জ্বর-কাশি নিয়ে কলকাতার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ২০ জন শিশু! জলপাইগুড়িতে একজনের মৃত্যু ঘিরে বাড়ছে আতঙ্ক
ক্রমশ জটিল হচ্ছে পরিস্থিতি। জলপাইগুড়ির পাশাপাশি কলকাতাতেও শিশুদের মধ্যে অসুস্থতার সংখ্যা বাড়ছে। পার্ক সার্কাসের একটি বেসরকারি হাসপাতালে ২০ জন শিশু চিকিৎসাধীন বলে জানা যাচ্ছে। শুধু তাই নয়, ২০ জনের মধ্যে ৮ জন শিশু আইসিইউতে
ক্রমশ জটিল হচ্ছে পরিস্থিতি। জলপাইগুড়ির পাশাপাশি কলকাতাতেও শিশুদের মধ্যে অসুস্থতার সংখ্যা বাড়ছে। পার্ক সার্কাসের একটি বেসরকারি হাসপাতালে ২০ জন শিশু চিকিৎসাধীন বলে জানা যাচ্ছে। শুধু তাই নয়, ২০ জনের মধ্যে ৮ জন শিশু আইসিইউতে চিকিৎসাধীন বলে জানা যাচ্ছে।
চিকিৎসাধীন সমস্ত শিশুর মধ্যেই জ্বর এবং কাশি রয়েছে বলে দাবি চিকিৎসকদের। তবে চিকিৎসাধীন সমস্ত শিশুর ইতিমধ্যে করোনা পরীক্ষা করা হয়েছে। করা হয়েছে ডেঙ্গি এবং ম্যালেরিয়ার পরীক্ষাও। কিন্তু সমস্ত রিপোর্ট নেগেটিভ বলে জানা যাচ্ছে। তবে কি কারনে এত শিশু আক্রন্ত হচ্ছেন তা নিয়ে উদ্বেগ বাড়ছে।
তবে চিকিৎসকদের প্রাথমিক অনুমান, শিশুরা সবাই ভাইরাল নিউমোনিয়াতে আক্রান্ত। তবে এই সময়ে এমন ভাইরাল হয় না। কিন্তু কেন এমন ভাইরালে শিশুরা আক্রান্ত হচ্ছেন সেটাই ভাবাচ্ছে আধিকারিকদেরও। তবে এর জন্যে আবহাওয়ার পরিবর্তনকে দায়ী করছেন চিকিৎসকরা।
অন্যদিকে জলপাইগুড়ি নিয়েও যথেষ্ট উদ্বেগ বাড়ছে চিকিৎসকদের মধ্যে। জলপাইগুড়ি হাসপাতালে প্রবল জ্বর নিয়ে ভর্তি ১৫০ এরও বেশি শিশু। মঙ্গলবার নতুন করে আক্রান্ত হয়ে আরও বেশ কয়েকজন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। হাসপাতালের বহির্বিভাগেও একই পরিস্থিতি। তবে আশঙ্কাজনক অবস্থায় ২ শিশুকে উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজে রেফার করা হয়েছে।
অন্যদিকে একজন শিশুর মৃত্যুর খবর পাওয়া গিয়েছে। ফলে চিকিৎসকদের জন্যে আরও চিন্তার কারণ হয়ে উঠছে। তবে জলপাইগুড়ি সদর হাসপাতালের ভারপ্রাপ্ত সুপার রাহুল ভৌমিক জানিয়েছেন, ইতিমধ্যে ডেঙ্গি, ম্যালেরিয়া ফোকাস, কোভিড টেস্ট করে ভর্তি, কোভিড পাইনি, আবহাওয়া পরিবর্তনের জন্য, মল-মূত্রের নমুনাও পাঠানো হয়েছে।
অন্যদিকে হাসপাতাল সূত্রে খবর, মূলত ৩ থেকে ৯ বছরের যে শিশুরা বেশি অসুস্থ হচ্ছে। তাদের বেশিরভাগই ময়নাগুড়ি, ক্রান্তি, ধূপগুড়ি, হলদিবাড়ির বাসিন্দা। প্রত্যেকের জ্বর রয়েছে। পাশাপাশি আরও বেশ কয়েকটি উপসর্গ রয়েছে। ইতিমধ্যে বৈঠকে বসেছেন স্থানীয় স্বাস্থ্য আধিকারিক, হাসপাতাল সুপার সহ প্রশাসনের আধিকারিকরা।
কীভাবে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করা যায় তা নিয়ে মূলত এই বৈঠক হয়েছে। অন্যদিকে প্রতি মুহূর্তে রাজ্য স্বাস্থ্য আধিকারিককেও এই বিষয়ে অবগত করা হয়েছে। যদিও স্বাস্থ্য দফতর সাধারণ মানুষকে আতঙ্কিত না হওয়ার জন্যে বলা হয়েছে। আবহাওয়া পরিবর্তনের কারনে এই সমস্যা দেখা দিয়েছে। চিকিৎসকরা গোটা পরিস্থিতির উপর নজর রাখছে বলে স্বাস্থ্য দফতরের তরফে জানানো হয়েছে।
অন্যদিকে, করোনার তৃতীয় ঢেউয়ে শিশুদের আক্রান্ত হওয়ার প্রবণতা সবচেয়ে বেশি। আগেই এই নিয়ে সতর্ক করেছিলেন গবেষকরা। সেই মতো প্রস্তুতিও শুরু করে দিয়েছিল কেন্দ্র। সব রাজ্যগুলিকে সতর্ক করে কেন্দ্রীয় স্বারাষ্ট্র মন্ত্রক এবং স্বাস্থ্যমন্ত্রকের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছিল সব সরকারি হাসপাতালের শিশুবিভাগগুলির উন্নয়ন করার জন্য।
রাজ্য সরকারও সব হাসপাতাল গুলির শিশুবিভাগের চিকিৎসা পরিষেবা উন্নত করার দিকে জোর দিয়েছে। কোনও শিশু করোনা আক্রান্ত হলে তার চিকিৎসা যাতে দ্রুত শুরু করা যায় তার জন্য একাধিক নিয়মে পরিবর্তন আনা হয়েছে। শিশুর চিকিৎসাই মূল দায়িত্ব বলে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে হাসপাতালগুলিকে।