আর বাম-জোটে সায় নেই অধীরের! প্রদেশ কংগ্রেসে পুনর্বহাল হয়েই কি বার্তা তৃণমূলকে
একেবারে উল্টো সুর শোনা গেল অধীর চৌধুরীর কণ্ঠে। যা শুনে মনে হবে পঞ্চায়েতের আগে তৃণমূলের বিরুদ্ধে তিনি নমনীয় অবস্থান নিতে চলেছেন।
প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতির দায়িত্ব ফের একবার উঠে এসেছে অধীর চৌধুরীর চওড়া কাঁধে। এবার দায়িত্ব নিয়েই রাজ্য রাজনীতিতে নয়া বার্তা দিলেন তিনি। একেবারে উল্টো সুর শোনা গেল অধীর চৌধুরীর কণ্ঠে। যা শুনে মনে হবে পঞ্চায়েতের আগে তৃণমূলের বিরুদ্ধে তিনি নমনীয় অবস্থান নিতে চলেছেন। পঞ্চায়েতের প্রাক্কালে তিনি সাফ জানিয়ে দিলেন, 'আর তাঁর বাম-জোটে সায় নেই।'
[আরও পড়ুন:সম্মেলন শেষেও বিনিয়োগ নিয়ে আলোচনা, মমতার বাংলায় আগ্রহ বিদেশি সংস্থাগুলোর]
কেন হঠাৎ অবস্থান বদল প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরীর? দুদিন আগে সবং ভোটের সময়ও বামেদের সঙ্গে জোট গড়ে তৃণমূলের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে আগ্রহী ছিলেন অধীরবাবু। এমন কী হল, যাতে এখন আর বামেদের সংসর্গও এড়িয়ে চলতে চাইছেন তিনি। অধীর চৌধুরীর ব্যাখ্যা, 'সিপিএম বারবার তাঁদের সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা করেছে। তাই আর সিপিএম তথা বামসঙ্গ চান না তাঁরা।'
প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতিত্বের নয়া মেয়াদের সূচনা পর্বে তিনি সাফ জানিয়ে দেন, 'ঠিক যখন বাম-কংগ্রেসের জোটকে মানুষ গ্রহণ করতে শুরু করেছে, তখনই বামেরা বেঁকে বসে জোটকে অপ্রাসঙ্গিক করে দিয়েছে। ফলে গুরুত্ব হারিয়েছে এই জোট রাজনীতি। পঞ্চায়েতে জোট কোনও মতেই আর সম্ভব নয়। এতে বিশ্বাসযোগ্যতা আরও কমবে।'
পঞ্চায়েত ভোটকে সামনে রেখে সিপিএম রাজ্য সম্পাদক সূর্যকান্ত মিশ্র যখন ক্ষেত্র বিশেষে কংগ্রেসকে সমর্থন দেওয়ার ব্যাপারে বার্তা দিয়েছেন, তখন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতির এই ভোলবদল যথেষ্ট তাৎপর্যপূর্ণ। রাজনৈতিক মহল অধীরবাবুর এই বার্তায় অন্যরকম গন্ধ পেতে শুরু করেছেন। রাহুল গান্ধী সভাপতি হওয়ার পর অধীর চৌধুরীর প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি হিসেবে পুনর্নির্বাচিত হওয়া ছিল স্রেফ সময়ের অপেক্ষা। তবু এই সমীকরণের পিছনে রাহুল গান্ধীর মূল সুরে এখন থেকেই সুর মেলাতে শুরু করেছেন অধীর চৌধুরী।
[আরও পড়ুন:'বেস্ট বেঙ্গল' আপনার বাড়ি, শিল্পোদ্যোগীদের বঙ্গে বসতের আন্তরিক আহ্বান মমতার]
দু'জনেই চাইছেন রাজ্যে দলকে শক্তিশালী করতে। তারপর জোট গড়ার পক্ষপাতী তারা। সর্বভারতীয় কংগ্রেসের এই মনোভাবে সায় রয়েছে অধীরবাবুরও। তিনিও চান জোট রাজনীতির আগে নিজের দলের ভিত মজবুত করতে। তারপর রাজনৈতিক পরিস্থিতি মেপে জোট গড়ার দিকে এগনোই শ্রেয় বলে তাঁর বিশ্বাস। সেই লক্ষ্যেই এবার চলবেন তিনি।
এ প্রসঙ্গে অবশ্য তাঁর ব্যাখ্যা, 'পঞ্চায়েত নির্বাচনে, বিশেষ করে একেবারে গ্রাম পঞ্চায়েত স্তরে বিভিন্ন সমীকরণে ভোট-সমঝোতা হয়ে থাকে। সেখানে প্রদেশ নেতৃত্বের বা শীর্ষ নেতৃত্বের কিছু বলার থাকে না। সেই নিয়ন্ত্রণও থাকে না নেতৃত্বের হাতে। ফলে ভোট-যুদ্ধের ময়দানে নিচুতলায় কী হবে, তা কারও পক্ষে বলা সম্ভব নয়। সেই সমঝোতাকে রাজনৈতিক-জোট বলা উচিত হবে না।'
[আরও পড়ুন:২ লক্ষ ২০ হাজার কোটির লগ্নি প্রস্তাব বাংলায়! ২০ লক্ষ কর্মসংস্থানের আশায় মমতা]