আম্পায়ারকে চোর, মিথ্যাবাদী বললেন সেরেনা, তুললেন লিঙ্গ বৈষম্যের গুরুতর অভিযোগও
ইউএস এপেন ২০১৮-র মহিলাদের ফাইনালে সেরেনা উইলিয়ামস চেয়ার আম্পায়ারকে চোর ও মিথ্যাবাদী বলেন। তিনি টেনিস খেলায় লিঙ্গ বৈষম্যের অভিযোগও এনেছেন।
বেচারি নাওমি ওসাকা। প্রথম জাপানি হিসেবে গ্র্যান্ড স্ল্যাম জিতে ইতিহাস গড়লেন এই ২০ বছরের তরুণী। কিন্তু তাঁর জয় ঢাকা পড়ে গেল অযাচিত বিতর্কে। এসাকা দ্বিতীয় সেট জয়ের মুখোমুখি এইসময়ই সেরেনা উইলিয়ামসকে দেখা যায় চেয়ার আম্পায়ারের সঙ্গে বাদানুবাদে জড়িয়ে পড়তে। চেয়ার আম্পায়ারকে সেরেনা 'চোর' ও 'মিথ্যাবাদী' বলে বসেন। যার জেরে তাঁকে একটি গেমও খোয়াতে হয়।
ঘটনার সূত্রপাত ঘটে ইউএস ওপেন মহিলাদের ফাইনালের দ্বিতীয় সেট চলাকালীন। তার আগে ২-৬ ফলে প্রথম সেটে পারেন সেরেনা। দ্বিতীয় সেটেও সেইসময় ৩-৪ ফলে এগিয়ে ছিলেন নাওমি। সেই অবস্থায় চেয়ার আম্পায়ার অভিযোগ করেন কোচিং বক্স থেকে খেলা চলাকালীন সেরেনার কোচ প্য়াট্রিক মুরাতগ্লু তাঁকে নির্দেশ দিচ্ছেন।
এই অভিযোগে সেরেনাকে কোড ভায়োলেশনের জন্য সতর্ক করা হয়। পাশাপাশি র্যাকেট ছুঁড়ে ফেলার জন্য তাঁর একটি পয়েন্ট পেনাল্টি হিসেবে কেটে নেওয়া হয়। এরপরই আম্পায়ারের সঙ্গে বাদানুবাদে জড়ান ৩৬ বছরের টেনিস তারকা। কোর্টের মধ্যে তিনি কেঁদেও ফেলেন।
আবেগের বশবর্তী হয়ে চেয়ার আম্পায়ারকে উদ্দেশ্য করে তাঁকে বলতে সোনা যায়, 'আমি জীবনে কখনও চিটিং করিনি, আপনি আমার চরিত্রকে আঘাত করছেন'। আম্পায়ারকে তাঁর কাছে ক্ষমা চাইতেও বলেন তিনি। সেই সময়ই আম্পায়ারকে তিনি মিথ্য়াবাদী ও চোর বলে বসেন। এর জন্য চেয়ার আম্পায়ার তাঁর একটি গেমও কেটে নেন।
নাওমি অবশ্য এই ঝামেলার মধ্যেও মাথা ঠান্ডা রেখে ম্যাচ বের করে নেন। তবে ম্যাচের পর এই বিতর্কের জল আরও অনেকদূর গড়িয়েছে। সেরেনা বিষয়টিকে লিঙ্গ বৈষম্য হিসেবে দেখেছেন। তিনি দাবি করেছেন ম্যাচে আবেগের বশে তিনি আম্পায়ারকে ওই কথাগুলি বলেছিলেন। একই কাজ কোনও পুরুষ খেলোয়াড় করলে ছাড় পেয়ে যেতেন।
তিনি উল্লেখ করেন এবারের ইউএস ওপেনেই কোর্টে ফরাসী খেলোয়ার আলাইজ কর্নেটের টিশার্ট পরিবর্তন করার কথা। যার জন্য কর্নেটকে প্রথমে 'অখেলোাড়োচিত আচরণ'-এর অভিযোগে বিদ্ধ করা হলেও পরে টুর্নামেন্ট আয়োজকদের তরফে ক্ষমা চাওয়া হয়।
সেরেনা এই ঘটনা উল্লেখ করে বলেছেন তিনি নিশ্চিত কোনও পুরুষ খেলোয়াড়, চেয়ার আম্পায়ারকে চোর বললে তাঁর গেম কেটে নেওয়া হত না। তবে তার জন্য সেরেনার কোনও আফশোষ নেই। তিনি জানিয়েছেন, মহিলাদের জন্য তিনি লড়াই জারি রাখবেন। তিনি এও আশা করেছেন, এই ম্যাচে নিজের আবেগ প্রকাশ করায় তাঁর ক্ষতি হয়েছে ঠিকই, কিন্তু এদিনেরর ঘটনা ভবিষ্যতের শক্তিশালী মহিলাদের কাছে উদাহরণ হয়ে থাকবে। এদিনের জন্যই তাঁদের আবেগ প্রকাশ করতে অনুমতি দেওয়া হবে।