পিছন থেকে ছুরে মেরেছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়! অধীর ফেরায় বিজেপি-বিরোধী জোট ‘হিমঘরে’
পিছন থেকে ছুরে মেরেছিলেন মমতা! অধীর ফেরায় বিজেপি-বিরোধী জোট ‘হিমঘরে’
বাংলায় বিজেপি-বিরোধী জোটের সম্ভাবনা ক্ষীণ থেকে ক্ষীণতর হয়ে গেল প্রদেশ কংগ্রেসের সিদ্ধান্তে। প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি হয়ে বাংলার দায়িত্ব ফেরলেন ঘোর মমতা-বিরোধী অধীর চৌধুরী। রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, আগেও কোনওদিনও তিনি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে রেয়াত করেননি, এবারও মমতার সঙ্গে বিজেপি-বিরোধী জোট তিনি সামিল হবেন না।
কংগ্রেস-তৃণমূলের জোট-সম্ভাবনার জলাঞ্জলি!
রাজনৈতিক মহলের একাংশের ধারণা, বাংলায় একুশের নির্বাচনী লড়াই আরও কঠিন হয়ে গেল। বিশেষ করে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের জন্য অধীর চৌধুরীর বাংলার দায়িত্ব আসা খারাপ খবর। আবার ততটাই ভালো খবর বিজেপির জন্য। অধীর চৌধুরী প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি হওয়ায় কংগ্রেস-তৃণমূলের জোট-সম্ভাবনার জলাঞ্জলি হয়ে গেল। বরং বাম-কংগ্রেস জোটে আরও গতি আসবে বলেই ধারণা।
অধীর ও কংগ্রেসের লক্ষ্যই হবে মমতাকে নিশানা
অধীর চৌধুরী হলেন একজন নেতা, যিনি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কঠোর সমালোচক। এবং বাংলায় বামেদের সঙ্গে নির্বাচনী জোটের পক্ষে বরাবর। তাঁর নেতৃত্বে কংগ্রেসের অবস্থানই বদলে যাবে। কংগ্রেস ফের পুরোপুরি তৃণমূল বিরোধী হয়ে উঠবে বাংলায়, প্রদেশ কংগ্রেস প্রতিটি পদক্ষেপে নিশানা করবেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে।
২০১৬-র মতোই বাম-কংগ্রেস জোটের পক্ষে অধীর
বাংলায় ২০১৬ সালের বিধানসভা নির্বাচনের আগে অধীর চৌধুরীই বামদের সঙ্গে নির্বাচনী সমঝোতা করেছিলেন। কংগ্রেস-বাম জোট নির্বাচনের আগে ঝড় তুললেও, নির্বাচনী ক্ষেত্রে খুব খারাপ ফল করেছিল। তা সত্ত্বেও আবারও বাম-কংগ্রেস জোট করে দু-পক্ষই ফায়দা তোলার চেষ্টা রয়েছে। এই জোট চালিয়ে যাওয়ার পক্ষেই অধীর চৌধুরী।
তৃণমূলের সঙ্গে জোটের কথা তারা ভাবছে না কংগ্রেস
সোমেন মিত্রের মৃত্যুর পরে প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি হিসেবে বাংলায় অধীর চৌধুরীকে দায়িত্ব দিয়ে কংগ্রেসের শীর্ষ নেতৃত্ব একপ্রকার বুঝিয়েই দিয়েছে, তৃণমূলের সঙ্গে জোটের কথা তারা ভাবছে না। প্রদেশ কংগ্রেস যেমন বাম-কংগ্রস জোটের পক্ষে চলছিল, তেমনটাই চলবে। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে একত্রিত হয়ে বিজেপির বিরুদ্ধে একীকরণের কৌশল এখন হিমঘরে পৌঁছে গেল।
২০১১ সালের মিত্রতা শেষ করেছিল তৃণমূল
২০১১ সালের বিধানসভা ভোটে তৃণমূল ও কংগ্রেস লড়াই করেছিল জোট বেঁধে। তাদের মৈত্রীই ৩৪ বছরের বাম শাসনের অবসান ঘটিয়েছিল বাংলায়। ক্ষমতায় এনেছিল মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে। তারপর কংগ্রেসের সঙ্গে তৃণমূলের জোট দীর্ঘস্থায়ী হয়নি। ২ বছরের মধ্যেই জোট ভেঙে গিয়েছিল। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এরপর কংগ্রেস ভাঙতেই বেশি তৎপর ছিলেন। তা উভয়ের মিত্রতাকে বদলে দিয়েছিল শত্রুতায়।
কংগ্রেস ভোলেনি পিছন থেকে তৃণমূলের ছুরিকাঘাত
জোট ভেঙে যাওয়ার পর থেকেই কংগ্রেসের অভিযোগ ছিল, "মিত্র হওয়া সত্ত্বেও তৃণমূল আমাদের বাংলা থেকে মুছে ফেলার চেষ্টা করেছিল। এটি আমাদের পিছন থেকে ছুরিকাঘাত করোর মতোই অপরাধ এবং আমাদের সঙ্গে যেভাবে বিশ্বাসঘাতকতা করেছিল, তারপর তৃণমূলের সঙ্গে আবার হাত মিলিয়ে চলা বা সেই দলের সুপ্রিমোর বিরুদ্ধে নরম হওয়ার কোনও প্রশ্নই আসে না।"
ক্ষমতার লোভেই বিজেপি বিরোধী ভোট একীকরণ কৌশল!
বাংলায় বিজেপির উত্থান মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়তে এখন চ্যালেঞ্জের মুখে দাঁড় করিয়ে দিয়েছে। তাই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় চাইছেন বিজেপির বিরুদ্ধে ঐক্যফ্রন্ট গঠন করছে। বিজেপি বিরোধী ভোট একীকরণের কৌশল নিয়েছেন তিনি। তাঁর এই কৌশল শুধু বাংলায় নিজের ক্ষমতায় ফেরা নিশ্চিত করতেই, এমনটাই মনে করে বাংলার কংগ্রেস নেতৃত্ব।
অধীরের বঙ্গে-এন্ট্রি, হিসেব গুলিয়ে দেবে তৃণমূলের
রাজনৈতিক মহলের একাংশ মনে করছে, রাজ্যে আসন্ন বিধানসভা নির্বাচনে কংগ্রেস তৃণমূলের পাশাপাশি বিজেপির বিরুদ্ধে ঝাঁঝ বাড়াবে। অধীরা চৌধুরী আসায় ফের কংগ্রেস সতেজ হতে পারে বলে আশাবাদী অনেকেই। এর অর্থ হ'ল বিজেপি-বিরোধী ভোট তৃণমূল এবং কংগ্রেসের মধ্যে ভাগ হয়ে যাবে। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যখন বিজেপি বিরোধী ভোটকে একীকরণের কৌশল নিয়েছেন, তখন অধীরের এন্ট্রি সব হিসেব গুলিয়ে দিতে পারে।
অধীরই বড় 'কাঁটা’ মমতার 'হ্যাটট্রিকে’র পথে! কংগ্রেসের সিদ্ধান্তে 'সমীকরণ’ পাকা