গ্রেফতার সিপিএম জোনাল সম্পাদকও, তৃণমূল-সিপিএম গোপন বৈঠকে তৈরি হয় থানা হামলার ব্লু-প্রিন্ট!
এবার আউশগ্রাম কাণ্ডে গ্রেফতার হলেন সিপিএমের গুসকরা জোনাল কমিটির সম্পাদক সুরেশ হেমব্রম। তৃণমূল ও সিপিএম ছক কষেই পুলিশকে ‘শায়েস্তা’ করতে এই কাণ্ড ঘটিয়েছেন বলে ধারণা তদন্তকারীদের।
বর্ধমান, ৩০ জানুয়ারি : আগেই আউশগ্রাম থানা আক্রমণের ঘটনায় রাজধর্ম পালন করে নিজের দলের কাউন্সিলরকে গ্রেফতার করতে পুলিশকে নির্দেশ দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেইমতো তৃণমূল কংগ্রেস কাউন্সিলর চঞ্চল গড়াই গ্রেফতার হন। এবার আউশগ্রাম কাণ্ডে গ্রেফতার হলেন সিপিএমের গুসকরা জোনাল কমিটির সম্পাদক তথ্য বর্ধমান জেলা পরিষদের বিরোধী দলনেতা সুরেশ হেমব্রম।
গুসকরার
তৃণমূল
ও
সিপিএম
ছক
কষেই
পুলিশকে
'শায়েস্তা'
করতে
এই
কাণ্ড
ঘটিয়েছেন
বলে
প্রাথমিক
তদন্তে
ধারণা
তদন্তকারীদের।
মুখ্যমন্ত্রী
মমতা
বন্দ্যোপাধ্যায়
একদিন
আগেই
ঘোষণা
করেছেন,
সরকারি
সম্পত্তি
বা
বেসরকারি
সম্পত্তি
ধ্বংস
করলে
আক্রমণকারীর
কাছ
থেকে
ক্ষতিপূরণ
আদায়
করবে
সরকার।
প্রয়োজনে
তাঁর
বাড়ি
ক্রোক
করে
সম্পত্তি
আদায়
করা
হবে।
এমন
বিলই
বিধানসভায়
আনতে
চলেছেন
তিনি।
সেই
ঘোষণার
একদিন
পরেই
ফের
আউশগ্রামে
থানা
জ্বলল।
পুড়িয়ে
ছারখার
করে
দেওয়া
হল
সরকারি
সম্পত্তি।
কঠোর ভূমিকা পালন করে সঙ্গে সঙ্গে রাজধর্ম পালনের নির্দেশ দেন মুখ্যমন্ত্রী। মুখ্যমন্ত্রীর সবুজ সঙ্কেত পেয়েই তৃণূল কাউন্সিলর চঞ্চল গড়াইকে শনিবার রাতে গ্রেফতার করা হয়। রবিবার সিপিএমের জোনাল সম্পাদককে আটক করে দফায় দফায় জেরা করার রাতে গ্রেফতার করা হয় তাঁকে। পুলিশের দাবি, থানা ভাঙচুর থেকে পুলিশ পেটানো- পুরো ঘটনায় পূর্ব পরিকল্পিত। পুলিশকে কোণঠাসা করতে সিপিএম ও তৃণমূল কংগ্রেস হাত মিলিয়েছিল বলেও পুলিশের দাবি।
পুলিশ তদন্ত নেমে জানতে পেরেছে, নিজেদের মধ্যে গোপন বৈঠক করে থানায় হামলার ব্লু-প্রিন্ট তৈরি করা হয়েছিল। এলাকায় রাজনৈতিক প্রভাব বোঝাতেই এই হামলা। পুলিশকে 'উচিত শিক্ষা' দেওয়াই ছিল তাঁদের মূল উদ্দেশ্য। পরিকল্পনামাফিকই তাঁরা স্কুলের জমিতে বেআইনি নির্মাণের ইস্যুটিকে হাতিয়ার করে। এবং এই ইস্যু তুলে ধরে সাধারণকে ইন্ধন দেয় থানায় হামলা চালাতে।
কিন্তু পুলিশেরর এইন তত্ত্বে খারিজ হয়ে যায় না তাঁদের প্রশাসনিক অবস্থান। কেন তাঁরা আগে থেকে সঠিক ব্যবস্থা নিয়ে প্রশমিত করতে পারেনি গণবিক্ষোভ? সেই দায় এড়াতে পারে না পুলিশ। পুলিশ বেআইনি নির্মাণকারীদের বিরুদ্ধে চটজলদি কোনও ব্যবস্থা নিলে, এই পরিস্থিতি তৈরি হত না বলেই প্রাক্তন পুলিশ কর্তাদের মত। প্রাক্তন পুলিশ কর্তারাই এখন প্রশ্ন তুলে দিয়েছে বর্তমান পুলিশ-প্রশাসনের ভূমিক নিয়ে।
ধৃত সিপিএম নেতার স্ত্রী থানায় হামলার পিছেন তাঁর স্বামীর ভূমিকা ছিল না বলে দাবি করেছেন। তিনি বলেন, ঘটনার সময় তাঁর স্বামী আউশগ্রামেই ছিলেন না, ছিলেন দুর্গাপুরে। পরে তিনি এলাকায় এসে অবরোধ তুলতে সাহায্য করেছিলেন। পুলিশ দুই রাজনৈতিক নেতা-সহ ধৃতদের বিরুদ্ধে খুনের চেষ্টা, কর্তব্যরত অবস্থায় সরকারি কর্মীকে আঘাত, সরকারি সম্পত্তি নষ্ট-সহ একাধিক জামিন অযোগ্য ধারায় মামলা রুজু করা হয়েছে।
চঞ্চল গড়াই-সহ তিনজনকে দু'দিনের পুলিশ হেফাজতে নেওয়া হয়েছে. বাকিদের আটদিনের জেল হেফাজত। সোমবার সিপিএম জোনাল সম্পাদককে আদালতে পেশ করে নিজেদের হেফাজতে চাইবে। তারপর দুই নেতাকে বসিয়ে জেরা করতে পারে পুলিশ।