For Quick Alerts
ALLOW NOTIFICATIONS  
For Daily Alerts
Oneindia App Download

মুখ খুললেন নামখানা স্কুলের টিআইসি, পাল্টা ভিডিও প্রকাশ করে আনলেন খাতা চুরির অভিযোগ

২৩ অগাস্ট দক্ষিণ দূর্গাপুর চঞ্চলাময়ী বিদ্যাপীঠে বহিরাগতরা স্কুলের মধ্যে ঢুকে পড়ে শিক্ষকদের ঘিরে ফেলেছিল। এই ঘটনায় তীব্র উত্তেজনা ছড়ায়।

Google Oneindia Bengali News

২৩ অগাস্ট দক্ষিণ দূর্গাপুর চঞ্চলাময়ী বিদ্যাপীঠে বহিরাগতরা স্কুলের মধ্যে ঢুকে পড়ে শিক্ষকদের ঘিরে ফেলেছিল। এই ঘটনায় তীব্র উত্তেজনা ছড়ায়। শিক্ষকরা অভিযোগ করেছিলেন ভারপ্রাপ্ত প্রধানশিক্ষক আশিস ভট্টাচার্যের নেতৃত্বে তৃণমূলের একদল স্থানীয় নেতা এই হামলা চালায়। এই ঘটনায় ২জন শিক্ষক ও একজন অশিক্ষক কর্মী গুরুতর জখম হয় বলেও দাবি করা হয়েছিল। মারমুখি জনতার সেই ভিডিও ভাইরালও হয়ে যায়।

নামখানা স্কুলকাণ্ডে এবার পাল্টা তোপ

এই ঘটনার পর থেকে কার্যত নিশ্চুপই ছিলেন অভিযুক্ত ভারপ্রাপ্ত প্রধানশিক্ষক আশিস ভট্টাচার্য। অবশেষে সোমবার ওয়ানইন্ডিয়া বেঙ্গলির কাছে ক্ষোভ উগরে দিলেন তিনি। একের পর এক ঘটনাকে টেনে এনে তিনি পাল্টা জানিয়ে দেন বৃহস্পতিবারের ঘটনাকে যেভাবে দেখানোর চেষ্টা চলছে তাতে ঢাকা পড়ে যাচ্ছে আসল সত্য। কী সেই সত্য যার জন্য অভিযোগের কাঠগড়ায় দাঁড়িয়েও পাল্টা দিতে ছাড়ছেন না ভারপ্রাপ্ত প্রধানশিক্ষক?

স্কুলের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক আশিস ভট্টাচার্যের দাবি, ২৩ অগাস্ট ক্লাস টেনের সাত জন ছাত্র তাঁর কাছে আসে। ছাত্ররা অভিযোগ করেন সংস্কৃতের ক্লাসের জন্য নিযুক্ত পার্টটাইমের টিচার ভালো করে পড়াচ্ছেন না। আশিস ভট্টাচার্যের দাবি, ওই ছাত্ররা ক্লাসে ফিরে যাওয়ার পথে বিজ্ঞানের শিক্ষক বিপ্লব পাত্রের মুখোমুখি পড়ে যায়। পার্টটাইম টিচারের নামে নালিশ করার অভিযোগে সেখানেই গগণেন্দ্র দাস নামে এক ছাত্রকে তিনি বেধড়ক মার মারেন।

গগণেন্দ্রকে মারের মাত্রা এতটাই বাড়াবাড়িরকমের ছিল যে সাত ছাত্রের অভিভাবকরা স্কুলে চলে আসেন। তাঁদের পিছন পিছন গ্রামের মানুষ, স্কুলের প্রতিষ্ঠাতা সদস্যরাও আসেন। অভিভাবকরা একটি ঘরে শিক্ষকদের সঙ্গে বসে কথা বলতে চেয়েছিলেন বলে দাবি আশিস ভট্টাচার্যের। কিন্তু, ছাত্র নিগ্রহে অভিযুক্ত শিক্ষক বিপ্লব পাত্র ও তাঁর সঙ্গীরা এতে আপত্তি জানান। এই নিয়ে বচসা শুরু হয়। কিন্তু, তা বলে কোনও অভিভাবক বা অন্য কেউ শিক্ষকদের উপরে হাত তোলেননি। উল্টে এক অভিভাবক টিচার্স রুমে ঢুকে উত্তেজিত জনতার মুখের উপরে দরজা বন্ধ করে ঠায় দাঁড়িয়েছিলেন।

