সারদা-কাণ্ডে রাষ্ট্রপতিকেও টেনে আনলেন মদন মিত্র
পাশাপাশি, গতকালের ওই জনসভায় মদনবাবু আরও বলেন, সারদা-কাণ্ডে পরিকল্পিতভাবে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে জড়িয়ে কুৎসা করা হচ্ছে। যদি কেউ প্রমাণ করতে পারে উনি এ ব্যাপারে জড়িত, তা হলে নাকখত দিয়ে মন্ত্রিত্ব ছেড়ে দেবেন তিনি।
প্রসঙ্গত, ইডি জোরদার তদন্ত শুরু করায় তৃণমূল কংগ্রেসের কিছু প্রথম সারির নেতা-মন্ত্রীর নাম উঠে এসেছে। এর আগে সারদা-কাণ্ডে অভিযুক্ত তৃণমূল সাংসদ কুণাল ঘোষ বলেছিলেন, মুকুল রায়, মদন মিত্র প্রমুখ অনেক কিছু জানেন। তাঁদের জেরা করলে সারদা-কাণ্ডে বিভিন্ন তথ্য জানা যাবে। কয়েকদিন আগে আবার সুদীপ্ত সেনের স্ত্রী ও ছেলেকে গ্রেফতার করে ইডি। তাঁদের জেরা করে রাজ্যের শাসক দলের কিছু নেতা-মন্ত্রীর জড়িত থাকার তথ্য মিলেছে। সেই পরিপ্রেক্ষিতে বিরোধীরা বলেছে, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ভূমিকাও খতিয়ে দেখা হোক। লাগাতার এমন দাবিতে বিরক্ত হয়ে শেষ পর্যন্ত মুখ খুললেন মদন মিত্র।
এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট, বিরোধীদের উদ্দেশে চ্যালেঞ্জ
কাটোয়ায় লোকসভা ভোট উপলক্ষে আয়োজিত দলীয় সভায় মদনবাবু বলেছেন, "মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় একজন সৎ মানুষ। সবাই জানে। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সারদা-কাণ্ডে জড়িত প্রমাণ করতে পারলে আমি নাকখত দিয়ে মন্ত্রিত্ব ছেড়ে দেব। আগে ইডি ধরুক পি চিদম্বরমের স্ত্রী নলিনী চিদম্বরমকে। উনি তো জড়িত। সারদা গোষ্ঠীকে লাইসেন্স দিয়েছিলেন রিজার্ভ ব্যাঙ্কের গভর্নর। তাঁকেও গ্রেফতার করা হোক।" মদনবাবু যখন তোপ দাগছিলেন, তখন তাঁর পাশে বসেছিলেন দলের বাহুবলী নেতা অনুব্রত মণ্ডল।
এদিকে, সারদা-কাণ্ডে বালুরঘাটের তৃণমূল কংগ্রেস প্রার্থী তথা নাট্যকার অর্পিতা ঘোষকে নোটিশ পাঠিয়েছে ইডি। এ ব্যাপারে অর্পিতাদেবী জানিয়েছেন, "সারদা গোষ্ঠীর 'এখন সময়' টিভি চ্যানেলে আমি কাজ করতাম। এই চ্যানেলের কাগজপত্র আমার কাছে আছে কি না, জানতে চাওয়া হয়েছে। থাকলে ওঁদের হাতে তুলে দেওয়ার কথা বলা হয়েছে। আমি মৌখিকভাবে জানিয়েছি, ওই চ্যানেলের অফিসিয়াল কাগজপত্র আমার কাছে নেই। ভোট মিটে গেলে লিখিতভাবে এর জবাব দেব বলেছি।"
প্রসঙ্গত, ইডি কোমর বেঁধে নামায় বেজায় খাপ্পা তৃণমূল কংগ্রেস। তারা একে কংগ্রেসের 'অভিসন্ধি' হিসাবেই দেখছে। ভোটের আগে বেকায়দায় ফেলতে রাহুল গান্ধী-সোনিয়া গান্ধীই এমন ছক কষেছেন বলে দাবি তৃণমূলের। যেমন, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ইতিমধ্যে বলেছেন, "চিদুবাবু তুই মনে রাখিস, আমি মায়াবতী বা মুলায়ম নই। আমি মমতা। ক্ষমতা থাকলে তুই আমাকে টাচ কর। তার পর দেখছি।" তাঁর এই তুই-তোকারি সম্বোধন বিভিন্ন মহলে নিন্দিত হলেও নরম হতে রাজি নন তৃণমূল কংগ্রেস সুপ্রিমো।
ইডি-র তদন্তে অবশ্য বেজায় উৎফুল্ল বিরোধীরা। কংগ্রেস নেতা অধীর চৌধুরী বলেন, "ইডি-র তদন্ত যে পথে এগোচ্ছে, তাতে তৃণমূল কংগ্রেসের অর্ধেক নেতাই জেলে ঢুকে যাবে। তাই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় হিতাহিতজ্ঞান হারিয়ে কথায় শালীনতার সীমা ছাড়িয়ে যাচ্ছেন।" প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী তথা সিপিএম নেতা বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য় বলেছেন, "সারদার লক্ষ লক্ষ, কোটি কোটি টাকা কোথায় গেল? কার হাতে গেল? তৃণমূল কী করেছে সেই টাকা নিয়ে? আপনারা সব জানতে পারবেন? একটু অপেক্ষা করুন।"