মানুষের স্বার্থেই বন্ধ হোক গঙ্গাসাগর মেলা, কলকাতা হাইকোর্টে মামলা বিশিষ্ট চিকিৎসকের
মানুষের স্বার্থেই বন্ধ হোক গঙ্গাসাগর মেলা, কলকাতা হাইকোর্টে মামলা বিশিষ্ট চিকিৎসকের
নতুন বছরের শুরুতেই একলাফে কয়েকগুণ বেড়ে গিয়েছে করোনা সংক্রমণ। করোনার বাড়বাড়ন্তের জেরে আংশিক লকডাউনের পথে হাঁটতে বাধ্য হয়েছে রাজ্য সরকার। কিন্তু গঙ্গাসাগর মেলা নিয়ে কোনও সিদ্ধান্ত নেয়নি নবান্ন। করোনার এই ঊর্ধ্বমুখী গ্রাফের মধ্যে গঙ্গাসাগর মেলা বন্ধের আবেদন জানিয়ে কলকাতা হাইকোর্টে মামলা করলেন এক চিকিৎসক।
বিশিষ্ট চিকিৎসক অভিনন্দন মণ্ডল কলকাতা হাইকোর্টে মামলা রুজু করে জানান, রাজ্যে যে হারে বাড়ছে করোনা সংক্রমণ। তাতে ভয়াবহ দিন আসছে। এখনও সাবধান না হলে তার মাশুল গুনতে হবে। ইতিমধ্যে দুটি বড় উৎসব পালন করতে গিয়ে করোনার সংক্রমণ লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে রাজ্যে। তারপর যদি ফের গঙ্গাসাগর মেলা হয়, তাহলে করোনার সংক্রমণ ছেয়ে যেতে পারে।
সোমবার কলকাতা হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চে গঙ্গাসাগর মেলা বন্ধ করার আবেদন জানিয়ে জনস্বার্থ মামলা করেন চিকিৎসক। সেই মামলার শুনানি হবে ৫ জানুয়ারি অর্থাৎ বুধবার। চিকিৎসক দাবি করেন, গঙ্গাসাগর মেলায় বিভিন্ন রাজ্য থেকে মানুষজন আসেন। বিভিন্ন প্রান্তের মানুষ একত্রিত হন বাংলার বিখ্যাত ওই মেলা প্রাঙ্গনে। রাজ্য সরকরারে দেওয়া তথ্যই বলছে ৩০ লক্ষেরও বেশি মানুষের সমাগম ঘটে।
তিনি বলেন, এই জনসমুদ্রে কখনই দূরত্ব বিধি মেনে চলা সম্ভব নয়। সম্ভব নয়, অন্যান্য কোভিড প্রোটোকলকে মান্যতা দেওয়া। তাই বিপু পরিমাণ জন সমাগম মানে গোষ্ঠী সংক্রমণের আশঙ্কা থেকেই যায়। এর ফলে স্বাস্থ্য-ব্যবস্থা ভেঙে পড়ার সম্ভাবনা থাকছে। সংক্রমিত মানুষজনকে চিকিৎসা দেওয়া অসম্ভব হয়ে দাঁড়াবে। তাই এই করোনা মহামারীর সময়ে গঙ্গাসাগর মেলা মানুষের স্বার্থেই এবার বন্ধ রাখা উচিত।
বড়দিন ও বর্ষবরণের উৎসবের আবহে করোনার তৃতীয় ঢেউ আছড়ে পড়েছে বাংলায়। সংক্রমণ লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়তে থাকায় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার বাধ্য হয়েছে বিধি-নিষেধ আরোপ করতে। নতুন বছরের শুরু থেকেই করোনা সংক্রমণের গ্রাফ ঊর্ধ্বমুখী হয়েছে। এই পরিস্থিতিতে রাজ্য সরকার আংশিক লকডাউনের রাস্তায় হাঁটলেও গঙ্গাসাগর মেলা নিয়ে কোনও সুস্পষ্ট সিদ্ধান্ত এখনও জানায়নি।
করোনা ভাইরাসের অতি-সংক্রমণ শুরু হওয়ায় নবান্ন বাংলার জেলায় জেলায় দুয়ারে সরকার ক্যাম্প স্থগিত করার সিদ্ধান্ত নেয় আগেই। রবিবার ২ জানুয়ারি থেকে শুরু হওয়ার কথা ছিল দুয়ারে সরকার শিবির। শনিবারই তা স্থগিত রাখার কথা জানিয়ে দেওয়া হয় রাজ্য সরকারের তরফে। তারপর রবিবার মুখ্যসচিব হরিকৃষ্ণ দ্বিবেদী করোনা বিধি জারি করার ঘোষণায় জানান, দুয়ারে সরকার একমাস পিছিয়ে দেওয়া হচ্ছে। কিন্তু গঙ্গাসাগর মেলা নিয়ে কোনও সিদ্ধান্ত জানানো হয়নি। তারপরই এদিন জনস্বার্থ মামলা হল হাইকোর্টে।