দিদির ব্যর্থতার রিপোর্ট কার্ড বানিয়ে রাজ্যে প্রচারে ‘ভাইয়ের দল’, চাপ বাড়ছে তৃণমূলের
দিদির ব্যর্থতার রিপোর্ট কার্ড বানিয়ে রাজ্যে প্রচারে ‘ভাইয়ের দল’, চাপ বাড়ছে তৃণমূলের
জাতীয় রাজনীতিতে একে অপরের সখ্যতার ছবি সবার জানা। যখনই বিপদে পড়েছেন একে অপরের পাশে দাঁড়িয়েছেন। কিন্তু এবার তাঁরা সম্মুখ সমরে অবতীর্ণ হতে চলেছেন। বাংলার মাটিতেই এবার দিদি বনাম ভাইয়ের লড়াই আসন্ন। আসন্ন পঞ্চায়েত নির্বাচনের আগেই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ব্যর্থতার রিপোর্ট কার্ড পেশ করতে চলেছেন ভাই অরবিন্দ কেজরিওয়াল।
মমতার ঘুম উড়তে পারে ভাই কেজরির পদার্পণে
এতদিন শুধু বিজেপি, সিপিএম বা কংগ্রেসকে বলতে শোনা যেত মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ব্যর্থতার কথা। এবার তা শোনা যাবে অরবিন্দ কেজরিওয়ালের মুখে। সোমবার কলকাতায় সাংবাদিক বৈঠক করে কেজরিওয়ালের আম আদমি পার্টি যা দাবি করল, তাতে ঘুম উড়তে পারে তৃণমূল কংগ্রেস ও তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের।
আপ রিপোর্ট কার্ড বানাচ্ছে তৃণমূলের বিরুদ্ধে
কেজরিওয়ালের আম আদমি পার্টির পক্ষ থেকে দাবি করা হয়েছে মমতা বন্যোাতপাধ্যায়ের কর্মতীর্থ প্রকল্প চূড়ান্ত ব্যর্থ হয়েছে। তা এখন ভুতুড়ে বাড়ি হয়ে দাঁড়িয়েছে। কর্মতীর্থ থাকলেও কর্মসংস্থানের কোনও রূপরেখা নেই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বাংলায়। এমন আরও কিছু ব্যর্থতার ছবি তুলে ধরে আম আদমি পার্টি রিপোর্ট কার্ড বানাতে চাইছে তৃণমূল সরকারের বিরুদ্ধে।
দিদির ব্যর্থতাও চোখে আঙুল দিয়ে দেখাবে আপ
অরবিন্দ কেজরিওয়ালের দল কলকাতায় পেট্রোল ও ডিজেলের মূল্যবৃদ্ধির প্রতিবাদে মিছিল করেছে। কেন্দ্রের মোদী সরকারের বিরুদ্ধে তাঁদের ক্ষোভ উগরে দিয়েছে। কিন্তু তারা শুধু মোদী সরকারের বিরুদ্ধে মুখ খুলেই ক্ষান্ত থাকবে না বাংলায়। বাংলায় পা দিয়ে তাঁরা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ব্যর্থতাও চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দেবে এবার।
কর্মতীর্থের অনেক ভবনই ভুতুড়ে বাড়িতে পরিণত
আম আদমি পার্টির পক্ষে বাংলার দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতা সঞ্জয় বসু বলেন, বাংলা কর্মসংস্থানে পিছিয়ে পড়ছে ক্রমশ। সরকারি অর্থে নানা প্রকল্প ও ভবন তৈরি করলেও, সেখান থেকে কোনও কর্মসংস্থান তৈরি করতে পারছে না। কর্মতীর্থের অনেক ভবনই ভুতুড়ে বাড়ির হয়ে পড়ে রয়েছে। মমতার বিরুদ্ধে এমনই ব্যর্থতার ডালি সাজিয়ে তাঁরা রাস্তায় নামবেন বলে জানিয়েছেন।
বাংলার বিরুদ্ধে কর্মসংস্থান বা বেকারত্বের ইস্যু
আম আদমি পার্টি বাংলায় জাল বিছোচ্ছে। কিন্তু কোনও তাড়াহুড়ো করতে নারাজ তারা। আম আদমি পার্টি একটু একটু করে সংগঠন বাড়ানোর উদ্যোগ নিয়েছে। আগামী চার বছরের জন্য তারা নির্ধারিত লক্ষ্যমাত্রা নিয়েছে। তারা এখন থেকেই তথ্য সংগ্রহ করছে কোন জেলায় কর্মতীর্থের হাল কেমন। মোট কথা রাজ্যের বিরুদ্ধে কর্মসংস্থান বা বেকারত্বের ইস্যু খাঁড়া করতে চাইছে আম আদমি পার্টি।
মূল লক্ষ্য হবে ২০২৬-এর বিধানসভা নির্বাচন
এবারই দিল্লির পর পাঞ্জাবে সরকার গড়তে সক্ষম হয়েছে আম আদমি পার্টি। তারাই একমাত্র আঞ্চলিক দল, যাদের দ্বিতীয় কোনও রাজ্যে একক সরকার রয়েছে। এবার তারা নজর দিয়েছে বাংলার দিকে। বাংলায় তারা সংগঠন বিস্তার করতে তৎপর হচ্ছে। প্রাথমিকভাবে আগামী বছরের পঞ্চায়েত ভোটকে পাখির চোখ করে এগোচ্ছে আম আদমি পার্টি। তাদের মূল লক্ষ্য হবে ২০২৬-এর বিধানসভা নির্বাচন।
এক বছর ধরে কর্মতীর্থ প্রকল্পের তথ্য সংগ্রহ
আম আদমি পার্টির পক্ষ থেকে দাবি করা হয়েছে, তাঁরা গত এক বছর ধরে রাজ্যের কর্মতীর্থ প্রকল্প নিয়ে তথ্য সংগ্রহ করেছে। কোথায় কোথায় কর্মতীর্থ প্রকল্পে কী কাজ হয়েছে তা তথ্য জানার অধিকার আইনে তাঁরা জেনেছেন। সেইসঙ্গে জেলায় জেলায় কর্মতীর্থ ভবনগুলির পরিস্থিতিও খতিয়ে দেখা হয়। এখন আদতে কর্মতীর্থ ভবনগুলি সবুজ সাথী প্রকল্পের গুদাম ঘরে পরিণত হয়েছে।
‘আমরা চাই দিল্লির মডেল বাংলায় প্রয়োগ করতে’
আপ নেতা সঞ্জয় বসু বলেন, দিল্লিতে আম আদমি পার্টির সরকার দেখিয়ে দিয়েছে কীভাবে পরিকল্পনা কষে কর্মসংস্থান করতে হয়। কিন্তু বাংলার সরকার একেবারে ব্যর্থ এই কাজে। আমরা চাই দিল্লির মডেল বাংলায় প্রয়োগ করতে। আগামী দিনে দিল্লির সরকার গোটা ভারতের মডেল হবে, এই বিশ্বাস রয়েছে তাদের।