তোপের মুখে বিমান বসু, অশোক ঘোষ, জোরালো হচ্ছে পদত্যাগের দাবি
বিমান বসু সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক। বামফ্রন্টের চেয়ারম্যানও বটে। লোকসভা ভোটে পশ্চিমবঙ্গে সিপিএম তথা বামফ্রন্টের শোচনীয় হারের পর থেকেই শুরু হয়েছে তাঁর বিরুদ্ধে তোপ দাগা। পার্টির নীচুতলার কর্মী থেকে মাঝারি নেতা, এমনকী দল থেকে বহিষ্কৃতরাও তাঁকে বিঁধছেন। সাধারণ কর্মীরা ফেসবুকে বিমানবাবু বিরুদ্ধে ইতিমধ্যে নানা পোস্ট দিয়েছেন। 'পদের লোভ' বিমানবাবুর নীতিজ্ঞান লোপ পাইয়ে দিয়েছে বলেও মন্তব্য করা হয়েছে ফেসবুকের বিভিন্ন পোস্টে। এ প্রসঙ্গে লোকসভার প্রাক্তন স্পিকার তথা দল থেকে বহিষ্কৃত নেতা সোমনাথ চট্টোপাধ্যায়কে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেছেন, "জ্যোতি বসু মানুষের সঙ্গে নিরন্তর যোগাযোগ রেখে চলতেন। তাই তিনি অত জনপ্রিয় ছিলেন। সেই পথে হাঁটছেন না এখনকার নেতারা। রাজ্যে যে নেতৃত্ব রয়েছেন, তাঁরা বহুদিন একই পদে রয়েছেন। অথচ দলে ভালো কাজ করার মতো তরুণ-তরুণীর অভাব নেই। তাঁদের তুলে আনতে হবে।" মনে করা হচ্ছে, 'বহুদিন একই পদে রয়েছেন' বলে বিমান বুসকেই বুঝিয়েছেন সোমনাথবাবু। ইদানীং ফেসবুকে সুজন চক্রবর্তীকে সিপিএম রাজ্য সম্পাদক করার যে দাবি উঠেছে, তা নিয়ে অবশ্য কিছু বলতে চাননি তিনি।
অন্যদিকে, আরও চাঁছাছোলা আক্রমণের শিকার হয়েছেন ফরওয়ার্ড ব্লকের রাজ্য সম্পাদক অশোক ঘোষ। অশোকবাবু ১৯৬২ সাল থেকে এই পদে রয়েছেন। বয়সের ভারে তিনি ন্যুব্জ। তবুও পদ না ছাড়ায় এ বার দলের অন্দরে তৈরি হয়েছে তীব্র বিক্ষোভ। দলের নেতা উদয়ন গুহ ফেসবুকে লিখেছেন, "এই বয়সে যাঁরা ঠিক মতো মলমূত্র ত্যাগ করতে পারেন না, তাঁরা আর যাই হোক, অন্তত পদত্যাগ করবেন না। কারণ সেটা কষ্টকর কাজ!" অশোকবাবুকেই নাম না করে নিশানা করা হয়েছে। ফরওয়ার্ড ব্লক নেতাদের একাংশ একে 'অশালীন' বলে বর্ণনা করেছেন। দলের রাজ্য সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য জয়ন্ত রায় বলেছেন, "এ ধরনের অশালীন ও কুরুচিকর মন্তব্য নিয়ে আমার কিছু বলার নেই।" উদয়নবাবুর পাল্টা যুক্তি, "যা বাস্তব, তাই বলেছি। এতে অশালীন কিছু নেই।"
উদয়নবাবুকে সমর্থন করেছেন দলের তরুণ নেতা অনির্বাণ চৌধুরী। তিনি বলেছেন, "এক সময় বলা হয়েছিল, নেতা নয়, নীতির বদল চাই। এখন বলছি, নীতি ঠিক আছে, নেতার বদল চাই।"
প্রসঙ্গত, আর কিছুদিন পরই রাজ্যে ১৭টি পুরসভায় ভোট হবে। তখনও যদি বামেদের রক্তক্ষরণ অব্যাহত থাকে, তা হলে আবার যে দলের মাথাদের বিরুদ্ধে বিষোদ্গার বাড়বে, সন্দেহ নেই।