একনায়কতন্ত্র চালাচ্ছেন উনি! পুরুলিয়ায় পদত্যাগ তৃণমূলের আরও এক বিশ্বস্ত সৈনিকের
একনায়কতন্ত্র চালাচ্ছেন উনি! পুরুলিয়ায় পদত্যাগ তৃণমূলের আরও এক বিশ্বস্ত সৈনিকের
একনায়কতন্ত্র চালানোর অভিযোগ। আর এই অভিযোগে ঝালদা পুরসভার সহকারী প্রশাসকের পদ থেকে ইস্তফা দিলেন তৃণমূলের আরও এক বিশ্বস্ত সৈনিক। হঠাত করে তাঁর ইস্তফা ঘিরে রাজ্য-রাজনীতিতে শুরু হয়েছে জোর জল্পনা। কারন গত কয়েকদিনে একাধিক তৃণমূল নেতা বেসুরো হয়েছেন। দলের বিরুদ্ধে প্রকাশ্যে মুখ খুলেছেন। বিধানসভা ভোটের আগে একের পর এক তৃণমূল নেতার বিদ্রোহে অস্বস্তিতে শাসকদল। আর এই বিতর্কের মধ্যেই ঝালদা পুরসভার প্রশাসক মহেন্দ্র রুন্টার পদত্যাগ ঘিরে শুরু হয়েছে নানান রাজনৈতিক জল্পনা। যদিও এই তৃণমূল নেতা জানিয়েছেন, তিনি শুধু প্রশাসকের পদ থেকে শুধুমাত্র ইস্তফা দিয়েছেন। দল থেকে নয়। তিনি এখনও যেমন দলের একনিষ্ঠ কর্মী আগামিদিনেও থাকবেন। দলবদলের কোনও প্রশ্নই ওঠে না বলে দাবি মহেন্দ্র রুন্টার।
কিন্তু হঠাত করে পদত্যাগের কারণ কি?
মহেন্দ্র রুন্টার দাবি, গত বছর অর্থাৎ ২০২০ সালে ১০ নভেম্বর সার্কুলার জারি করে প্রশাসকমন্ডলীতে বেশ কিছু রদবদল করে। পুরানো কমিটিকে ভেঙ্গে নতুন কমিটি নিয়োগ করা হয়। যেখানে তিনি অর্থাৎ মহেন্দ্র রুন্টা এবং সুরেশ আগরওয়াল এবং কাঞ্চন পাঠককে পুর-প্রশাসক হিসাবে নিয়োগ করা হয়। সরকারের সার্কুলার হিসাবে সুরেশ আগরওয়ালকে পুরসভার প্রশাসক হিসাবে নিয়োগ করা হয়। অভিযোগ, প্রশাসকের পদে বসার পর থেকে একদিনও কোনও বৈঠক ডাকেননি সুরেশ আগরওয়াল। একাধিকবার এই বিষয়ে জানানোর পরেও কোনও ব্যবস্থাই নেওয়া হয়নি বলে অভিযোগ মহেন্দ্রবাবুর। কিন্তু এরপরেও তাঁর কাছে দ্রুত বৈঠকে বসার আবেদন জানানো হয়। সেই মতো একটি দিন ঠিক করেন সুরেশ আগরওয়াল। কিন্তু সেদিন বৈঠকে থাকতে চেয়ে তিনি এবং কাঞ্চন পাঠক গেলেও দেখা যায় তালাবন্দি প্রশাসকের ঘর তালাবন্দি। এরপর একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও সুরেশ আগরওয়ালকে ফোনে পাওয়া যায়নি। তাতে ক্ষোভ বেড়েছে আরও।
কিছুই জানতে পারছেন না মহেন্দ্র রুন্টা।
মহেন্দ্র রুন্টার দাবি, বৈঠক না হওয়ার কারনে কোনও বিষয়ে তাঁরা জানতে পারছেন না। ফলে মানুষকেও কাজের বিষয়ে জানাতে তাঁরা পারছেন না। আর তা না পারার কারনে মানুষের মধ্যে ক্ষোভ বাড়ছে তাঁদের বিষয়ে। আর সেই কারনেই আর সহকারী পুর-প্রশাসকের ভুমিকাতে তাঁর থাকার প্রয়োজন নেই বলে দাবি অই তৃণমূল নেতার। একই সঙ্গে পুর প্রশাসক একনায়কতন্ত্র চালাচ্ছেন বলেও অভিযোগ মহেন্দ্র রুন্টার। আর সবদিক ভেবেই আজ মঙ্গলবার তাঁর পদ থেকে ইস্তফা দিয়েছেন মহেন্দ্র রুন্টা। ঝালদা মহকুমা শাসকের কাছে গিয়ে তাঁর ইস্তফাপত্র তিনি জমা দিয়েছেন বলে জানা গিয়েছে।
সুরেশ আগরওয়ালের বিরুদ্ধে অভিযোগ নতুন না
গত বছর ডিসেম্বর মাসে 'ঝালদা শহর নাগরিক মঞ্চ'-এর ব্যানারে পুর-প্রশাসক সুরেশ আগরওয়ালের বিরুদ্ধে স্বেচ্ছাচারিতার অভিযোগ তুলে বিক্ষোভে শামিল হয়েছিলেন পুরসভার মহিলাকর্মীরা। আর এই বিক্ষোভের একেবারে সামনে থেকে নেতৃত্ব দিতে দেখা যায় প্রাক্তন পুর-প্রশাসক তথা পুরুলিয়া জেলা তৃণমূলের সম্পাদক প্রদীপ কর্মকার, দলের ঝালদা শহর সভাপতি দেবাশিস সেন, যুব সভাপতি রাজেশ রায়-সহ শহর তৃণমূলের একাধিক নেতাকে। যা নিয়ে চরম বিতর্ক তৈরি হয়। শুধু তাই নয়, সুরেশের আগরওয়ালের বিরুদ্ধে একাধিক অভিযোগ রয়েছে পুরসভাতেও। কর্মীদের পেনশন আটকানো, খারাপ ব্যবহার সহ একাধিক অভিযোগ রয়েছে। কিন্তু এরপরেই পুর প্রশাসকের পদে ফের সুরেশ আগরওয়ালকে বসানোতে স্বভাবতই ক্ষোভ তৈরি হয়েছে স্থানীয় তৃণমূল কর্মীদের মধ্যে। সেই ক্ষোভেরই বহিঃপ্রকাশের কারনেই মহেন্দ্র রুন্টার পদত্যাগ কিনা তা নিয়ে প্রশ্নটা থেকেই যাচ্ছে।
মমতার নজরে আদিবাসী ভোট, পিকের অঙ্ক মেনে টার্গেট ফিক্সড করে ফেলল তৃণমূল