নোভাক জকোভিচ অস্ট্রেলিয়ান ওপেন খেতাব জিতে নজির গড়েছেন, তবু কেন মন খারাপ?
অস্ট্রেলিয়ান ওপেনে ছেলের চ্যাম্পিয়ন হওয়া দর্শকাসনে বসে দেখতে পারেননি নোভাক জকোভিচের বাবা। বিষয়টিতে তিনি ও তাঁর বাবা যে কষ্ট পেয়েছেন সে কথা জানালেন জোকার।
নোভাক জকোভিচ কেরিয়ারে দশমবার অস্ট্রেলিয়ান ওপেন খেতাব জিতলেন। সেই সঙ্গে ২২তম গ্র্যান্ড স্ল্য়াম জিতে ধরে ফেললেন রাফায়েল নাদালের রেকর্ড। নাদালের পর দ্বিতীয় কোনও টেনিস তারকা হিসেবে কোনও একটি গ্র্যান্ড স্ল্যাম দশবার জেতার নজির গড়লেন জোকার। তবুও কেন তাঁর মন খারাপ?
১০ বার অস্ট্রেলিয়ান ওপেন জয়
জকোভিচকে এবারের অস্ট্রেলিয়ান ওপেন জেতার পথে সামলাতে হয়েছে হ্যামস্ট্রিংয়ের চোট। সঙ্গে কটাক্ষও। এমনকী বিতর্কে জেরবার হয়েও লক্ষ্যে অটুট থেকেছেন। যদিও ফাইনালে দর্শকাসনে থাকতে পারেননি জকোভিচের বাবা। রাশিয়ার পতাকা হাতে নেওয়া কয়েকজন ভক্তের সঙ্গে ছবিতে দেখা গিয়েছিল সার্বিয়ান কিংবদন্তির বাবাকে। তার জেরেই অস্ট্রেলিয়ান ওপেনে পুত্রের চ্যাম্পিয়ন হওয়া দর্শকাসনে বসে দেখতে পারেননি। জকোভিচের চোট নিয়েও যে কটাক্ষ ধেয়ে আসছিল তাও যে তাঁকে কতটা তাতিয়ে দেয় বোঝা গিয়েছে ম্যাচের শেষে সাংবাদিক বৈঠকে।
অন্যতম চ্যালেঞ্জিং টুর্নামেন্ট
জকোভিচ খেলার শেষেই ছুটে গিয়েছিলেন ডাগআউটের দিকে। পরিবারের সদস্য ও বন্ধুবান্ধবদের সঙ্গে আলিঙ্গনাবদ্ধ হন। চোখের জল ধরে রাখতে পারেননি। জকোভিচ বলেন, আমার জীবনে এটা অন্যতম চ্যালেঞ্জিং টুর্নামেন্ট ছিল। পরিস্থিতির বিচারে। গত বছর খেলতে পারিনি। এবার খেলার সুযোগ পাই। মেলবোর্নে যাঁরা তাঁকে উষ্ণ অভ্যর্থনায় স্বাগত জানিয়েছেন তাঁদের সকলকে ধন্যবাদ জানান জকোভিচ।
মন খারাপ
আজ তিনি সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে জানান, বাবাকে ফাইনালের সময় পাশে না পাওয়া খুবই কঠিন পরিস্থিতি ছিল। মেলবোর্ন পার্কে দাঁড়িয়ে আজ জকোভিচ বলেন, ভেবেছিলাম মিডিয়ায় যেসব আলোচনা চলছিল তা থিতু হবে। কিন্তু হয়নি। দর্শকাসনে বাবার না থাকাটাই ঠিক হবে বলে আমরা সম্মত হয়েছিলাম। কিন্তু এটা আমাকে আহত করেছে। কেন না, এই মুহূর্তগুলি সব সময়ই স্পেশ্যাল। ইউনিক মোমেন্ট। ভবিষ্যতে এমন কিছু হওয়ার নিশ্চয়তা তো থাকে না। ফলে বাবার পক্ষেও এই সিদ্ধান্তটা সহজ ছিল না। জোকার পরে বাবার সঙ্গে মিলিত হন। তিনি পুত্রের জয়ে স্বাভাবিকভাবেই খুশিও ছিলেন। কিন্তু বাবার কষ্টটা উপলব্ধি করতে অসুবিধা হয়নি জকোভিচের।
চোট সারিয়ে কবে কোর্টে?
জকোভিচ ফের কবে কোর্টে ফিরবেন তা নিয়ে অনেকেই সংশয়ী। হ্যামস্ট্রিংয়ের চোট যতটা তাড়াতাড়ি সারবে তত তাড়াতাড়িই তিনি ফের খেলায় ফিরবেন বলে জানিয়েছেন ২২টি গ্র্যান্ড স্ল্যাম খেতাবের মালিক। মাসখানেকের মধ্যেও তা হতে পারে। মেলবোর্নের গভর্নমেন্ট হাউসে প্রথামাফিক ফোটোশ্যুটের ফাঁকে জকোভিচ বলেন, এখনই সঠিকভাবে সময় বলতে পারছি না। কয়েকদিনে মেডিক্যাল চেক-আপ হবে। তখনই পরিস্থিতি সম্পর্কে সুনিশ্চিত হতে পারব। অ্যাডিলেডে ওয়ার্ম আপ ইভেন্ট জেতার পরই হ্যামস্ট্রিংয়ের চোট পান জকোভিচ। এরপর সেই চোট অস্ট্রেলিয়ান ওপেনের প্রাথমিক রাউন্ডে বাড়ে। এখনও দুবাইয়ের ইভেন্ট থেকে নাম প্রত্যাহার করেননি জকোভিচ। অস্ট্রেলিয়ান ওপেন খেতাব জয়ের সেলিব্রেশন প্রসঙ্গে প্রশ্ন করা হলে মজা করে তিনি বলেন, মিডিয়া আর ডোপিং কন্ট্রোলের সঙ্গেই কাটিয়েছি। ভোর তিনটেই নিজের ঘরে যাই। দীর্ঘ রাত, তবে খুব তৃপ্তি অনুভব করেছি।