি ঘোরায় সবসময়ই। আবার কেউ কেউ চান শমীক ভট্টাচার্যের মতো কাউকে রাজ্য বিজেপির মাথায় বসাতে। এই অবস্থায় বিজেপি রাজ্য সভাপতি পদে সঙ্ঘ ঘনিষ্ঠ কোনও নেতাকে আনাই শ্রেয় বলে মনে করে শীর্ষ নেতৃত্ব।
যিনি বাঙালিও হবেন, আবার সঙ্ঘঘনিষ্ঠও হবেন
মোদী শাহরা মনে করেন, দিলীপ ঘোষকে যদি সরাতেই হয়, তবে এমন একজন নেতা দরকার, যিনি বাঙালিও হবেন, আবার সঙ্ঘঘনিষ্ঠও হবেন অথচ বাংলা নেতৃত্বের সঙ্গে সে অর্থে যোগ থাকবে না অর্থাৎ কোনও লবি থাকবে না। এমন একজনকে মাথায় বসালে সমন্বয় সাধন সহজ হবে বলেই মনে করছে নেতৃত্ব।
আশিস সরকারকে রাজ্যের দায়িত্বে আনার ভাবনা
সেই কারণেই ফের আশিস সরকারকে রাজ্য বিজেপির দায়িত্বে আনার ভাবনা। আর এবারই তো প্রথম নয়, এর আগেও একাধিকবার আশিস সরকারের নাম উঠেছিল বঙ্গ বিজেপির সভাপতি পদে। দিলীপ ঘোষ ২০১৫ সালে যখন সভাপতি হন রাহুল সিনহাকে সরিয়ে, তখনও আশিস সরকারের নাম উঠেছিল। বিশিষ্ট অর্থনীতিবিদ ড. আশিস সরকারের অবশ্য সেবার সভাপতি হওয়া হয়নি।
নতুন করে রাজ্য বিজেপিতে সভাপতি বদলের আবহ
ফের যখন নতুন করে রাজ্য বিজেপিতে সভাপতি বদলের আবহ তৈরি হয়েছে, তখন নতুন করে শুরু হয়েছে আশিস সরকারকে নিয়ে জল্পনা। যদিও আশিস সরকারের ঘনিষ্ঠরা এই সম্ভাবনাকে একেবারেই উড়িয়ে দিয়েছেন। এমন কোনও খবর তাদের কাছে নেই বলে জানিয়ে দিয়েছেন তাঁরা। তবু রাজনৈতিক মহলে কান পাতলেই শোনা যাচ্ছে রাজ্য বিজেপির মাথায় এবার যিনি বসবেন, তাঁদের লড়াইয়ে এগিয়ে আছেন আশিস সরকার।