‘গড়’ উদ্ধারই লক্ষ্য অধীরের, ‘ধান্দাবাজ নেতা-ধাপ্পাবাজ তৃণমূলে’র বিরুদ্ধে কী নির্দেশ দলকে
হাইকম্যান্ড চাইছে তৃণমূলের সঙ্গে সখ্যতা। তৃণমূলের সঙ্গে সন্ধি করে চলারই পক্ষপাতী কংগ্রেস হাইকম্যান্ড। কিন্তু বরাবরই তৃণমূলের বিরুদ্ধে এককাট্টা অধীর চান তৃণমূলকে উচিত শিক্ষা দিতে।
তৃণমূল ঝড়ে অধীর-গড়ও তছনছ হয়ে গিয়েছে। এখন মুর্শিদাবাদের 'রবীন হুড' নিজের ঘরেই একঘরে। তাই এবার পঞ্চায়েতেই তৃণমূলকে উচিত শিক্ষা দিতে বদ্ধপরিকর প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি। যে কোনও প্রকারে তৃণমূলকে হারানোই তাঁর একমাত্র লক্ষ্য। সেজন্য যা করার দরকার তিনি করবেন। যেহেতু গ্রামের ভোট, তাই হাইকম্যান্ডের তোয়াক্কা না করেই তিনি দলীয় কর্মীদের নির্দেশ দিলেন সিপিএমের সঙ্গে নিচুতলা জোট গড়ে আসন্ন ভোটে লড়াই করার।
হাইকম্যান্ড চাইছে তৃণমূলের সঙ্গে সখ্যতা। বৃহত্তর স্বার্থে, অদূর ভবিষ্যতে লোকসভা নির্বাচনের দিকে চেয়ে তৃণমূলের সঙ্গে সন্ধি করে চলারই পক্ষপাতী কংগ্রেস হাইকম্যান্ড। কিন্তু বরাবরই তৃণমূলের বিরুদ্ধে এককাট্টা অধীর। গড় হারানোর পর তো কোনওভাবেই তিনি তৃণমূলকে রেয়াত করতে পারছেন না। তাই নিজের জেলায় পঞ্চায়েত সম্মেলন থেকেই তিনি বার্তা দিলেন মহাজোট গড়ে তৃণমূলকে রুখে দেওয়ার।
পঞ্চায়েত ভোটের প্রস্তুতিতে জেলায় জেলায় শুরু হয়েছে সম্মেলন। বহরমপুরের রবীন্দ্র সদনে অনুষ্ঠিত সম্মেলনে অংশ নিয়ে অধীর চৌধুরী বলেন, 'তৃণমূলকে রুখতে পঞ্চায়েত ভোটে যা করলে দলের ভালো হবে, তা-ই করতে হবে। প্রয়োজনে সিপিএম তথা বামফ্রন্টের সঙ্গে জোট গড়তে হবে। মোট কথা হারাতে হবে তৃণমূলকে।' সেইসঙ্গে তিনি জনসংযোগ বাড়ানো ও দলকে আন্দোলন মুখী করতেও পরামর্শ দেন।
এদিন অধিকাংশ বিধায়ক ও জেলা নেতারা অধীর চৌধুরীর সঙ্গে সহমত পোষণ করেন। ঐক্যমত্য হয়েই তাঁরা পঞ্চায়েতের রণকৌশল নিয়ে আলোচনা করেন। দলের নেতা-কর্মীরাও চাইছেন তৃণমূলের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে নিজেদের অস্তিত্বের জানান দিতে। এদিন অধীরবাবু আরও বার্তা দিয়েছেন জেলের নিচুতলার নেতা-কর্মীদের উদ্দেশ্যে।
তিনি জানিয়েছেন, 'জোটের বিষয়টিতে স্বাধীনভাবে নিতে পারবেন পঞ্চায়েত স্তরের নেতা-কর্মীরা। তাঁরা দলের ভালোর জন্য যেটা ভালো বুঝবেন, সেটা করবেন, রাজ্যের শীর্ষনেতৃত্বের তরফে কোনও বাধা দেওয়া হবে না। পূর্ণ স্বাধীনতা নিয়ে কাজ করতে পারেন নেতা-কর্মীরা।'
এদিন পঞ্চায়েত সম্মেলনে দলের অর্থভাণ্ডার নিয়ে আশঙ্কার কথা জানিয়েছেন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি। দলে ভাঁড়ে মা ভবানির দশা চলছে বলে মন্তব্য করেন তিনি। এরপরই তিনি বলেন, তা বলে বসে থাকলে চলবে না। কর্মীদের নির্দেশ দিয়েছেন বিভিন্ন ইস্যুতে কূপন নিয়ে গণ অর্থ সংগ্রহ অভিযানে নামতে। মানুষের পাশে থাকার জন্যই এই অর্থ সংগ্রহ অভিযান চালাবে কংগ্রেস।
এদিন তিনি বলেন, 'ধান্দাবাজ জনপ্রতিনিধিরা আমাদের ছেড়ে চলে গিয়েছেন। কিন্তু সমগ্র জেলাবাসী আমাদের সঙ্গে রয়েছেন। কাজেই ভয় পাবেন না। মুর্শিদাবাদবাসীর পাশে থাকার বার্তা নিয়ে এখন থেকেই ভোট প্রচারে নেমে পড়তে হবে। তৃণমূলের ধাপ্পাবাজির কথা তুলে ধরতে হবে মানুষের কাছে।'