১৬ লক্ষ চাকরির আশ্বাস দিয়ে ভারসাম্যমূলক বাজেট অমিতের
অমিতবাবু রাজ্য বাজেট ২০১৪-১৫ পেশ করেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে পাশে রেখে। বাজেট বক্তৃতায় বারবার বলেছেন, "বাংলা যা করেছে আজ, ভারত তা করবে কাল।" কেন, সেটাও ব্যাখ্যা করেছেন অমিতবাবু। দেখিয়েছেন, তৃণমূল কংগ্রেসের রাজত্বকালে শিল্প, পরিষেবা, কৃষিতে বৃদ্ধির হারে বাংলা এগিয়ে গিয়েছে। দেশের অন্যান্য রাজ্য তার পিছনে। যেমন, শিল্পে বৃদ্ধির হার যেখানে সারা দেশে ০.৭ শতাংশ, সেখানে বাংলায় ৯.৫৮ শতাংশ। তাঁর দাবি, বাংলা আবার হৃতগৌরব ফিরে পাবে।
বাজেট বক্তৃতায় অমিতবাবু বলেছেন, পূর্বতন বামফ্রন্ট সরকার বিপুল ঋণের বোঝা রেখে গিয়েছে। এ বাবদ কেন্দ্রকে বারবার বলা হলেও সুদ মকুব করেনি। গত দু'বছরে শুধু ৭০ হাজার কোটি টাকা বেরিয়ে গিয়েছে সুদ দিতে। তাও রাজ্য সরকার চালিয়ে যাচ্ছে উন্নয়নের কাজ। এ বছর তাই কৃষি, মৎস্যচাষ, শিক্ষা, পরিকাঠামো নির্মাণ ইত্যাদিতে বরাদ্দ বেড়েছে বিপুল। পাশাপাশি, ২০১৪-১৫ অর্থবর্ষে ১৬ লক্ষ কর্মসংস্থান করা হবে বলে জানান তিনি। এর ফলে বেকার সমস্যা কমবে। সমাজে স্থিতিশীলতা আসবে।
সাধারণত সামাজিক ক্ষমতায়নের সঙ্গে আধুনিক উদারবাদী অর্থব্যবস্থার একটা দ্বন্দ্ব আছে বলে ধরে নেওয়া হয়। অর্থাৎ সামাজিক ক্ষমতায়ন বাবদ ব্যয়বরাদ্দ কাটছাঁট করার একটা প্রবণতা আছে। অমিতবাবু সেটা করেননি। বলেছেন, মানুষও উন্নয়নের সুফল ভোগ করুক।
আবাসনে শিল্পে যাতে বিনিয়োগ বাড়ে, সেই জন্য স্ট্যাম্প ডিউটি কমিয়েছেন। আগে ৩০ লক্ষ টাকার সম্পত্তি ক্রয়ের ক্ষেত্রে ৭ শতাংশ স্ট্যাম্প ডিউটি দিতে হত। এখন দিতে হবে ৬ শতাংশ। এর ফলে আবাসন শিল্পে যেমন বড় বিনিয়োগ আসবে, তেমন সাধারণ মানুষ আবাসন কিনতে উৎসাহী হবে। পাশাপাশি, বিনিয়োগ আহ্বান করেছেন তথ্যপ্রযুক্তি শিল্পে। রাজ্যে ১৩টি আইআইটি পার্ক তৈরি হবে। এ জন্য জমির ব্যবস্থা করবে সরকার। রাজ্যে গাড়ির বাজারকে চাঙ্গা করতে 'গতিধারা' প্রকল্প চালু করবে সরকার। এটি চালু হলে স্বল্প আয়ের মানুষ এক লক্ষ টাকা পর্যন্ত ঋণ পাবেন গাড়ি কেনার জন্য।
এই বাজেটের আরও একটি দিক হল আধুনিকীকরণের উপর জোর দেওয়া। সম্পত্তি, ভ্যাট, গাড়ির লাইসেন্স ইত্যাদি ক্ষেত্রে রেজিস্ট্রেশন পদ্ধতি একশো শতাংশই হবে ডিজিট্যাল। কাগজবিহীন রেজিস্ট্রেশন পদ্ধতি ছড়িয়ে দেওয়া হবে সব জেলায়। এতে সাধারণ মানুষের সুরাহা হবে। তা ছাড়া, চাকরিজীবী, ব্যবসায়ীদের সুরাহা দিতে বৃত্তিকর কাঠামো পরিবর্তনের সুপারিশ করেছেন অমিতবাবু।