'আই লাভ ইউ নিখিল, প্রাউড অফ ইউ', আলিপুরদুয়ারের ডিএম-এর স্ত্রী-র ফেসবুক পোস্ট ফেলল তোলপাড়
চাঁদা করে উত্তম-মধ্যম দেওয়া। যাকে বলে রাম ধোলাই। কেন? জেলাশাসকের স্ত্রী-কে নিয়ে নোংরা কথা বললে তো শাস্তি পেতেই হবে। এটা সমস্ত লোকজন জানে না, আর ফালাকাটার বিনোদ সরকার জানবে না!
চাঁদা করে উত্তম-মধ্যম দেওয়া। যাকে বলে রাম ধোলাই। কেন? জেলাশাসকের স্ত্রী-কে নিয়ে নোংরা কথা বললে তো শাস্তি পেতেই হবে। এটা সমস্ত লোকজন জানে না, আর ফালাকাটার বিনোদ সরকার জানবে না! এসব কথা শুনলে হবে। তাই যে জানে না তাঁকে একবার দেখিয়ে দেওয়া ক্ষমতার বহর কাকে বলে। জেলা শাসকের বিরুদ্ধে যাওয়া! 'নারীশক্তির জয় হোক'। আলিপুরদুয়ারের ফালাকাটা থানায় আটককে বেমাক্কা মারধরের ঘণ্টায় এখন এমনই পোস্ট সামনে এসেছে। এমনকী আলিপুরদুয়ারের জেলাশাসক নিখিল নির্মলের স্ত্রী যাকে ঘিরে এতকাণ্ড তিনিও প্রায় অর্ধেকপাতা স্বামীর প্রশস্তি পোস্ট করেছেন। যা এই মহূর্তে নেট দুনিয়ায় ছেয়ে গিয়েছে।
ফেসবুক-এ নিজের ওয়ালে নন্দিনী কষ্ণণ পোস্ট করে লিখেছেন,'আজেবাজে অনেক বকা হয়েছে, যদি হঠাতেই তাহলে হঠিয়ে দাও, কিন্তু কারোর সন্তান ও স্ত্রী-কে নিয়ে একজন পারিবারিক মানুষকে বিরক্ত করো না... তোমরা কি জানো কি হয়েছে? ভিডিও-তে কী দেখা যাচ্ছে? ইচ্ছে করেই ওখানে যেগুলো দেখানো হচ্ছে... যে টা হয়েছে সেটা কেউ দেখালো না। ব্লাডি হেল। হ্যাঁ, ...টাকে লাথি-থাপ্পড় মেরেছি... অন্য কেউ হলে এই ধরনের লোকগুলো-কে মেরেই ফেলত... আমার স্বামী আমার সঙ্গে সাতপাক নেওয়ার সময় বলেছিল, আমি তোমার খেয়াল রাখব... তোমাকে রক্ষা করব, তোমার পক্ষ নেব... যা হয়ে যাক... এবং ও করে দেখিয়েছে... আমি ওর জন্য গর্বিত...ও আসলে সত্যিকারের নায়ক...কেউ যদি আপনার বোন, মেয়েকে বলে.... তাহলে এটা চলবে তো? আপনারা নিখিলের প্রতি এমন ভাব দেখাচ্ছেন যেন বোঝাতে চাইছেন ধর্ষণ তো করেনি?... ব্যাস আর ভাই ওতে শুধু কমেন্ট করেছ... থাপ্পড়টা মারা উচিত ছিল, তাই না? আরে ভাড়ে যায় এমন সমাজ, লোক যারা নিজের করা শপথকে মূল্য দেয় না...চাকরি আছে নেই চলে যায়, কিন্তু ভালোবাসা আছে এটাই সবচেয়ে বড় ব্যাপার, আই লাভ ইউ নিখিল, প্রাউড অফ ইউ, তোমার স্ত্রী/বেস্ট ফ্রেন্ড/ গার্লফ্রেন্ড/ এবং তোমার দুই সন্তানের মা হতে পেরে আমি ভাগ্যবান। মরে গেলেও তোমার দিকে কাউকে আঙুল তুলতে দেব না... এর জন্য আমাকে জীবন দিতে হলেও তা দেব, তোমার সামনে আমির প্রাচীর হয়ে দাঁড়াব, যেভাবে সবসময় দাঁড়াই...'
ফালাকাটা থানায় আটককে মারধরের যে ভিডিও ভাইরাল হয়েছে তাতে সায়নী সরকার নামেও এক তরুণীকে দেখা গিয়েছে। তিনি ফেসবুকে অভিযোগ করেছেন বিনোদ যে সোশ্যাল মিডিয়া গ্রুপে আজেবাজে কথা লিখেছিল সেখানে আরও ১০জন মহিলা রয়েছেন। অশ্লীল কথা লেখার সময় এই সব মহিলাদেরও কথা ভাবেননি বিনোদ।
এই ঘটনার পর পরই 'উই সাপোর্ট ডিএম আলিপুরদুয়ার' বলে একটি প্রচারাভিযানও চালু হয়েছে সোশ্য়াল মিডিয়ায়। জেলাশাসক নিখিল নির্মল কোনও দোষ করেননি বলেও এই প্রচারে অংশ নেওয়ারা দাবি করেছেন। তবে, এই প্রচারকে বিন্দুমাত্র আমল দিতে রাজি হচ্ছেন না সোশ্য়াল মিডিয়ায় প্রতিক্রিয়া জানানো একটা বিশাল সংখ্যক মানুষ। ইতিমধ্যেই জেলাশাসক নিখিল নির্মল, তাঁর স্ত্রী নন্দিনী কৃষ্ণণ এবং ফালাকাটা থানার ওসি সৌম্যজিৎ রায়ের শাস্তি দাবি জানিয়েছেন হাজার হাজার মানুষ। সকলেই এই ঘটনাকে ক্ষমতার অপব্যবহার বলে দাবি করছেন। এমনকী নন্দিনী কৃষ্ণণ একে একজন স্বামীর স্বাভাবিক প্রতিক্রিয়া বলে দাবি করাকেও কেউ সমর্থন দিতে রাজি নন। কারণ প্রত্যেকেরই অভিযোগ, একজন জেলাশাসক যিনি আইনের রক্ষক তিনি যদি সর্বসমক্ষে একজন মস্তানের মতো আচরণ করেন তাহলে তা সমর্থন করা যায় না। যেহেতু আইন তাঁর হাতে রয়েছে তাই তিনি একজন আটককে থানায় তুলে নিয়ে গিয়ে এমনভাবে মারধর করবেন! এমনকী, জেলশাসকের স্ত্রী হলেও নন্দিনী কৃষ্ণন কেন অভিযুক্তের শরীরে হাত তুলবেন তাতেও প্রশ্ন রয়েছে। বিনোদ সরকারকে পুলিশ গ্রেফতার করে তদন্ত করতে পারত, কিন্তু ক্ষমতা জাহির করে যেভাবে একজন সরকারি উচ্চ পদস্থ অধিকর্তা যেভাবে একটা বিতর্ক তৈরি করেছেন তাকে অধিকাংশ মানুষ সমালোচনা করছেন।
দেখুন সেই মারধরের ভিডিও...