শ্বশুরবাড়িতে বেধড়ক মার, অপমানে জামাইষষ্ঠীতেই আত্মঘাতী জামাই
স্থানীয় সূত্রের খবর, স্বপন কৈবর্ত্য বিএসএফে কর্মরত ছিলেন। পোস্টিং ছিল পাঞ্জাবে। পাঁচ বছর আগে বাড়ির অমতে বিয়ে করেন জঙ্গিপুর থানার অন্তর্গত পিয়ারাপুর গ্রামে। স্ত্রীয়ের নাম কাকলি কৈবর্ত্য। বিয়ের পর যখনই কর্মস্থল থেকে আসতেন, উঠতেন শ্বশুরবাড়িতে। তাঁর নিজের বাড়ি অর্থাৎ কান্দি পুরসভার রূপপুরে যেতেন না। পরে বাবা-মা ছেলের প্রতি নরম মনোভাব নিলেও স্বপনবাবু নিজের অভিমান আঁকড়ে ছিলেন। জামাইষষ্ঠী উপলক্ষে কয়েকদিন আগে তিনি পাঞ্জাব থেকে এসেছিলেন শ্বশুরবাড়িতে। অভিযোগ, শ্বশুরবাড়ির লোকজন জামাইয়ের কাছ থেকে ষষ্ঠীর কেনাকাটা বাবদ প্রচুর টাকা দাবি করে। তিনি তা দিতে অস্বীকার করায় প্রথমে গালিগালাজ করা হয়। তার পর স্ত্রী, শ্যালক, শ্বশুর মিলে মারধর করে তাঁকে। তার পর গলাধাক্কা দিয়ে বাড়ি থেকে বের করে দেওয়া হয়।
স্বপন কৈবর্ত্যের বাবা শঙ্করবাবু বলেন, "কতদিন পর ছেলে বাড়ি ফিরল। প্রথমে আনন্দে আত্মহারা হয়ে গিয়েছিলাম। পরে দেখলাম, ওর সারা গায়ে কালশিটে। খুঁড়িয়ে খুঁড়িয়ে হাঁটছে। কী হয়েছে জিজ্ঞাসা করতেই ঝরঝর করে কেঁদে ফেলল। বলেছে, বিয়ের পর থেকে যখনই নাকি শ্বশুরবাড়িতে আসত, ওর কাছ থেকে টাকাপয়সা কেড়ে নেওয়া হত। গত ১৭ মে শ্বশুরবাড়িতে এসে উঠেছিল। সেইদিন থেকেই অতিরিক্ত টাকার দাবিতে ওর ওপর অত্যাচার শুরু হয়। ঠিকঠাক খেতেও দেওয়া হচ্ছিল না। মঙ্গলবার দুপুরে ওকে পশুর মতো পেটানো হয়। ওইদিন বিকেলে কাঁদতে কাঁদতে বাড়ি আসে। বুধবার জামাইষষ্ঠীর দিন বিষ খায়।"
ছেলেকে আত্মহত্যার প্ররোচনা দেওয়ার অভিযোগে শঙ্করবাবু বউমা-সহ চারজনের বিরুদ্ধে কান্দি থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন। কান্দি থানার তরফে অভিযুক্তদের গ্রেফতার করতে অনুরোধ করা হয়েছে জঙ্গিপুর থানাকে। কিন্তু পুলিশ জানিয়েছে, অভিযুক্তরা পলাতক। তাদের সন্ধানে খোঁজ চলছে।