রাজ্যবাসীর মঙ্গলকামনায় বর্ধমানে শিবমন্দিরে পুজো রাজ্যপাল ধনখড়ের
রাজ্যবাসীর মঙ্গলকামনায় বর্ধমানে শিবমন্দিরে পুজো রাজ্যপাল ধনখড়ের
নতুন বছরে রাজ্যবাসীর সুখ স্বাচ্ছন্দ ও সুস্থতা কামনায় সোমবার বর্ধমানের একশো আট শিব মন্দিরে পুজো দিলেন রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড়।
জানা গিয়েছে, সস্ত্রীক মন্দিরে এসে দীর্ঘক্ষণ ধরে ভক্তিভরে পুজো দেন তিনি। প্রায় আধ ঘণ্টা ধরে পুজো দেওয়ার পর তিনি মন্দির চত্বর ঘুরে দেখেন। এরপর বর্ধমানের অধিষ্ঠাত্রী দেবী সর্বমঙ্গলা মন্দিরে রাজ্যপালের পুজো দেন। এর আগে সড়ক পথে উত্তরবঙ্গ যাওয়ার পথে বর্ধমান সার্কিট হাউসে বিশ্রাম নিয়েছিলেন রাজ্যপাল। সেদিক দিয়ে এটাই প্রথম বর্তমান রাজ্যপালের বর্ধমান সফর। মূলত পুজো দিতেই এদিন বর্ধমানে এসেছিলেন রাজ্যপাল। এর আগে এমকে নারায়ণন রাজ্যপাল থাকাকালীন ফি বছর শিবরাত্রিতে বর্ধমানে আসতেন। গোলাপবাগে বিজয়বাহারে তিনি রাজ আমলে প্রতিষ্ঠিত শিব মন্দিরে রাত কাটাতেন। তাঁর সঙ্গে উপস্থিত থাকতেন বর্ধমানের মহারাজ কুমার প্রণয়চাঁদ মহাতাব ও তাঁর স্ত্রী নন্দিনী মহাতাব।
প্রসঙ্গত, বর্ধমানের একশো আট মন্দিরের খ্যাতি এখন ভারত জোড়া। সারা বছর দেশের বিভিন্ন রাজ্য থেকে ভক্তরা এই মন্দিরে পুজো দিতে আসেন। বর্ধমানের মহারানি বিষণকুমারীর বর্ধমানের নবাবহাটে ১০৮ শিবমন্দির প্রতিষ্ঠার এক দীর্ঘ ইতিহাস আছে। এই মন্দিরের নির্মাণ শুরু হয়েছিল ১৭৮৮ খ্রিস্টাব্দে। শেষ হয়েছিল ১৭৯০ খ্রিস্টাব্দে। সেই সময় বর্ধমান সংলগ্ন নবাবহাট এলাকায় মহামারি দেখা দিয়েছিল। বহু মানুষের মৃত্যু হয়েছিল। স্বজনদের হারিয়ে শোকে মুহ্যমান হয়ে গিয়েছিলেন এই এলাকার বাসিন্দারা। এলাকায় মন্দির গড়ে বাসিন্দাদের ঈশ্বরমুখী করে তাঁদের শোক ভোলাতে চেয়েছিলেন বর্ধমানের মহারানিমা। সেই ভাবনা থেকেই নবাবহাটে এই একশো আট শিব মন্দির গড়েন তিনি। মহাআড়ম্বরে সেই মন্দির প্রতিষ্ঠা করা হয়।
এদিন জগদীপ ধনখড় পুজো দিয়ে বেরিয়ে বলেন, 'নতুন বছরে এই রাজ্যের প্রতিটি বাসিন্দার কাছে সুখ সমৃদ্ধি শান্তির হোক এই কামনা জানিয়েছি। পাশাপাশি তিনি বলেন, 'এর আগেও একবার বর্ধমানে এসেছিলাম আগাম কিছু না জানিয়ে। তখন আগাম খবর না থাকা সত্ত্বেও পূর্ব বর্ধমানের তৎকালীন জেলাশাসক বিজয় ভারতী যিনি বর্তমানে বীরভূমের জেলাশাসক, তখন আমার সঙ্গে দেখা করেছিলেন। সীতাভোগ, মিহিদানা খাইয়েছিলেন।'
তিনি আরও দাবি করেন, বর্তমানে রাজ্যে আইনের শাসন আর নেই। বাংলার বিভিন্ন প্রান্তে বালি, কয়লা, পাথরের সিন্ডিকেটরাজ চলছে বলেও অভিযোগ করেন। এই পরিস্থিতিতে চলতি বছরে আদৌ সুষ্ঠ ও অবাধ নির্বাচন হবে কিনা, সে বিষয়ে সন্দেহপ্রকাশ করেন রাজ্যপাল। কেন্দ্রীয় কৃষক নিধি প্রকল্প চালু না করায় রাজ্যের কৃষকরা বঞ্চনার শিকার হচ্ছেন বলেও অভিযোগ তাঁর। পাশাপাশি আমফানের ক্ষতিপূরণ আত্মসাত করার অভিযোগেও সুর চড়িয়েছেন রাজ্যের সাংবিধানিক প্রধান। দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকেই রাজ্যের সঙ্গে রাজ্যপালের সম্পর্ক মোটেও ভাল নয়। বর্ধমান সফরের এই অভিযোগের পর দু'পক্ষের সম্পর্ক যে আরও তলানিতে ঠেকল সে বিষয়ে কোনও সন্দেহ নেই।