বন্যার পরই ফুঁসে উঠেছে গঙ্গা, আস্ত একটা স্কুলের গঙ্গাপ্রাপ্তি, দেখুন ভিডিও
মালদহের বন্যার পর গঙ্গাভাঙন ভয়ঙ্কর রূপ ধারণ করে। স্বল্পদিনের মধ্যেই গঙ্গা গ্রাস করে নেয় আস্ত স্কুলকে। সেচ দফতররে তরফে সমস্তরকম ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছিল। কিন্তু শেষরক্ষা হয়নি।
গঙ্গাবঙ্গে তলিয়ে গেল আস্ত একটা স্কুল। বন্যার পর ভাঙন তীব্র রূপ নিতেই মালদহের কালিয়াচকের পার অনুপনগর প্রাথমিক বিদ্যালয় গঙ্গায় তলিয়ে যায়। মঙ্গলবার শিক্ষকদিবসের দিন প্রায় পুরো স্কুলটাই নিশ্চিহ্ন হয়ে গেল। স্কুলের অফিসঘর ও তিনটি শ্রেণিকক্ষ একে একে গঙ্গাগর্ভে তলিয়ে যায় এদিন। এখন সবেধন নীলমণি একটি মাত্র শ্রেণিকক্ষ। সেটিরও যেকোনও মুহূর্তে গঙ্গাপ্রাপ্তি ঘটতে পারে।
১৯৮৩ সালে এই স্কুলের স্থাপন হয়। পার দেওনাপুরের পার অনুপনগর স্কুল স্থাপনের সময় গঙ্গা থেকে বেশ দূরেই ছিল। কিন্তু ক্রমশই গঙ্গার গ্রাসে তলিয়ে যেতে থাকে সামনের সমস্ত জমি। সম্প্রতি মালদহের বন্যার পর গঙ্গাভাঙন ভয়ঙ্কর রূপ ধারণ করে। স্বল্পদিনের মধ্যেই গঙ্গা গ্রাস করে নেয় আস্ত স্কুলকে। সেচ দফতররে তরফে সমস্তরকম ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছিল। কিন্তু শেষরক্ষা হয়নি।
মোট ১৬০ জন ছাত্রছাত্রী ও ১০ শিক্ষক রয়েছেন এই স্কুলে। ছাত্রছাত্রীদের পঠনপাঠন এখন শিকেয় উঠেছে। অনিশ্চয়তা গ্রাস করেছেন অভিভাবকদের। আশঙ্কায় দিন গুণছেন শিক্ষকরাও। তাঁরাও জানেন না কবে আবার পাঠদান শুরু করতে পারবেন। এই অবস্থায় ছাত্রছাত্রীদের পড়াশোনাও ক্ষতির মুখে।
বন্যার প্রকোপ একটু কমতেই স্কুল বাঁচাতে উদ্যোগ নেওয়া হয়েছিল সেচ দফতরের পক্ষ থেকে। বোল্ডার ফেলে, বালির বস্তা ফেলে কড়ি কাঠ ও তার দিয়ে বাঁধা হয়েছিল গঙ্গার পাড়। কিন্তু গঙ্গার তীব্র ভাঙনে সেসব কিছুই বাধ মানেনি। সবকিছু গ্রাস করে নেয় গঙ্গা। এবার গঙ্গা গিলতে শুরু করে স্কুলকে। শিক্ষক দিবসের দিনেই স্কুলের প্রায় পুরো অংশটাই গঙ্গায় তলিয়ে যায়।
গঙ্গার ভাঙনে মালদহের কালিয়াচক ৩ নম্বর ব্লকের অবস্থা শোচনীয়। একটু একটু করে প্রতিদিনই গঙ্গা স্থলভূমিকে গ্রাস করে নিচ্ছে। ভাঙছে বাড়ি-ঘর, স্কুলবাড়ি, জমি-জায়গা। বৈষ্ণবনগরের বাসিন্দারা আতঙ্কে ভিটে-মাটি ছেড়ে অন্যত্র চলে যাচ্ছেন। আগস্ট মাসের শেষ সপ্তাহ থেকে গঙ্গা ভাঙন সাংঘাতিক রূপ নেয় এলাকায়। কী করে এই ভাঙন রোধ করা সম্ভব হবে, তাই এখন কপালে ভাঁজ ফেলেছে সেচ দফতরের আধিকারিকদের।
বন্যার জেরে ক্ষতিগ্রস্থ পরিবার ওই স্কুলে আশ্রয় নিয়েছিল। ভাঙন শুরু হতে তাঁদের সরিয়ে নেওয়া হয়। সরিয়ে নেওয়া হয়েছিল স্কুলের গুরুত্বপূর্ণ নথিপত্র। বন্যার পর স্কুল শুরু হলেও দিন কয়েক আগে ভাঙনের জন্য ছুটি দিয়ে দেওয়া হয় ছাত্রছাত্রীদের। এখন স্কুলটাই না থাকায় তাদের ভবিষ্যৎই ঘোর অনিশ্চয়তায়।