পাঁচ বন্ধুকে মরতে দেখেছেন, কাশ্মীরে আর ফিরে যেতে চান না বসিরুল
সেই
রাতের
আতঙ্ক
ভুলতে
পারছেন
বসিরুল
সরকার।
চোখ
বন্ধ
করলেই
যেন
সেই
দৃশ্য
দেখতে
পারছেন
তিনি।
মঙ্গলবার
রাতে
কুলগামে
জঙ্গিদের
গুলিতে
নিহত
হন
বাংলার
পাঁচ
শ্রমিক
এবং
আহত
হন
একজন।
সেই
সময়
ওখানে
ছিলেন
না
বসিরুল।
ভাগ্যক্রমে
বেঁচে
যান
তিনি।
বসিরুল
জানান,
তিনি
আর
কখনও
উপত্যকায়
ফিরে
যাবেন
না।
তাঁর
আর্থিক
পরিস্থিতি
যেমনই
হোক
না
কেন।
জঙ্গিরা বসিরুলের পাঁচ বন্ধুকে সার করে দাঁড়িয়ে তাঁদের ওপর গুলি চালায় এবং একজন আহত হয়। সেই সময় বসিরুল খাবার কিনতে গিয়েছিলেন বাইরে। ফিরে এসে দেখেন তাঁর পাঁচবন্ধু গুলিবিদ্ধ অবস্থায় পড়ে রয়েছে আর একজন আহত অবস্থায় ছটফট করছে। বর্তমানে আহত শ্রমিক শ্রীনগরের হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। বসিরুল বর্তমানে এসএসকেএম হাসপাতালে ভর্তি আছেন। তিনি বলেন, 'আমি আর কখনও কাশ্মীরে ফেরত যাব না। আমি সেখানে আমার পাঁচ বন্ধুকে হারিয়েছি। আমি বেঁচে থাকার জন্য কিছু একটা করব কিন্তু কাজের জন্য কাশ্মীরে কখনও যাব না।’ বুধবারই অশান্তিকর উপত্যকা থেকে কলকাতায় ফিরেছেন বসিরুল। এদিনই রাতে পাঁচজন শ্রমিকের নিথর দেহ কাশ্মীর থেকে বাংলায় নিয়ে আসা হয়। বৃহস্পতিবার দুপুরে মূর্শিদাবাদ জেলার বহালনগরে যখন তাঁদের দেহগুলি কফিনবন্দী হয়ে ফেরে পরিবারের সদস্যরা কান্নায় ভেঙে পড়েন।
মূর্শিদাবাদের সাত শ্রমিক কাশ্মীরের আপেল বাগানে কাজ করতে গিয়েছিলেন। মঙ্গলবারের বিভীষিকাময় রাতের কথা বলতে গিয়ে বসিরুল বলেন, 'আমি সারাদিন কাজ করার পর সন্ধ্যায় বাড়িতে ফিরি। কিছুক্ষণের মধ্যে আমি সকলের জন্য ভাত রাঁধি। আচমকাই কিছুটা দুরত্ব থেকে দোকানদারদের চিৎকার শুনতে পাই। তাঁরা পালাও পালাও বলে চেঁচাতে থাকে।’ তিনি আরও বলেন, 'আমি ঠিক বলতে পারব না ঠিক কি হয়েছিল, কিন্তু গুলির শব্দ শুনে আমি কাছেই আমাদের সহকর্মীদের বাড়ি যাই। ততক্ষণে সব শেষ। ওঁরা আমার বন্ধু। আমরা একসঙ্গে কাশ্মীরে যাব বলে বাড়ি ছেড়েছিলাম, কিন্তু একসঙ্গে আর বাড়ি ফেরা হল না।’ ৪২ বছরের শ্রমিক বসিরুল জানান, তাঁর একটি ছোট জমি রয়েছে। কাশ্মীরে যাওয়ার আগে তিনি সেপ্টেম্বরের শেষ সপ্তাহে সেই জমিতে ধানের বীজ বপন করে গিয়েছিলেন। বসিরুল বলেন, 'আমি বাড়ি ফিরতে চাই। আমি আমার পরিবার, মা, মেয়ে এবং স্ত্রীকে দেখতে চাই। আমি এখানে আর এক মুহূর্তও থাকতে চাই না।’
কলকাতা পুলিশের সহযোগিতায় বসিরুল তাঁর মুর্শিদাবাদের বাড়িতে ফিরতে সফল হয়েছেন। চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, তিনি সুস্থ আছেন। কিন্তু আতঙ্ক ও মানসিক আঘাত থেকে সুস্থ হতে তাঁর কাউন্সিলিংয়ের প্রয়োজন। চিকিৎসকরা তাঁকে ছেড়ে দিলেন কারণ তিনি ক্রমাগত তাঁর পরিবারকে দেখার জন্য ব্যস্ত হয়ে পড়েছিলেন।