তৃণমূলের ‘উত্তরাধিকারী’ হয়ে উঠছেন অভিষেক! মমতার দ্বিধা থাকলেও ‘ঢাল’ যে পিকে
তৃণমূলের ‘উত্তরাধিকারী’ হয়ে উঠছেন অভিষেক! মমতার দ্বিধা কাটাতে ‘ঢাল’ পিকে
এখনও পর্যন্ত, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কোনও রাজনৈতিক উত্তরাধিকারী বেছে নেননি। এ বিষয়ে যে কোনও আলোচনা তিনি সজ্ঞানে এড়িয়ে গিয়েছেন। তাঁর কথায়, "বাংলার মানুষ আমার পরিবার। বাংলার মানুষের উপর আমি কোনও রাজনৈতিক ইচ্ছাশক্তি প্রয়োগ করিনি। আমি পাঁচটি প্রজন্ম তৈরি করে রাখছি, যাঁরা আগামী দিনে দলকে এগিয়ে নিয়ে যাবেন।"
অভিষেকের পরামর্শে দায়িত্বে পিকে
২০১৯ সালের লোকসভা নির্বাচনে বিজেপির কাছে ধাক্কা খাওয়ার পর মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের তৃণমূল নড়বড়ে বলে মনে হয়েছে। সম্ভবত সেই কারণেই তিনি প্রশান্ত কিশোরকে দলের কৌশল নির্ধারণের দায়িত্ব দিয়েছেন। অভিষেকের পরামর্শে রাজি হয়েছেন প্রশান্ত কিশোরকে তৃণমূলের দায়িত্ব দিতে।
গুরুত্ব হ্রাস পেয়েছে শুভেন্দু-রাজীবদের
প্রশান্ত কিশোর দায়িত্বে আসার পর তৃণমূলের রদবদলে গুরুত্ব হ্রাস পেয়েছে শুভেন্দু অধিকারী, রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়দের। অথচ তাঁরা তৃণমূলের অন্যতম জনপ্রিয় নেতা। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ভিন্ন এই দুই নেতার জনভিত্তি প্রশ্নাতীত। তা্ঁরাই প্রকারান্তরে অভিষেকের অঙ্গুলিহেলনে দলে কোণঠাসা হয়ে গিয়েছেন।
অভিষেকই ব-কলমে সিদ্ধান্ত নিচ্ছেন!
এমতাবস্থায় প্রশ্ন উঠছে, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তবে কি অভিষেককেই তৃণমূলের উত্তরাধিকারী করে দিয়েছেন! এখন তো অভিষেকই ব-কলমে সিদ্ধান্ত নিচ্ছেন। প্রশান্ত কিশোরের রিপোর্টের আড়ালে অভিষেকের মত লুকিয়ে থাকছে বলেই অভিমত রাজনৈতিক মহলের একটা বড় অংশের।
অভিষেকের প্রতিযোগী হয়ে উঠতে পারেন যাঁরা
একুশের আগে দলে রদবদল করতে গিয়ে তৃণমূলে এমন কিছু সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে, যার খেসারত দিতে হতে পারে পরবর্তী সময়ে। অভিষেকের অনুগতদেরকে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। যাঁরা অভিষেকের প্রতিযোগী হয়ে উঠতে পারেন দলে, তাঁদের সাইড করে দেওয়া হয়েছে। অভিষেক যাতে দলের কর্তৃত্ব বজায় রাখতে পারেন, তার জন্য শুভেন্দু অধিকারী এবং রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়দের গুরুত্ব হ্রাস করা হয়েছে।
দলের খোলনোলচে বদলে ‘মাস্টারস্ট্রোক’
এবার তৃণমূলে জেলা পর্যবেক্ষক হিসাবে সিনিয়র ও রাজনৈতিকভাবে অভিজ্ঞ নেতাদের অপসারণ করা হয়েছে। পরিবর্তে প্রতিটি জেলায় চেয়ারম্যান, জেলা সভাপতি এবং কো-অর্ডিনেটর নিয়োগ করা হয়েছে। একটি সাত সদস্যের স্টিয়ারিং কমিটি করা হয়েছে, যারা মাথায় রাখা হয়েছে অভিষেককে।
দলে রদবদলের পর শুভেন্দুর সঙ্গে দূরত্ববৃদ্ধি
এই মর্মে শুভেন্দু অধিকারীর সঙ্গে তাঁর টক্কর লেগেছে। দলে রদবদলের পর থেকে শুভেন্দু অধিকারীর মতো নেতা দূরত্ব তৈরি করেছেন তৃণমূলের সঙ্গে। তিনি বিভিন্ন ক্ষেত্রেই সমান্তরাল জনসংযোগ চালাচ্ছেন। ক্যাবিনেট মন্ত্রী হয়েও ক্যাবিনেট মিটিংয়ে পর্যন্ত থাকছেন না। তবে মন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করে চলেছেন নিরলসভাবে।
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ভাইপো-প্রীতিতে বিপদ!
এই পরিস্থিতি দলের অন্দরে ক্ষোভের সঞ্চার করছে। প্রভাব পড়ছে জনমানসে, দলের সমর্থকরাও এই পরিস্থিতিতে ধন্দে পড়েছেন। অনেকে বলছেন, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ভাইপো-প্রীতি বা ভাইপোর উপর দল ছেড়ে দেওয়া বুমেরাং হতে পারে। একজন বিচক্ষণ রাজনীতিক হিসেবে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দেখা উচিত দলের কী ক্ষতি হচ্ছে!
তৃণমূলে আরও এক ‘পোস্ট’ অভিষেক!
এতদিন রাজনৈতিক মহলে বলতে শোনা যেত- তৃণমূলে একজন নেত্রী, বাকি সবাই সৈনিক। আর বিরোধী কটাক্ষ করে বলত- "তৃণমূলে একটিই ‘পোস্ট' আছে। বাকিগুলি ল্যাম্প-পোস্ট''। কিন্তু এখন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পাশাপাশি আরও একটি ‘পদ' তৈরি হয়েছে তৃণমূলে। তিনি অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। স্বভাবতই প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে, তবে কি ভবিষ্যতে তৃণমূলের ব্যাটন উঠতে চলেছে তাঁর হাতেই।
একুশের যুদ্ধে বিজেপিকে হারাতে তিন 'ব্রহ্মাস্ত্র’ তৃণমূলের, গড় দখলে রাখতে মাস্টারস্ট্রোক