আশিস ভট্টাচার্যের দাবি, বিপ্লব পাত্র ভালো শিক্ষক হলেও ছাত্রদের মারধরের ঘটনা তাঁর ভাবমূর্তি নষ্ট করেছে। মাসখানেক আগেই এক ছাত্রকে এমন মার মেরেছিলেন যে তার সামনের দাঁত পড়ে গিয়েছিল। আশিস ভট্টাচার্যের দাবি, তিনি ঘটনার রাতে সেই ছাত্রের বাড়িতে গিয়ে ক্ষমা চান। এমনকী বেশকিছুক্ষণ তাঁকে কয়েক শ' লোক ঘিরেও রেখেছিল। দক্ষিণ দুর্গাপুর চঞ্চলাময়ী বিদ্যাপীঠের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকের আরও দাবি, দীর্ঘদিন ধরেই স্কুলে পঠন-পাঠনের পরিবেশ নষ্ট করে ফেলা হয়েছে। আর পিছনে রয়েছেন, বিপ্লব পাত্র, সঞ্জীব মণ্ডল, অরুণ ভুঁইয়া, অলক দাস-সহ ছয় জন শিক্ষক। এদের মধ্যে একজনের ভিতরে স্কুলের খাতা চুরির অভিযোগও নামখানা থানায় একবার দায়ের হয়েছিল। সেই ঘটনার জন্য অভিযুক্ত সেই শিক্ষক পরে নামখানা থানার ওসি-র সামনে ক্ষমাও চেয়ে নেন বলে দাবি করেছেন আশিস ভট্টাচার্য।

তাঁর আরও অভিযোগ, স্কুলের ভারপ্রাপ্ত শিক্ষক হলেও তাঁকে নানাভাবে কোণঠাসা করার চেষ্টা করে যান বিপ্লব পাত্র, সঞ্জীব মণ্ডল, অলক দাসরা। এমনকী, ঘটনার দিন যে গ্রুপ ডি কর্মী পঞ্চাণন খাটুয়াকে এসএসকেএম নিয়ে যাওয়া হয়েছিল তাঁর বিরুদ্ধেও নানা অনিয়মের অভিযোগ আছে বলে আশিসের দাবি। পঞ্চাণনের বিরুদ্ধে সর্বশিক্ষা অভিযানের পাঠ্যবই খোলা বাজারে বিক্রি করে দেওয়ারও অভিযোগ রয়েছে বলে তিনি জানিয়েছেন।

স্কুলের ছাত্র সংখ্য়া ১১০০। শিক্ষক রয়েছেন ১৩ জন। কিন্তু, এরপরও তাঁর সিদ্ধান্তকে আমল না দিয়েই বিপ্লব পাত্র ও তাঁর সঙ্গীরা ৪জন পার্টটাইমারকে নিয়োগ করেছেন। এমনও দাবিও ওয়ানইন্ডিয়া বেঙ্গলির কাছে করেন আশিস ভট্টাচার্য। তাঁর অভিযোগ, শিক্ষকরা সঠিক সময়ে স্কুলে এলে পার্টটাইম টিচারের দরকারই হত না। ৬ শিক্ষক প্রায়ই সাড়ে এগারোটা নাগাদ স্কুলে আসেন বলেও তাঁর অভিযোগ। এই শিক্ষকরা ক্লাসে অন্তত ১০ মিনিট লেটে ঢোকেন আর ক্লাস শেষ হওয়ার ৫ মিনিট আগে বেরিয়ে আসেন বলে ও অভিযোগ করেছেন আশিস ভট্টাচার্য। এমনকী, এই ছয় শিক্ষক অধিকাংশ দিনই দেড়টা থেকে দুটোর মধ্যে স্কুল থেকে বেরিয়ে যান। এই নিয়ে প্রতিবাদ করাতেই তাঁকে বারবার হেনস্থা করা হচ্ছে বলেও অভিযোগ করেছেন আশিস ভট্টাচার্য।

