রাজ্য জুড়ে তিনিই অবজারভার! কে কোথায় কার সঙ্গে যোগাযোগ রাখছেন জানি, হুঁশিয়ারি মমতার
নেত্রী নন, কর্মী নন, গোটা রাজ্যে তিনিই অবজারভার। এদিন বাঁকুড়ার শুনুকপাহাড়ির সভা থেকে দলীয় নেতা কর্মীদের প্রতি এই বার্তা দিলেন তৃণমূল (trinamool congress) সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (mamata banerjee)। মঞ্চ থেকে তিনি বলেন, কে কোথায় কার সঙ্গে যোগাযোগ কারছেন সবটাই তিনি জানেন, কিন্তু কিছু বলছেন না।


তিনিই পর্যবেক্ষক
রাজ্যের বিভিন্ন জায়গায় প্রশান্ত কিশোরের আইপ্যাকের কাজ নিয়ে অসন্তোষ তৈরি হয়েছে। যা নিয়ে ক্ষোভ তীব্র হচ্ছে। বিভেদ বাড়ছে পুরনো ও নতুন তৃণমূল নেতাদের মধ্যে। ব্লক ও জেলার নেতারা তাঁদের পছন্দের নেতাদের যদি ব্লক কিংবা জেলা কমিটি থেকে বাদ দেওয়া হয়, তাহলেই ফোঁশ করে উঠছেন। সেই সময়ই প্রশ্ন উঠছে জেলার পর্যবেক্ষকের কাজ নিয়ে।
প্রায় প্রতিদিনই বিজেপিতে তৃণমূল থেকে যোগদান পর্ব চলছে। অনেক তৃণমূল নেতাই বিজেপি নেতাদের সঙ্গে যোগাযোগ রাখছেন। সেটা যেমন বিজেপি দাবি করছে, আবার পরিস্থিতি অনুযায়ী সত্যও বটে।
এদিনের সভা থেকে দলের নেতা কর্মীদের সেই নিয়েই বার্তা দেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি বলেন, অনেকেই প্রশ্ন করছেন, ওই জেলার পর্যবেক্ষক কে। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উত্তর তিনি সারা বাংলার পর্যবেক্ষক। কোথায় কী হচ্ছে, কে কোথায় যাচ্ছে, কার সঙ্গে যোগাযোগ রাখছে, রাতের অন্ধকারে কার সঙ্গে দেখা করছেন, তা তিনি জানেন বলেও মন্তব্য করেন তৃণমূল সুপ্রিমো। তিনি আরও বলেন দিদি সব জানে, কিন্তু ছেড়ে রেখেছে। তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় দলের নিচু তলার কর্মীদের উদ্দেশে লক্ষ্য রাখতে বলেন।

দলের রাশ হাতেই রয়েছে, বার্তা মমতার
বিভিন্ন জায়গাতেই নেতা বলছেন, দলের রাশ এখন চলে গিয়েছে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় আর প্রশান্ত কিশোরের হাতে। যা নিয়ে প্রায়ই প্রশ্ন শুনতে হচ্ছে তৃণমূলের শীর্ষ নেতৃত্বকে। রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞদের একাংশ বলছেন, দলের রাশ যে তাঁর হাতেই রয়েছে, তা নিয়েই এদিন বার্তা দিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।

মুখ ফিরিয়ে নেবেন না
দলের ১০০ শতাংশ যে ভাল নয়, তা তিনি জানেন। খারাপ রিপোর্ট পেলেই তিনি বলেন, কাজ করতে হবে না, দূরে থাকুন। একইসঙ্গে তিনি দলের থেকে মুখ ফিরিয়ে নেওয়া জনগণের উদ্দেশে বলেন, কেউ কেউ খারাপ কাজ করেন, তাই বলে তৃণমূলের থেকে মুখ ফিরিয়ে নেবেন না। প্রসঙ্গত গত লোকসভা নির্বাচনে বাঁকুড়া জেলার বাঁকুড়া এবং বিষ্ণুপুর আসনদুটি দখল করেছিল বিজেপি। বাঁকুড়ায় থাকা ১২ টি বিধানসভা আসন থেকেই বিজেপি এগিয়ে ছিল। এদিন অবশ্য তৃণমূল নেত্রী তথা মুখ্যমন্ত্রী দাবি করেন বিধানসভায় ১২ টি আসনের সবকটিই তাঁরা জিতবেন।

তৃণমূল করতে হলে ত্যাগী হতে হবে
এদিনের সভা থেকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বিরোধীদের প্রতি তীব্র আক্রমণ করেন। তিনি বলেন সিপিএম নারদা-সারদা থেকে বাঁচতে বিজেপির পায়ে গিয়ে পড়েছে। তিনি বলেন সিপিএম-এর অবস্থা দেখে লজ্জা হয়। পাশাপাশি বিজেপি নেতারা ভোটের সময় টাকা উড়িয়ে ভোট করেন বলেও অভিযোগ করেছেন। দলের অনেক নেতাই যে দোলাচলে রয়েছেন সে কথাও তিনি উল্লেখ করেন। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, কেউ কেউ ভাবছেন , বাইচান্স ওরা ক্ষমতায় চলে আসতে পারেন, তাই তলে তলে যোগাযোগ রাখছেন। সঙ্গে সঙ্গে তিনি বলেন, বিজেপি কোনও দিন বাংলায় ক্ষমতায় আসবে না। তাঁকে বলতে শোনা যায় সিপিএম লোভী, বিজেপি ভোগী এবং তৃণমূল ত্যাগী। তিনি বলেন, তৃণমূল করতে গেলে ত্যাগী হতে হবে।
তৃণমূলের রাশ থাকবে মমতার হাতেই! পিকে-অভিষেকের পাশাপাশি বার্তা শুভেন্দুদেরও