‘আমার যেন ফাঁসি হয়, আমি আর বাঁচতে চাই না’, কান্নায় ভেঙে পড়ে বলল উদয়ন
‘আমার যেন ফাঁসি হয়। আমি আর বাঁচতে চাই না। আকাঙ্ক্ষার মুখটা খুব মনে পড়ছে।’ তদন্তকারীদের সামনে নিজেকে এভাবেই প্রকাশ করল আকাঙ্খা হত্যাকাণ্ডে অভিযুক্ত সাইকো কিলার উদয়ন দাস।
বাঁকুড়া, ১০ ফেব্রুয়ারি : 'আমার যেন ফাঁসি হয়। আমি আর বাঁচতে চাই না। আকাঙ্ক্ষার মুখটা খুব মনে পড়ছে।' তদন্তকারীদের সামনে নিজেকে এভাবেই প্রকাশ করল আকাঙ্খা হত্যাকাণ্ডে অভিযুক্ত সাইকো কিলার উদয়ন দাস। চারদিন টানা জেরার পর এই স্বীকারোক্তিতে ধন্দে পুলিশও। সত্যিই কি উদয়ন ভেঙে পড়েছে। না কি তার এই কান্নার পিছনে রয়েছে অন্য কোনও অভিসন্ধি?[আমেরিকান সিনেমা 'ডেভিলস নট'-এর অনুকরণে আকাঙ্ক্ষা খুনের ছক উদয়নের!]
এদিন পুলিশের কাছে কান্নায় ভেঙে পড়ে খুনের কথা স্বীকার করেছে উদয়ন। কিন্তু আকাঙ্ক্ষাকে খুন, তা নিয়ে সেই ত্রিকোণ প্রেমের তত্ত্বেও আটকে রয়েছে সে। পুলিশি জেরায় সে জানিয়েছে, আকাঙ্ক্ষার সঙ্গে সামাজিক মাধ্যম অর্কুটে নয়, আলাপ হয়েছিল জয়পুর বিমান বন্দরে। তারপরই তারা সোশ্যাল মিডিয়ায় যোগাযোগ রাখত। ধীরে ধীরে ঘনিষ্ঠতা বাড়ে। তারা একসঙ্গে থাকতেও শুরু করে।[শহরের আতঙ্ক এবার 'ফেসবুক কিলার'!]
পুলিশি জেরায় এদিন সে আরও জানিয়েছে, ২০০৭ সালে তাঁদের আলাপ। তখন দু'জনেই তাঁরা পড়ুয়া। সেই থেকে ২০১৬ সাল পর্যন্ত মোট ১৪ বার ভোপালে এসেছে আকাঙ্ক্ষা। কলকাতার হোটেলেও তারা একসঙ্গে ছিল। কিন্তু প্রশ্ন সেখানেই, এত যখন ঘনিষ্ঠতা, তো প্রেমিকাকে খুন করতে গেল কেন উদয়ন? উদয়ন সেই ত্রিকোণ প্রেমের তত্ত্বই তুলে ধরছে।[২০১০ সালে বাবা-মাকে শ্বাসরোধ করে হত্যা করেছিল উদয়ন, খুনের মোটিভ চমকে দেওয়ার মতো]
আকাঙ্ক্ষার অন্য বন্ধুর পাশাপাশি তদন্তে উঠে এসেছে উদয়নের ছোটবেলার এক বান্ধবীর কথাও। সম্প্রতি উদয়নের সঙ্গে তার ছোটবেলার একবান্ধবীর ঘনিষ্ঠতা বেড়েছিল। তা নিয়েই উদয়ন ও আকাঙ্ক্ষার সম্পর্কের অবনতি। পুলিশ এই বিষয়গুলি খতিয়ে দেখছে। পাশাপাশি খুনের মোটিভ হিসেবে প্রেমের সম্পর্ক ছাড়াও উঠে আসছে টাকা হতানোর পরিকল্পনাও। পুলিশ জানতে পেরেছে মাও প্রেমিকাকে খুন করার পর তাদের গয়না বিক্রি করেছিল উদয়ন।[ফেসবুকে 'রূপকথার সাম্রাজ্য' গড়েছিল সিরিয়াল কিলার উদয়ন দাস!]
তদন্তকারীরা ইতিমধ্যেই একটি টিকিটও উদ্ধার করেছে। রেলের যে টিকিট জানাচ্ছে আকাঙ্ক্ষা ভোপাল থেকে হাওড়া আসার জন্য টিকিট কেটেছিলেন। পুলিশের ধারণা, বাঁকুড়ায় বাড়িতে ফিরতে চেয়েছিলেন তিনি। কিন্তু আকাঙ্ক্ষা যদি ফিরে আসে, তবে উদয়নের সমস্ত মিথ্যা ফাঁস হয়ে যাবে। তার স্বরূপ প্রকাশ হয়ে পড়বে। তাই আকাঙ্ক্ষার বাঁকুড়া ফেরা আটকাতেই পরিকল্পনা করে খুন করা হয় তাঁকে।