পার্টটাইম টিচার রাখা নিয়ে আপত্তি করায় তাঁকে ছাত্র দিয়ে বিপ্লব পাত্ররা ঘেরাও করিয়েছিল বলেও অভিযোগ দক্ষিণ দুর্গাপুর চঞ্চলাময়ী বিদ্যাপীঠের ভারপ্রাপ্ত প্রধানশিক্ষকের। ১৯ জুলাই এই ঘেরাও চলাকালীন তাঁর কাছে ৭২ হাজার টাকা আদায় করা হয়েছিল পার্টটাইমারদের মাইনে দেওয়া হবে বলে। সে টাকা তিনি দিতে বাধ্য হয়েছিলেন বলে দাবি করেছেন এই ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক।

সম্প্রতি বিপ্লব পাত্র, সঞ্জীব মণ্ডলরা টিআইসি-র ঘরে তালাও ঝুলিয়ে দেন। এর ফলে তাঁকে এখন স্কুলের অন্য একটি রুমে বসতে হচ্ছে বলেও অভিযোগ করেছেন আশিস ভট্টাচার্য। বিপ্লব পাত্র, সঞ্জীব মণ্ডলরা অ্যাটেন্ডেন্সের খাতাও নিজেদের হেফাজতে রেখে দিয়েছেন। এমনকী, স্কুলের বহু গুরুত্বপূর্ণ ফাইলও মিসিং। ২০১৫ সাল থেকে স্কুলে ১৩ জনের গভর্মেন্ট স্পনসরড কমিটি ছিল। কিন্তু, ১০ জন নানা কারণ দেখিয়ে পদত্যাগ করার পর এখন সেখানে সদস্য সংখ্যা মাত্র ৩ জন। এই কমিটির প্রেসিডেন্ট তাপস পণ্ডা নিজের ক্ষমতা ধরে রাখতে বিপ্লব পাত্র, সঞ্জীব মণ্ডলদের মদত দিচ্ছেন বলেও তাঁর অভিযোগ। প্রেসিডেন্ট কোনওদিনই স্কুলে আসেন না। তিনি বাড়িতে থেকে বিপ্লব পাত্র, সঞ্জীব মণ্ডল, অলক দাসদের মাধ্যমে স্কুলের ফাইল-পত্রে নজরদারি চালান বলেও অভিযোগ করেছেন। এই সমস্ত ঘটনা একাধিকবার ডিআই থেকে শুরু করে স্কুল পরিদর্শক, থানা, এসডিও, বিডিও-কেও জানিয়েছেন। বহুবার শিক্ষা দফতর থেকে লোকজন এসে স্কুলের পরিস্থিতি খতিয়ে দেখেছেন। একাধিক ফাইলও নিয়ে গিয়েছেন। কিন্তু, এতকিছুর পরও বিপ্লব পাত্র, সঞ্জীব মণ্ডলরা সংযত হচ্ছেন না বলেও অভিযোগ করেছেন আশিস ভট্টাচার্য।

