মারণ তিমির খেলায় প্রায় উন্মাদ হল ছাত্র, বাঁকুড়ার ঘটনা রাজ্য প্রশাসনের চিন্তা বাড়াতে পারে
মারণ নীল তিমির খেলার আরও এক শিকার এই বাংলায়। এবার বাঁকুড়ার এক ছাত্রের কথা সামনে চলে এল। প্রায় উন্মাদ হতে বসা ওই ছাত্রকে বাঁকুড়া মেডিক্যাল কলেজে নিয়ে যাওয়া হয়।
মারণ নীল তিমির খেলাটা ঠিক কী? তা গত এক মাসে জেনে গিয়েছে বাংলার জনতা। কিন্তু, যেভাবে সেই মারণ খেলার গ্রাসে তলিয়ে যেতে বসেছে এই বাংলার তরুণ প্রজন্ম তাতে চিন্তা বাড়ছে রাজ্য প্রশাসনের। কলকাতা থেকে বারাসত, হুগলি থেকে বীরভূম, মালদহ থেকে শিলিগুড়ি সবখানেই মিলছে মারণ নীল তিমির খেলায় মেতে থাকাদের খোঁজ। আর এর অধিকাংশটাই হল স্কুল পড়ুয়া অথবা কলেজ পড়ুয়াদের দল।
শুক্রবার রাতে বাঁকুড়ায় এক ছাত্রের হদিশও মেলে যে এই মারণ নীল তিমির খেলায় মেতেছিল। খেলার মধ্যে সে এতটাই ডুবে ছিল যে মধ্যরাতে উন্মাদের মতো ব্যবহারও শুরু করে সেই ছাত্র। গভীররাতে এক বন্ধুর সঙ্গে যে ভাবে ওই ছাত্র ফোনে কথা বলছিল তাতে সন্দেহ বাড়ে আশপাশের লোকের। দিন কয়েক ধরেই সকলের কানে পৌঁছেছে ইন্টারনেটের নীল তিমির মারণ গেমের কথা। একাদশ শ্রেণির ছাত্রটির হাত থেকে ফোন কেড়ে নিতেই সে উন্মাদের মতো আচরণ শুরু করে। বলে, রাত ১১টায় তার ডাক আসবে এবং সেই ডাক উপেক্ষা করা যাবে না। তাকে এখনই মোবাইল কিনতে যেতে হবে। ছাত্রটি নাকি আরও বলে যে ওই ডাকে সাড়া না দিলে তার এবং বাড়ির লোকের সর্বনাশ হয়ে যাবে।
এই ঘটনার পরই স্থানীয় লোকজন পুলিশকে খবর দেয়। পুলিশ এসে জেরা করতেই একাদশ শ্রেণির ছাত্রটি স্বীকার করে সে মারণ নীল তিমির খেলায় অংশ নিয়েছে এবং বেশকিছু টাস্কও পূরণ করেছে। এই খেলা আসলে তাকে মৃত্যুর দিকে নিয়ে যাচ্ছে বলেও পুলিশ নানাভাবে ওই ছাত্রকে বোঝানোর চেষ্টা করে। মারণ নীল তিমির এই গেম খেলতে গিয়ে অনেকেই প্রাণ হারিয়েছেন বলেও পুলিশ জানায়। কিন্তু, এতেও ওই ছাত্রের আচরণ স্বাভাবিক না হওয়ায় রাতেই তাঁকে বাঁকুড়া মেডিক্যাল কলেজে নিয়ে যাওয়া হয়। তার কাউন্সেলিংও করা হয়। এরপরও নাকি অবুঝের মতো আচরণ করতে থাকে ওই ছাত্র।
বৃহস্পতিবার বারাসতে ২ ছাত্রীর অস্বাভাবিক আচরণ দেখে সন্দেহ হয়েছিল সাধারণ মানুষের। পরে জানা যায় দু'জনেই মারণ নীল তিমির খেলায় অংশ নিয়েছে। শুক্রবার হুগলির একটি ঘটনাও সামনে আসে। শিক্ষকের তৎপরতায় ওই মারণ গেম খেলা বন্ধ করে দশম শ্রেণির এক ছাত্র। বেলদাতেও এক ছাত্রকে বুঝিয়ে ওই গেম থেকে বের করে নিয়ে আসেন অন্য এক শিক্ষক। এই সব ঘটনার কিছুদিন আগেই কলকাতার কালীঘাটে এক ছাত্রের আত্মঘাতী হওয়ার ঘটনা ঘটে। এর পিছনে মারণ নীল তিমির খেলা থাকতে পারে বলেও সন্দেহ করা হচ্ছে। এর আগে কলকাতারই এক ইঞ্জিনিয়ারিং ছাত্রের কথাও সামনে আসে। যে শিক্ষক ও সিআইডির কাউন্সেলিং-এ প্রায় মৃত্যুর মুখ থেকে ফিরে এসেছিল।