মঙ্গলবার থেকে স্কুলে ইউনিট টেস্ট, কিন্তু ২ দিন ধরে স্কুলেই আসছেন না ১০ শিক্ষক। বিপ্লব পাত্র, সঞ্জীব মণ্ডল, অলক দাসদের বিরুদ্ধে মহিলা কর্মীরাও স্কুলের বৈঠকে ক্ষোভ উগরে দিয়েছিলেন বলেও দাবি আশিস ভট্টাচার্যের। তিনি জানিয়েছেন, মহিলাকর্মীরা বিপ্লব পাত্রদের বিরুদ্ধে কটুক্তি ও টিটকিরি দেওয়ার অভিযোগ এনেছিলেন। ইন্দিরা পাড়ুই নামে এক শিক্ষিকার মাতৃত্বকালীন ছুটি শেষ হয়ে গিয়েছিল। কিন্তু, তাঁর আরও কিছুদিন ছুটি লাগবে বলে জানিয়েছিলেন ইন্দিরা। সেই কারণে ৮ অগাস্ট হাওড়া থেকে স্কুলে এসে ফের মাতৃত্বকালীন ছুটির মেয়াদ বৃদ্ধির আবেদন করেছিলেন তিনি। আশিস ভট্টাচার্যের অভিযোগ, কেন ইন্দিরা ফের ছুটি নিলেন এই নিয়েও তাঁকে হেনস্থা করতে ছাড়েননি বিপ্লব পাত্র, সঞ্জীব মণ্ডলরা।

[আরও পড়ুন:নামখানায় তৃণমূল নেতাদের সঙ্গে করে সহকর্মীদের পেটালেন প্রধানশিক্ষক, দেখুন আতঙ্কের সেই ভিডিও][আরও পড়ুন:নামখানায় তৃণমূল নেতাদের সঙ্গে করে সহকর্মীদের পেটালেন প্রধানশিক্ষক, দেখুন আতঙ্কের সেই ভিডিও]

স্কুলের নামে ৬০ লক্ষ টাকার দেনা রয়েছে। কিন্তু, এরজন্য কোনও শিক্ষকের কাছে কোনও দিন একটা পয়সা তিনি চাননি বলে জানিয়েছেন আশিস ভট্টাচার্য। এমনকী, সুর্বণ জয়ন্তীতে সাড়ে তিন হাজার টাকা করে যে চাঁদা দেওয়ার কথা বলা হচ্ছে তা শিক্ষররা স্বতপ্রণোদিত হয়েই দিয়েছিলেন বলেও দাবি তাঁর। এরজন্য প্রত্যেক শিক্ষককে রসিদও দেওয়া হয়েছিল। স্কুলের যে ডাইনিং হল নিয়ে অভিযোগ, তার ভিত খোঁড়া হয়ে গিয়েছে। খুব শিগগিরি সেই কাজ শুরু হয়ে যাবে বলেও জানিয়েছেন আশিস ভট্টাচার্য।

[আরও পড়ুন:নামখানার স্কুলে সহকর্মীদের মারধরে প্রধান শিক্ষকের নামে এফআইআর, গ্রেফতারের দাবি অম্বিকেশ মহাপাত্রর][আরও পড়ুন:নামখানার স্কুলে সহকর্মীদের মারধরে প্রধান শিক্ষকের নামে এফআইআর, গ্রেফতারের দাবি অম্বিকেশ মহাপাত্রর]

তাঁর আরও অভিযোগ, স্কুলে নানা অনিয়ম চালাচ্ছেন কিছু শিক্ষক। এই অনিয়মের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করাতেই তাঁকে নানাভাবে ফাঁসানোর চেষ্টা চলছে। সরকার অর্থ না দিলে তিনি কীভাবে স্কুলে নতুন বাথরুম বানাবেন তা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন আশিস ভট্টাচার্য। যদিও, তিনি এখনই থানা-পুলিশের মধ্যে যাচ্ছেন না বলেই জানিয়েছেন। আলোচনার মাধ্যমে সমস্যার বিহিত করতে চান বলেই জানিয়েছেন দক্ষিণ দুর্গাপুর চঞ্চলাময়ী বিদ্যাপীঠের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক।

English summary
২৩ অগাস্ট দক্ষিণ দূর্গাপুর চঞ্চলাময়ী বিদ্যাপীঠে বহিরাগতরা স্কুলের মধ্যে ঢুকে পড়ে শিক্ষকদের ঘিরে ফেলেছিল।
চটজলদি খবরের আপডেট পান
Enable
x
Notification Settings X
Time Settings
Done
Clear Notification X
Do you want to clear all the notifications from your inbox?
Settings X